ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে কৃষকের আত্মহত্যা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আনোয়ারা <<<
আনোয়ারায় মহাজন ও এনজিও সংস্থার ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে অরুণ বড়ুয়া (৫০) নামের এক কৃষক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
গত রোববার বিকালে উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া রুদুরা এলাকার বড়ুয়াপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। বিষপানের পর স্বজনরা চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে রাতেই তার মৃত্যু হয়।
গতকাল সোমবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুই ছেলে এক মেয়ের জনক অরুণ বড়ুয়া পেশায় একজন কৃষক। পরিবার পরিজন নিয়ে অভাব-অনটনের সংসার। তাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরাতে ২ কানি জমি বর্গাচাষ নেন পার্শ্ববর্তী কৃষকদের কাছ থেকে। খরচ যোগাতে ধারস্থ হন স্থানীয় মহাজন গিয়াস উদ্দিন ও উপজেলার বিভিন্ন এনজিও সংস্থার কাছে। এদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কৃষিতে লাভবান না হওয়ায় সুদ-আসলে ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। আর প্রতিদিনই ঋণ ও সুদের টাকার জন্য মহাজন ও এনজিও সংস্থার লোকদের কাছে তিনি অপমানিত হতে থাকেন, বাড়তে থাকে ঋণ পরিশোধের চাপও।
অরুণ বড়ুয়া মানসিক চাপ সইতে না পেরে ১১ এপ্রিল রোববার বিকালে পরিবারের অজান্তে বাড়ির পাশে নির্জন স্থানে গিয়ে বিষপান করে ঘরে ফিরে। ঘরে এসে অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন বুঝতে পারে তিনি বিষপান করেছেন, দ্রুত তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মৃত্যু হয় তার। গতকাল সোমবার দুপুরে তার অন্ত্যষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তিনি একই এলাকার মৃত বাবু লাল বড়ুয়ার পুত্র। গত সপ্তাহে তার পিতা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পরিবারে তার ২ ছেলে ১ মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে।
অরুণ বড়ুয়ার কলেজ পড়ুয়া মেয়ে প্রিয়ন্তী বড়ুয়া (১৮) পিতাকে হারিয়ে বার বার অজ্ঞান হচ্ছেন। গত সপ্তাহে তার দাদুর মৃত্যু হয়। এতে তার বাবা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। তার উপর এলাকার মহাজন গিয়াস উদ্দিন ও এনজিও সংস্থা ব্র্যাক, প্রত্যাশা, উদ্দীপন ও ব্যুরো বাংলাদেশের ঋণের টাকা পরিশোধের চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন।
প্রিয়ন্তী জানায়, এলাকার মহাজন গিয়াস উদ্দিনের কাছ থেকে তার বাবা ২৬ হাজার টাকা নিলে ঐ টাকা সুদসহ দাঁড়ায় প্রায় ১ লক্ষ টাকায়। এগুলো নিয়েও তারা পিতা ছিলেন ভীষণ চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন।