উচ্ছেদ নয়, শৃঙ্খলার সাথে ব্যবসা করতে হবে

হকার নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করছেন চসিক প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন

হকারদের সাথে চসিক প্রশাসকের বৈঠক

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, বাংলাদেশে নগরের জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু এই বর্ধিষ্ণু জনগণের সবার পক্ষে কর্মসংস্থানে নিয়োজিত হওয়া সম্ভবপর হয় না। শহরে আসা নতুন জনগোষ্ঠীর বেশিরভাগই নগরীর ব্যাপক বিস্তৃত অর্থনৈতিক কর্মকা-ের অপ্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রসমূহে নিয়োজিত হয়ে পড়ে। এভাবে বাংলাদেশের নগর কেন্দ্রসমূহের জনগণের একটি বিরাট অংশ রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে পণ্য ফেরি করার মতো অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থনৈতিক কর্মকা-ে নিজেদের নিয়োজিত রয়েছে। মানবিক দিক বিবেচনায় এসব জনগোষ্ঠীকে আমরা চাইলেই উচ্ছেদ করতে পারছি না। তাদের সাথে জড়িত রয়েছে তাদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য। কিন্তু বর্তমানে নগরীতে রাস্তাঘাট ও ফুটপাতে হকারদের বেপরোয়া আচরণে জনদুর্ভোগ বেড়েছে। ফুটপাত সংকুচিত করে পথচারী চলাচলের জায়গাটুকু হারাতে বসেছে। আমরা চাই পথচারীরাও স্বাচ্ছন্দে চলুক হকাররাও নিয়মতান্ত্রিকভাবে ব্যবসা পরিচালনা করুক। হকার উচ্ছেদ নয়, শৃংখলার মধ্যে তারা ব্যবসা পরিচালনা করুক। তাই নগরবাসী রাস্তায় ও ফুটপাতে স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচলের জন্য হকারদের মধ্যে শৃঙ্খলা আনায়ন অতি জরুরি। এলক্ষে গতকাল সকালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজনের সাথে আন্দরকিল্লার চসিক পুরাতন নগর ভবনের কে বি আবদুচ ছত্তার মিলনায়তনে হলে চট্টগ্রামের হকার ও হকার্স নেতৃবৃন্দের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত মতে নগরীর ফুটপাতে ব্যবসারত হকাররা কোন স্পটে বসবে তা নির্ধারণ করবেন হকার নেতৃবৃন্দ। এক্ষেত্রে নগরীর বিভিন্ন স্থানে হকাদের বসার স্থান সাইজসহ মার্কিং করে দেবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন।
বিকেল ৩টা হতে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হকাররা নগরীর ফুটপাতে বসবেন এবং ফুটপাতের এক্িট অংশ জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত রাখতে হবে। তালিকাভুক্ত হকারদের নির্দিষ্ট ব্যাচ ও ইউনিফরম থাকবে।
এছাড়া ফুটপাত বা রাস্তায় হকারদের কোনো অবকাঠামো থাকতে পারবে না। নির্দিষ্ট সময় ব্যবসা করার পর চসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা- আর্বজনা অপসারণে দায়িত্ব পালন করবে। অবশ্যই রাস্তার উভয়পাশে ব্যবসা না করে একপাশে বসতে হবে। উল্লেখিত সিদ্ধান্ত সমূহ ৪ সেপ্টেম্বর হতে কার্যকর হবে।
বৈঠকে চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুফিদুল আলম, স্পেশাল ম্যাজিস্টেট (যুুগ্ম জেলা জজ) জাহানারা ফেরদৌস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারুফা আকতার নেলী, প্রশাসকের একান্ত সচিব মোহাম্মদ আবুল হাশেম, সম্মিলিত হকার্স ফেডারশনের সভাপতি মিরন হোসেন মিলন, ফুটপাত হকার্স সমিতি সভাপতি নুরুল আলম লেদু, মহানগর মহানগর হকার্স লীগ সভাপতি প্রবীর কুমার ঘোষ, সাবেক সভাপতি ঋষি বিশ্বাস, সিটি হকার্স সমিতির আজগর আলী, টেরি বাজার আন্দরকিল্লা হকার্স সমিতির লোকমান হাকিম, মেট্রোপলিটন হকার্স লীগের জসিম মিয়া, হারুন উর রশিদ, ফুটপাত হকার্স লীগের মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নুরুল আমীন মিয়া, পতেঙ্গা হকার্সলীগের মাহমুদুল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই বৈঠকের মাধ্যমে চসিক ও হকারদের মধ্যে যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে তা অবশ্যই প্রতিপালন করতে হবে। এর অন্যথা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিজ্ঞপ্তি