আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন মনোজ বাজপেয়ী

 

সুপ্রভাত ডেস্ক :

বলিউডকে বাইরে থেকেই দেখতে ঝাঁ চকচকে। ভিতরে এর নৈরাশ্য আর হতাশায় পরিপূর্ণ। এই হতাশার কারণেই কিছুদিন আগে সুশান্ত সিং রাজপুত আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। পেশাগত কারণে বিপর্যস্ত হয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন অভিনেতা মনোজ বাজপেয়ীও। সম্প্রতি এই কথা জানিয়েছেন তিনি। ‘হিউম্যানস অফ বম্বে’ সাইটে নিজের জীবনের গল্প বলেন তিনি। সেখানেই জানান তিনবার ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় সুযোগ না পেয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন তিনি।

অভিনেতা জানিয়েছেন, বিহারের এক কৃষক পরিবারের ছেলে তিনি। তারা পাঁচ ভাই। ছোট থেকেই অমিতাভ বচ্চনের ফ্যান ছিলেন তিনি। ৯ বছর বয়সেই ঠিক করেন অভিনেতা হবেন। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার জন্য তিনি দিল্লি যান। সেখানেই থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হন। নিজের স্বপ্নের কথা যখন মনোজ বাড়িতে জানিয়েছিলেন, ভেবেছিলেন বাবা হয়তো রাগ করবেন। তা তো হয়ইনি।। উলটে তিনি ২০০ টাকা পাঠিয়েছিলেন সেই সময়। গ্রামের লোকেরা মনোজকে তখন ‘অকর্মের ঢেঁকি’ বলত। কিন্তু তিনি নিজের স্বপ্ন অনুসররণ করছিলেন। এরপর ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় যোগ দেওয়ার কথা ভাবেন মনোজ। তখনই শুরু হয় তার জীবনের সবচেয়ে হতাশাপূর্ণ অধ্যায়।

অভিনয় ছিল তার প্যাশন। কিন্তু পরপর তিনবার ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামায় সুযোগ পাননি তিনি। সেই সময় খুব ভেঙে পড়েন মনোজ। আত্মহত্যার চেষ্টাও করেন। অভিনেতার এই দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বন্ধুরা। মনোজ বলেছেন, আমি প্রায় আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম। আমার বন্ধুরা আমার পাশে ঘুমতো। আমাকে কখনও একা ছাড়তো না। আমি ঠিক না হওয়া পর্যন্ত তারা আমাকে আটকে রেখেছিল। সেই বছরই একটা ঘটনা ঘটে আমার সঙ্গে। আমি চায়ের দোকানে গিয়েছিলাম। তখন তিগমংশু ধুলিয়া তার স্কুটার নিয়ে আমাকে খুঁজতে এসেছিলেন। শেখর কাপুরের ছবি ‘ব্যান্ডেট কুইন’-এ কাস্ট করতে চেয়েছিলেন আমায়। তখনই আমি স্থির করি আমার মুম্বই চলে আসা উচিত।

তবে যাত্রা সহজ ছিল না। মুম্বইয়ে আসার পর পাঁচজনের সাথে একটি চৌলে থাকতেন তিনি। একবার এক বিজ্ঞাপন সংস্থা তার ছবি ছিঁড়ে ফেলে দেয়। একদিনে তিনটে প্রজেক্ট হাতছাড়া হয় তার। এমনকি প্রথম শট দেওয়ার পর তাকে ‘গেট আউট’ও শুনতে হয়। মনোজ জানিয়েছেন, তার চেহারা নায়োকচিত নয়। তাই বড়পর্দায় তার সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না। সেই সময় ঘর ভাড়া দওয়ার জন্য খুব খাটতে হত তাকে। অনেক দিন তো খাবারও জুটত না। চার বছরের লড়াইয়ের পরেই দূরদর্শনে মহেশ ভাটের একটি টিভি সিরিজে কাজ পান তিনি। প্রতি পর্বের জন্য ১৫০০ টাকা পেতেন। এরপর একে একে বলিউড ছবির অফার আসতে থাকে তার কাছে।

খবর : সংবাদপ্রতিদিন’র।