৭ দাবি নিয়ে ঢাকা অভিমুখী রোড মার্চ

হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সম্মেলন

নিজস্ব প্রতিবেদক »

চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা অভিমুখী রোড মার্চ শুরু করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ২০১৮ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে সরকারি দলের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, বৈষম্য বিলোপ আইন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠনসহ সাত দফা দাবিতে ঢাকামুখী দুইদিনব্যাপী রোড মার্চের যাত্রা করে প্রায় ৫০০ নেতাকর্মী।

গতকাল শুক্রবার বেলা সোয়া তিনটায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন থেকে দু’দিনব্যাপী এই রোড মার্চ কর্মসূচি উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা প্রকাশ সন্তু লারমা।

রোড মার্চ উদ্বোধনকালে সন্তু লারমা বলেন, ‘বাংলাদেশের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে গত কয় বছর ধরে যে আন্দোলন চলছে তার অংশ হিসেবে রোড মার্চ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সংখ্যালঘু মানুষ নানাভাবে শোষিত, বঞ্চিত ও প্রতারিত। এই রোড মার্চ কর্মসূচি শুধু আনুষ্ঠানিকতা নয়। এর মধ্য দিয়ে অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশের আদিবাসী সমাজ, সংখ্যালঘু হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান সমাজ সম্মিলিতভাবে ৭ দফা দাবি আদায়ে সংগ্রাম করবে। এসব দাবির মধ্যে আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের নানা সামাজিক ও ধর্মীয় দাবির প্রতিফলন দেখি। এসব দাবি আদায়ের মধ্যে দিয়ে তাদের জীবনের শোষণ বঞ্চনার অবসানের দিকে যেতে পারব বলে আশা করি।’

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, রোডমার্চের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেয়া মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে অসাম্প্রদায়িক ধর্ম নিরপেক্ষ বাংলাদেশ গড়ব। সামনে নির্বাচন, সে শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে যারা মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা ছাড়া প্রকৃত অর্থে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা অসম্ভব। ধর্মান্ধ গোষ্ঠী ও ধর্ম ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে এবং প্রগতিশীলতার পক্ষে দেশকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে নেওয়ার এখনই সময়। বিভিন্ন সময়ে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা হয়েছে। হামলাকারীরা আজও দৃশ্যমান। তাদের কোন শাস্তি না হওয়ায় সংখ্যালঘুদের আতঙ্কিত করে তুলেছে। আজও প্রশাসনে ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক অপশক্তির দোসররা ক্রিয়াশীল। অথচ তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখা যাচ্ছেনা।’

সম্মেলনে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত থানা পর্যায়ের কমিটি ঘোষণা দিয়ে সংগঠনের কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান।

সংগঠনের নগর শাখার সভাপতি প্রকৌশলী পরিমল কান্তি চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিমচন্দ্র ভৌমিক, সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. জিনবোধি ভিক্ষু, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামল কুমার পালিত, মুক্তিযোদ্ধা ইন্দু নন্দন দত্ত, দক্ষিণ জেলার সভাপতি তাপস হোড় ও নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নিতাই প্রসাদ ঘোষ।

রোড মার্চের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, দেবোত্তর সম্পত্তি সংরক্ষণ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি ও পার্বত্য ভূমি কমিশন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা।