২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ ভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির পরিকল্পনা

সুপ্রভাত ডেস্ক

বর্তমানে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে ১ হাজার ১৯৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। এর মধ্যে ৮২৫ দশমিক ২৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ হচ্ছে। আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে সরবরাহ করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানিছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
শনিবার (২২ জুলাই) ভারতের গোয়াতে জি-২০ সম্মেলন উপলক্ষ্যে ‘এনার্জি ট্রানজিশন মিনিস্টারিয়াল মিটিং’এ দেওয়া বক্তব্যে জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নসরুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ফুয়েল-মিক্সে নবায়ণযোগ্য জ্বালানির অংশ বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। জ্বালানি বৈচিত্র্য, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমন কৌশল গ্রহণ করে নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে কাজ করা হচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হতে ৪০ ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে।’ খবর সারাবাংলা।
তিনি বলেছেন, ‘৩০টি প্রকল্পের মাধ্যমে আরও ১২৬২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প চলমান। এছাড়া ৮ হাজার ৬৬৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। অর্থাৎ নবায়ণযোগ্য জ্বালানি হতে ৯ হাজার ৯৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন পাইপ লাইনে আছে।’
তিনি বলেন, ‘৬ মিলিয়ন সোলার হোম সিস্টেমের মাধ্যমে অফ-গ্রিড এলাকায় বসবাসরত ২০ মিলিয়ন লোককে আলোকিত করা হচ্ছে। সোলার মিনিগ্রিডের মাধ্যমে অফ-গ্রিড এলাকায় গ্রিডের মানসম্পন্ন বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। ৭টি সোলার পার্ক করা হয়েছে। আমাদের প্রায় ১ লাখ বায়ু গ্যাস প্ল্যান্ট রয়েছে। ন্যাশনাল রিনিউয়েবেল এনার্জি ল্যাবরেটরির (এনআরইএল) সহযোগিতায় বাংলাদেশে উইন্ড রিসোর্স ম্যাপ প্রস্তুত করা হয়েছে। ৫টি প্রকল্পের মাধ্যমে বায়ু থেকে ২৪৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নেপাল ও ভুটান থেকে জল-বিদ্যুৎ আমদানির প্রক্রিয়াও চলছে। সমন্বিত জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ মহাপরিকল্পনাতেও নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এখানে নবায়ণযোগ্য জ্বালানি (সৌর, বায়ু, এবং হাইড্রো ইত্যাদি), পারমাণবিক, বিদ্যুৎ আমদানি (হাইড্রো), হাইড্রোজেন, অ্যামোনিয়া, সিসিএস (কার্বন ডাই অক্সাইড) ক্যাপচার এবং কম্ববাইন্ড সাইক্যাল পাওয়ার প্ল্যান্ট নিয়ে পরিকল্পনা রয়েছে।’
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাতিল করায় প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ চলে গেছে। এই সাহসী পদক্ষেপ সবুজ এবং পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রতি আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতিচ্ছবি। একটি ঘনবসতিপূর্ণ জাতি হিসাবে আমরা নবায়ণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আমাদের বিদ্যুৎ ব্যবহারের ধরন অনেক উন্নত দেশ থেকে আলাদা এবং সৌর শক্তি বেস লোড পাওয়ার হিসাবে এখানে অনুপযুক্ত। সৌর প্রকল্পের জন্য জমির অভাব একটি বড় বাধা। এই চ্যালেঞ্জগুলো অতিক্রম করতে প্রযুক্তি স্থানান্তর এবং গবেষণা প্রয়োজন। নবায়ণযোগ্য জ্বালানি বিশেষ করে বর্জ্য থেকে জ্বালানি এবং বায়ু বিদ্যুতে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। বাংলাদেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিনিয়োগকে স্বাগত জানাব।’
ভারতের বিদ্যুৎ এবং নতুন ও নবায়ণযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রী আর কে সিং, ব্রাজিলের খনি ও জ্বালানি মন্ত্রী আলেকজান্দ্রে সিলভেরা ডি অলিভেরা, ইন্দোনেশিয়ার জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী আরিফিন তাসরিফ, কপ-২৮’র সভাপতি (মনোনীত) ড. সুলতান আল জাবের, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী ডা. প্রমোদ সায়ান্ত’সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা বক্তব্য দেন। উল্লেখ্য, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন।