স্বল্প খরচে মিলবে কিডনি ডায়ালাইসিস সেবা

বিজিসি ট্রাস্ট হাসপাতাল

নিজস্ব প্রতিনিধি, চন্দনাইশ <<
কিডনি বিকল হলে রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে সচল করার একমাত্র উপায় হলো ডায়ালাইসিস। বর্তমানে বাংলাদেশে এই চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। চারদিকে করোনাভাইরাস নিয়ে শুধু দুঃসংবাদ। করোনার এ দুঃসময়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণাঞ্চলের কিডনি রোগীদের জন্য সুখবর দিয়েছে চন্দনাইশ উপজেলার বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে চন্দনাইশ উপজেলার সর্বোবৃহৎ এই হাসপাতালটিতে কিডনি রোগীদের জন্য চালু করা হয়েছে নেফ্রোলজি বা কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগ। প্রাথমিক পর্যায়ে নেফ্রোলজি (কিডনি) বিভাগে ২টি ডায়ালাইসিস মেশিন নিয়ে এই বিভাগটি চালু করা হয়।
গতকাল শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ২য় তলায় স্পেশাল কেয়ার কিডনি রোগে আক্রান্ত উপজেলার দোহাজারী এলাকায় রাজিয়া বেগম (৬৮) ও হাশিমপুর এলাকায় দিলুয়ারা বেগম (৩০) নামের দুই রোগীর পরীক্ষামূলক কিডনি ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। এতে সফলও হয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরমধ্য দিয়ে কিডনি রোগীদের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এক ধাপ এগিয়ে গেলো বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
গত বুধবার ডায়ালাইসিস ইউনিটের উদ্বোধন করেন হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরীন আহমদ হাসনাইন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ডা. অরূপ দত্ত বাপ্পী, হাসপাতালের পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. খায়েরউদ্দিন বরকত, কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. রতন কান্তি সাহা, ডা. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, ডা. সাইফুল ইসলাম, ডা. অর্পন দেবনাথ, ডা. নাসিমুজ্জামান, আজিজুল হক ভুঁইয়া, মো. এরশাদ হোসেনসহ বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসক, কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ ।
কিডনি ডায়ালাইসিস বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. রতন কান্তি সাহা বলেন, ‘করোনার কারণে আপাতত সংক্ষিপ্ত পরিসরে ডায়ালাইসিসের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ২টি ডায়ালাইসিস মেশিন স্থাপন করা হযেছে। পর্যায়ক্রমে এই ইউনিটে আরও ডায়ালাইসিস মেশিন স্থাপন করা হবে। বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়াও কিডনির অন্যান্য সব রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে বিভাগটি উদ্বোধন পরবর্তী প্রথম সেবা গ্রহণকারী দোহাজারীর বাসিন্দা রাজিয়া বেগম বলেন, ‘আমি দীর্ঘ দিন কিডনি সমস্যায় ভুগছি। এ কারণে গত ১০ মাস ধরে ডায়ালাইসিস করতে হচ্ছে। প্রাইভেট ক্লিনিক বা হাসপাতালে ডায়ালাইসিস করতে প্রতি ছয় মাসের প্যাকেজে আমার আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অল্প টাকায় পাচ্ছি।
হসপিটালের পরিচালক ক্যাপ্টেন (অব.) ডা. খায়েরউদ্দিন বরকত বলেন, ‘কিডনি ডায়ালাইসিস প্রাইভেটভাবে করাতে গেলে ব্যয়বহুল। তবে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেফ্রোলজি বিভাগে অল্প ব্যয়ে ডায়ালাইসিস করা যাবে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন হাসপাতালে প্রতিদিন প্রায় ১০০ রোগী ডায়ালাইসিস করতে যায়। ডায়ালাইসিস সেবার কার্যক্রম চালু হওয়ায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ চিকিৎসাসেবা পাবার ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে গেল। কিডনি রোগীরা এখন থেকে উপকৃত হবেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ বছরে কিডনি রোগীদের ডায়ালাইসিস করার সুযোগ ছিল না। তাই দক্ষিণাঞ্চলের মানুষদের ডায়ালাইসিসের জন্য ছুটতে হতো চট্টগ্রাম-ঢাকা কিংবা অন্য কোনো বেসরকারি ক্লিনিকে। লাখ লাখ টাকা খরচ করে কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হতো। বতর্মানে অল্প খরচে বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এই সেবা পাওয়া যাবে।
বিজিসি ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আফছার উদ্দিন আহমদ এর পক্ষ থেকে নেয়া এই মহৎ উদ্যোগ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিভিন্ন বিভাগগুলোর জন্য নেয়া মানোন্নয়ন ও সম্প্রসারণের অংশ।
হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফরীন আহমদ হাসনাইন বলেন, সাশ্রয়ী মূল্যে এ এলাকার মানুষের ডায়ালাইসিস সেবা প্রদান আমাদের মুল লক্ষ্য। বিজ্ঞপ্তি