সেন্ট মেরিসের প্রবেশপথে ঝুঁকিপূর্ণ সীমানাপ্রাচীর!

শঙ্কায় শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক»

জামালখান মোড়ে ক্লিপটন গ্রুপের জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ সীমানাপ্রাচীর পাইপে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। তিনবছর আগে এ সীমানা প্রাচীরটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়।

ঝুঁকিপূর্ণ এ দেওয়াল পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারে ১০ নভেম্বরে রাজধানীর আজিমপুরে স্কুলছাত্রের উপর দেওয়াল ধসে পড়ার ঘটনার।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের জামালখান মোড় এলাকায় সেন্ট মেরিস স্কুলে প্রবেশ পথের রাস্তা ঘেঁষে গড়ে উঠেছে ১০ ফুট উচ্চতার সীমানাপ্রাচীর। যার ভেতরে রয়েছে ক্লিপটন গ্রুপের একটি জায়গা। মূলত ভূমি রক্ষার্থে দেওয়া হয়েছে এ সীমানাপ্রাচীর। কিন্তু এ শিল্প প্রতিষ্ঠান সম্পদ বাঁচাতে যে সীমানাপ্রাচীর দেয়া হয়েছে তাতে রয়েছে সংস্কার ত্রুটি।

একই রাস্তায় সেন্ট মেরিস স্কুলের পাশাপাশি রয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের কার্যালয়। যার ফলে এ রাস্তায় চলাচল করছে এই সরকরি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাছাড়া সেন্ট মেরিস স্কুলের শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও স্কুলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও যাতায়াতের পথ এটি। স্কুল চলাকালে অভিভাবকেরা একটু ছায়া পেতে এ দেওয়ালের পাশে পেপার বিছিয়ে বসেন।

জামালখান মোড় থেকে জয়পাহাড় এস্টেটের এই রাস্তায় প্রবেশের মুখেই হাতের বা’পাশে চোখে পড়বে তালিজোড়া দেওয়া এ সীমানাপ্রাচীর। প্রায় ১২০ ফুটের এই সীমানাপ্রাচীর গত তিন বছর আগে ঝুঁকে গেলেও কর্তৃপক্ষ তা ভেঙে সংস্কার করেনি। এখনো ঝুঁকে রয়েছে রাস্তার ওপরে। প্রায় ১২০ ফুট ঝুঁকে যাওয়া সীমানাপ্রাচীরের অংশে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে বিলবোর্ডের ঠুনকো পাইপ। এ পাইপে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা এ দেওয়ালের বেশিরভাগ অংশে ফাটল ধরেছে।

এই সীমানাপ্রাচীর বিলবোর্ডের পাইপের মাধ্যমে কিছু সময় ঠিক থাকলেও পুরোপুরি ভরসা করা যাবে না এ খুঁটির উপর- তা জানিয়েছেন প্রকৌশলী অনিক বড়ুয়া। তিনি বলেন, ‘এ পাইপের ভেতরে যদি সিমেন্ট দিয়ে ভরাট করা হতো তবে এর স্থায়িত্ব বেড়ে যেত। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তাছাড়া দেওয়ালের প্লাস্টারও ক্ষয়ে গেছে। ফাটল ধরেছে দেওয়ালে।’

কিন্তু এ রাস্তায় সেন্ট মেরিস স্কুলের শিক্ষার্থীরা চলাচল করে। যে কোন মুহূর্তে এটা ভেঙে পড়ে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। সীমানাপ্রাচীর ভেঙে পড়ার ঘটনাও নতুন নয় আমাদের কাছে। গত ১০ নভেম্বর রাজধানীর আজিমপুরে বাবার হাত ধরে স্কুলে যাওয়ার পথে এমন এক সীমানাপ্রাচীর ভেঙে পড়েছিল কোমল দেহের ৭ বছরের শিশু জিসানের ওপর। বাবার সামনেই সন্তানের এমন মৃত্যু নিশ্চয় আমাদের কাম্য নয়।

সেন্ট মেরিস স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষার খাতা জমা দিতে আসা এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শাহনাজ নূরী বলেন, ‘এই দেওয়াল করোনার  লকডাউনের আগে ঝুঁকে পড়েছে, কিন্তু এতোদিন পরেও কর্তৃপক্ষ এটি ঠিক করতে পারেনি। তাদের অবহেলার কারণে শঙ্কায় রয়েছে স্কুলের শিক্ষার্থীরা। স্কুল খোলার আগে এ দেওয়াল ঠিক করার দাবি জানাই।’

স্টিলের পাইপ দিয়ে দেওয়াল মেরামত করা হয়েছে বলে জানান ক্লিপটন গ্রুপের জামালখানের এ জায়গার দায়িত্বরত মো. শাহাবুদ্দীন। তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘তিন বছর আগে এই দেওয়াল ঝুঁকে পড়েছিল। এতে স্টিলের পাইপ দিয়ে খুঁটি দেওয়া হয়েছে। তবে এটি সহজে ভেঙে পড়বে না।’