শাহীন মাহমুদের কাব্যভাষা

শ্যামল কান্তি দত্ত

অধুনা অধিকাংশ কাব্যরসিক, কবি-সাহিত্যিক ও সাহিত্যের শিক্ষকগণ কবিতার রূপ দেখে মুগ্ধ হন; প্রতিষ্ঠিত-শক্তিশালী কবিগণের বন্দনা করেন। তাঁরা করপোরেট কবিদের নামের আগে বিশেষণ বসাতে ব্যস্ত হন। কিংবা তাঁদের ভাষায় দুর্বল কবিদের তুচ্ছ রচনাগুলোর ওপর বিরূপ মনোভাব ব্যক্ত করেন। তাঁরা ভুলে যান, সাহিত্য-সমালোচকের কাজ কেবল বাইরের রূপ-শোভা নয়, মূলের রহস্যসন্ধান করা। সমালোচককে তাই উৎকৃষ্ট-নিকৃষ্ট সকল শ্রেণির কবিকেই সাহিত্যের আঙিনায় আমন্ত্রণ জানাতে হয়; অভ্যর্থনা করে আনতে হয়। কেননা, ‘সাধারণ কবির তুচ্ছ রচনা জমিয়া জমিয়া যে পলিমাটি সৃষ্টি করে, সেই উর্বর জমিতেই অসাধারণ কবির অঙ্কুরোদ্গম সম্ভব হয়’ (তারাপদ, ১৯৫৪ : ৪৪)। অন্যভাবে দেখলে, সমালোচক মূলত বিশ্লেষণ করতে পারেন শিল্পসৃষ্টির উপকরণের বৈশিষ্ট্যকেÑ শিল্পের সমগ্রতাকে নয়। কারণ তা অসীম, আর অসীমের স্বরূপকে ভাষা দেওয়া যায় না (আবিদ, ২০১৮ : ৩১)। সে-চেষ্টাও তাই অবান্তর। বর্তমান আলোচনা কবি শাহীন মাহমুদ (জ. ১৯৭১) রচিত পাঁচটি কাব্যগ্রন্থের আলোকে কবির কাব্যভাষা চিহ্নিত করবার প্রয়াস মাত্র।
‘নির্বাচিত প্রেমের কবিতা’ (১৯৯৭) কাব্যগ্রন্থ দিয়ে এ কবির কাব্যযাত্রা শুরু। যদিও নব্বই দশকের শুরু থেকে কথাসাহিত্য নিয়ে শাহীন মাহমুদের সাহিত্যসৃষ্টিতে শুভাগমন ঘটে। লেখকের প্রকাশিত কথাসাহিত্য বা উপন্যাসেরর নামগুলোও কাব্যিকÑ ‘অন্তর্গূঢ় দিশা’ (১৯৯৪), ‘ছুঁয়ে দাও একবার’ (১৯৯৭), ও ‘হৃদয়ে তুলির আঁচড়’ (২০০১)।
এই পদ্মার পললে গড়ে ওঠা বাংলার প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে কবি অনুভব করেন, ‘নদী-নারী ভালোবাসার কথা বলেÑ/ নারী আবার নদী হয়ে ডুব দেয় অতলে/ নদীর মতো নারী সূর্য¯œানে মেতে ওঠে/ খোলস পাল্টায় বিষুবরেখা পারের নেশায়।’ (নদী, নির্বাচিত প্রেমের কবিতা)। বিশ শতকের শেষ দশকে দাঁড়িয়ে নারী, নদী আর জীবনানন্দের শঙ্খচিল মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় কবির উপমায়-কাব্যভাষায়। তাঁর কাব্যকুশলতায় উচ্চারিত হয় : ‘নদী, শঙ্খচিল, কালো মেঘ এসব যেন তারই উপমা/ শঙ্খচিলের কান্নায় ঘুম ভাঙে/ হৃদয় পুড়ে খাক হয়Ñ’ (ভালোবাসার জলছাপ, নির্বাচিত প্রেমের কবিতা)। এভাবেই জেগে ওঠেন কবি শাহীন মাহমুদ।
‘প্রসব্য প্রণয়’ (২০১৬) কাব্যের প্রথম কবিতা থেকে শাহীন মাহমুদ আরও বেশি শব্দসচেতন। বৃষ্টি¯œাত বাংলায় ঘন বরষার দিনে কাব্য অনুভব করেন, ‘তুমুল বৃষ্টিতে কাঁপছে শব্দমালা’। কেননা, স্বপ্নের সোনার বাংলায় তখনও তমুল বৈপরিত্ব; কবির ভাষায় : ‘ভাদ্রের তুমুল বৃষ্টিতে আষাঢ় অসাড়,/ শ্রাবণ ভুলের মাশুল।’ (উড়ছে সন্তাপসনদ জলজদর্পণে, প্রসব্য প্রণয়)। তাই তো কবি দেখতে পান চারিদিকে কেবল হাহাকার-অনুতাপ-সন্তাপ। বেদনাবিধুর বিদীর্ণ দর্পণে দৃশ্যের পর দৃশ্য সাজিয়ে কবি তুলে আনেন সমকাল থেকে উড়ন্ত ‘সন্তাপ সনদ’। তবু আশার ভরাডুবি কিংবা ভাদ্রের ভুলগুলো নিয়েই মশগুল মনে হয় না কবিকে। কেননা তাঁর হৃদয়ের হরিৎ উপত্যকায় বাংলার ষড়ঋতুর মতোই ভাদ্রের পর আশ্বিন আসেÑ শুভ্র কাশফুল ফোটে। আর তখন প্রিয়তমাকেও মনে হয়Ñ ‘শারদের কাশফুল তুমি/ কবির পাঁজরে বেড়ে ওঠা পাহাড়ি তুমি, নিজেকে আড়াল করো শব্দ কুঠারে।/ শারদবালিকা তুমি জ্ঞানপাপী জাগতিক নারীমূর্তি।’ (শারদ মেঘের ফুল তুমি, প্রসব্য প্রণয়)। এ জ্ঞানপাপীর খপ্পর থেকে কি পালাতে চান কবি? তাই কি আশ্রয় খোঁজেন প্রকৃতির কাছে, বাহু বাড়ান বিটপীর পানে। তাই হয়তো বিটপীসারির সান্নিধ্যে অনুভব করেনÑ ‘নিশ্চুপ বিটপী খুঁজে প্রেমÑ খুঁজে মানসের মানত দ্রাক্ষা/ আদিম যুগল খোঁজে ডাকটাইল ভালোবাসা।’ (ডাকটাইল ভালোবাসা বিদ্রƒপে বিটপী, প্রসব্য প্রণয়)।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক শাহীন মাহমুদ জাতির পিতার নির্মম হত্যাযজ্ঞের বার্ষিকী জাতীয় শোকদিবসে কেবল শোকগাথা উচ্চারণে থেমে যান না। তিনি বেদনাবিধুর দিনেও স্বপ্ন বুনেন, আশাজাগানিয়া কাব্যভাষায় লেখেন, ‘তবুও ভরা অমাবস্যায় জোছনা নামে/ ৩২ নম্বর বাড়িতে ফোটে হাসনাহেনা/ … আবার ক্যাকটাসে ফোটে ফুল।’ (শোকার্ত জাতি পিতার শোকে নতজানু, প্রসব্য প্রণয়)। এই ফুলেল স্বপ্ন দেখতে গিয়েই স্মৃতিপটে ভেসে ওঠেÑ ফেলে আসা পুষ্পিত সময়ের হারানো আনন্দ-বেদনা। তবু, ‘বাদল দিনের প্রথম কদমফুল আজো ফোটে/ রিমঝিম বৃষ্টি ঝাপসা করে দৃষ্টিসীমাÑ/ কষ্টের অবেলায়’ (একজন রেণু ও একটি কদমফুল’, প্রসব্য প্রণয়)।
সতেরো শতকে সন্দ্বীপের কবি আবদুল হাকিম (১৬২০Ñ১৬৯০) বলেছিলেন, ‘আরবি-ফারসি শাস্ত্রে নাই কোন রাগ।/ দেশীভাষে বুঝিতে ললাটে পুরে ভাগ॥’ (বঙ্গবাণী, নূরনামা)। আর একুশ শতকের শুরুতে আরেক সন্দ্বীপ-সন্তান শাহীন মাহমুদ শোনান, ‘আমার বর্ণমালা মাগোÑ শুধুই তুমি/ নয় আরবি, নয় হিন্দি, নয় উরদুয়ানি।’ (আমার পূর্ব-পশ্চিম বাংলা, প্রসব্য প্রণয়)। মাতৃভাষা আর মাতৃভূমির প্রতি প্রেম থেকে জাত দারুণ দ্রোহের দাবানলে জ্বলে কবি দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘জেগে উঠুক জনকের স্বপ্নডিঙ্গা, মুছে যাক শোণিত রক্তজবার করুণ পংক্তিমালা।’ (সন্দীপ্ত অগ্নি, প্রসব্য প্রণয়)। অথচ বর্তমান বাস্তবতায় তা অনেকটাই অসম্ভব ঠেকে। সামরিক শাসনের করাল ¯্রােতে সময়ের পরিবর্তনে অনেক কিছুই তখন অবাস্তবÑ আকাশকুসুম কল্পনা মনে হয় যেন। এমনকি যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে প্রকম্পিত হয়েছিল উনিশ শ’ একাত্তরÑ আমাদের গর্বের সময়Ñ বাঙালির রাষ্ট্রের জন্ম-মুহূর্ত, সেই স্লোগান আজ কবিতার শিরোনাম থেকেও সরে যায়Ñ কবি-সম্পাদকের কলমের খোঁচায়। কেননা, ‘হিন্দুয়ানির ভয়ে কবি পাল্টে দেয় কবিতার শিরোনাম’ (জয় বাংলা, প্রসব্য প্রণয়)। এমন বীজমন্ত্রের গৌরব ভুলবার কারণও কবি সক্ষোভে সামনে নিয়ে আসেন তাঁর দৃঢ়চেতা কাব্যভাষায়: ‘ভুলবেই তোÑ তারা সব জানোয়ার, রেখে যাওয়া নষ্টের উত্তম বীজ।’ (জয় বাংলা, প্রসব্য প্রণয়)।
‘জেগে ওঠে ফিনিক্স পাখি’ (২০১৭) কাব্যে এসে শাহীন মাহমুদ তাঁর জিজ্ঞাসু কাব্যভাষায় আর তীক্ষ্ম বিশ্লেষণী কৌশলে মাতবতার বাণী ফুটিয়ে তুলেছেন। শিল্পঋদ্ধ মনন নিয়ে সাবলীল ভাষায় সৃজন করেছেন তাঁর কবিতার কায়া। প্রায় প্রতিটি কবিতায় কবি এখানে বিচ্ছুরণোন্মুখ। সমকালীন সমাজবোধের তীব্রতা আর তাঁর বিশ্লেষণী দৃষ্টিভঙ্গির প্রখরতায় দ্যোতিত হয়ে ওঠে শেখ হাসিনাকে নিবেদিত কবিতায়। কবি লেখেন, ‘তুমি তো মুজিবের ক্লোন হয়ে জন্মেছো/ এদেশ মুজিবের সোনা মোড়ানো দেশ/ … এদেশ বাঙালির দেশ।’ (তুমি তো আগুন বরফের ঔরসে জন্মেছো, জেগে ওঠে ফিনিক্স পাখি)। ধর্মান্ধ-সামরিক ছত্রছায়ায় বেড়ে ওঠা এদেশীয় খুনিদের খুঁজে বের করতে কবি কাব্যভাষায় সাধনা করেন আর আহ্বান জানান তাঁর পাঠককেওÑ ‘চলুন কাকের ভাষা শিখি, ধরে ফেলি সব গুপ্ত খুনিদের।’ (একটি কাক ও মানব সভ্যতার প্রথম খুন, জেগে ওঠে ফিনিক্স পাখি)। অসীম আগ্রহ নিয়ে কবি অধ্যয়ন করে চলেন আমাদের অতীত ঐতিহ্য। কবির ভাষায় : ‘ক্লেদ নগরে শিখি তক্ষশীলার পাঠ।’ (তক্ষশীলার পাঠ’, ‘জেগে ওঠে ফিনিক্স পাখি’)।
আমাদের অতীত-অহংকার আর ইতিহাসের অমিতপাঠ শেষে কবি তুলে আনেন জাতির পিতার হত্যকারীদের প্রকৃত পরিচয় : ‘তারা ওই হানাদারদের বংশপরম্পরা,/ বাঙালির খোলসে ভিনদেশি বেজন্মা দাগ।’ (লায়ালপুর ট্রায়াল, ‘জেগে ওঠে ফিনিক্স পাখি’)।
‘হৃদ্যা আমিও জেগে আছি’ (২০১৮) কাব্যগ্রন্থে এসে কবি সমকালীনতার পঙ্কিল-পিচ্ছিল মাটিতে দাঁড়িয়ে থেকেও যেন কল্পনার ডানা মেলে দেন শরৎ আকাশের শুভ্রমেঘের রাজ্যে। বলতে হয় যে, তিনি সমকালের চিত্রকে রূপায়িত করেন কবিতায়। সাহিত্য অন্তপ্রাণ শাহীন মাহমুদ-এর এই সময়ের কবিতার দিকে গভীর মনোনিবেশ লক্ষ্য করে এ কাব্যের সমকালীন সমালোচকেরও মনে হয়েছে যে, ‘এ মুহূর্তে কবিতাই তাঁর একমাত্র আরাধ্য বস্তু’ (চৌধুরী, ২০১৮)। সমকালীন সমাজ-সমস্যাকে পাশ কাটিয়ে তথাকথিত সুশীল-বুদ্ধিজীবীগণের টকশোর নামে টাউট-বাটপারি কবিকে প্রশ্নাকুল করে তোলে। তাই কবিতা দিয়ে কবি প্রশ্ন ছুড়ে দেনÑ ‘নির্বোধ জিব আর মগজের কাকতাড়–য়া/ অসাড় জিব নিয়ে বাঁচো কীভাবে?’ (ডালিম সমাচার, ‘হৃদ্যা আমিও জেগে আছি’)। তাঁর কবিতার পঙক্তি হয়ে ওঠে আসে জাতির পিতার অনবদ্য অবদান আর তাঁর হত্যাকারীদের প্রতি ধিক্কারের ধনুর্বাণ। শাহীন মাহমুদের কাব্যভাষায় অতি অল্পকথায় চিত্রপটের মতো স্পষ্ট ভেসে ওঠেÑ ‘ঐ পুঁজিবাদ আজও রক্ত চায়। ঐ জাগ্রত সা¤্রাজ্য এখনও/ পানির দামে কিনতে চায় মানবতা, অলৌকিক শ্রমঘণ্টা।’ (হেনরির হাতুড়ি, ওই) বাংলাদেশের আদিবাসী নারীর বেদনার, ভালোবাসার চিত্রও আঁকেন কবি আদিবাসী ভাষাকে নিজের কাব্যভাষায় নিপুণতার সাথে ঠাঁই দিয়ে। তাঁর কাব্যের আদিবাসী তাই প্রশ্ন রাখে, ‘পিরিতি বাড়াইলা কেনে?’ (স্বারতী ওঁরাও’)। এভাবে দ্রোহ-দারুণ বেদনা আর সমকালের সাথে জড়িয়ে যায় কবির প্রেমের-ভালোবাসার, রূপক-চিত্রকল্পগুলো। তাঁর কবিতার ভাষা যেমন প্রতিবাদ মুখর, তেমনি জনগণের জয়গানেও মুখর অনুক্ষণ। আর সব মিলে স্বদেশের সাথে আধুনিক জীবনের নানান অনুষঙ্গ তাঁর কবিতায় এসে ধরা দেয় পার্থিব-মানবিক প্রেমের টানে। এই প্রেমই তাঁর কাব্যপাঠককে মুগ্ধ করে রাখে, কবিকে দেয় পাঠকপ্রিয়তার মুকুট।
‘হেম ও তস্করের পদাবলি’ (২০১৯) কাব্যগ্রন্থে শাহীন মাহমুদ তাঁর স্বভাবজাত নতুন শব্দের সমাবেশ ঘটিয়ে স্বকীয় কাব্যভাষা সৃষ্টিতে সম্যকরূপে সক্রিয় হয়েছেন। তাঁর কাব্যভাষার মায়াবী মন্ত্রমুগ্ধতা আর নন্দনতত্ত্বের সম্মোহনী স্ফুরণ পাঠককে বিস্মিত-বিমুগ্ধ করে। কাব্যগ্রন্থের শুরুতে দেখা যায়, কবি প্রচলিত পথে নয়Ñ সমকালের প্রায় সবার বিপরীতে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীরাঙ্গনার কথা বলতে চান এভাবে, ‘এবার তবে না হয় উল্টো থেকে লিখ রমানামা, তাঁর কিশোরীকাল/ দুরন্ত যৌবনে হায়েনাদের তাড়া খাওয়া উপোসকালের দিনগুলির কথা।’ (দুটি রুগ্ন পা ও পাদুকার গল্প, হেম ও তস্করের পদাবলি)। কাব্যগ্রন্থটি উৎসর্গও করেন একাত্তরের জননী রমা চৌধুরীকে। বাস্তবের বাতাসে কবি উনিশ শ ছেয়ট্টির ছয়দফাকে দুলতে দেখেন আর উপলব্ধি করেন যে, ছয়দফার ফসল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়। তাই তো তাঁর কাব্যভাষায় তুলে ধরেনÑ ‘আকাশে বাতাসে আজও দোল খায় সেই ছয়টি পাপড়ি/ ফুটে আছে বিজয় ফুল সাতটি পাপড়ি নিয়ে।’ (বিজয় ফুল, হেম ও তস্করের পদাবলি)। এই বাস্তবতার মধ্যেই অবলীলায় প্রবেশ করে অতিবাস্তব আখ্যান; সেখানে, ‘মায়ের বাসন মাজার শব্দ অলৌকিক দেয়ালঘড়ি’। বাস্তব আর অতিবাস্তব মিলেমিশে এক মায়াময় আবেশ সৃষ্টি হয় কবি যখন লেখেন, ‘ঘুমঘরে দেখি দৌড়ে পালায় যাপিত জীবন/ অনন্তকাল; এক ভয়ংকর কালো বিড়াল।’ (অলৌকিক দেয়ালঘড়ি, ওই)।
এভাবে অধিবাস্তববাদের সাথে মেশে বিভিন্ন মতবাদ। তবে মানবিক প্রেমের রসায়নে সব মিলে এক অভিনতুন কাব্যভাষা গড়ে ওঠে, কবি যখন লেখেন, ‘দ্বৈতবাদের ঘোরে অমাবস্যা নামে/ নির্ঘুম চলে ঘাস আর শিশিরের/ ফোটা ফোটা প্রেম।’ (আরশিনগর, ওই)। এই মানবিক প্রেম আবার আচমকা তাঁকে বাস্তব-জমিনে নামিয়ে আনে। তাঁর সহৃদয় পাঠকমাত্রই অনুভব করেন এক নতুন মোহনীয় কাব্যভাষা, প্রেমময় কল্পজগতের পথে অভিযাত্রার অভিজ্ঞতা। এই নতুন কাব্যভাষা নির্মাণের প্রয়াস নিঃসন্দেহে শাহীন মাহমুদের অন্যতম বিশিষ্টতা।