শঙ্খের পারে ১৪ বছর ধরে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ফেরি

আটকে রয়েছে বেড়িবাঁধের কাজ

সুমন শাহ্, আনোয়ারা :
সড়ক ও জনপদ বিভাগের অযতœ আর অবহেলায় নষ্ট হয়ে আনোয়ারা উপজেলার তৈলারদ্বীপ সেতু এলাকার শঙ্খ নদীর পাড়ে পড়ে আছে কোটি টাকার ফেরি। মরিচা পড়ে ক্ষয় হচ্ছে এবং রাতের আঁধারে চুরি হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ। চুরি থেকে রেহাই পাচ্ছে না নাটবল্টুও। সংরক্ষণের অভাবে একটি ফেরি হারিয়ে গেছে ইতিমধ্যে। নষ্ট ফেরির কারণে আটকে আছে বেড়িবাঁধ নির্মাণের কাজও। দখলে চলে গেছে আশপাশের জায়গাও।
আশির দশকে সরকার আনোয়ারা-বাঁশখালীর মানুষের যাতায়াতের কষ্ট লাঘব করতে তৈলারদ্বীপ-চানপুর নৌঘাটে ফেরি চালু করে। ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ফেরি ঘাটসংলগ্ন এলাকায় সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। ওই বছর ১৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। পরে ২০০৬ সালের ২৯ আগস্ট সেতুটি উদ্বোধন করা হয়। সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বন্ধ হয়ে যায় শঙ্খ নদে চলাচলকারী কোটি টাকা মূল্যের দুটি ফেরি। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) এই দুটি ফেরি তৈলারদ্বীপ ঘাটেই পড়ে আছে প্রায় ১৪ বছর ধরে। ফেরি দুটি পাহারা দেওয়ার জন্যও সওজের নেই কোনো কর্মী।
রোববার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুটি ফেরির মধ্যে একটি ফেরির দেখা নেই। অপর ফেরির পন্টুনের একাংশ ডুবে আছে নদের পানিতে। ফেরির বাকি অংশে স্থানীয় লোকজন খড়ের গাদা ও গোবর শুকাতে দিয়েছে। সেতু উদ্বোধনের ১৪ বছর পার হলেও এ ফেরি গুলো অপসারণ বা রক্ষায় কোন উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ সময় অযতœ আর অবহেলায় কাদা মাটির সঙ্গে মিশে নষ্ট হচ্ছে ফেরি।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু তাহের জানান, সেতু চালু হওয়ার পর থেকে ফেরিগুলো নদীর পারে পড়ে আছে। লবণাক্ত পানি আর মাটির নিচে পড়ে ফেরিগুলো দিন দিন ক্ষয় হয়ে গেছে। এ ফেরিগুলো এখন আর কোন কাজে আসবে না। রাতের আঁধারে ফেরির বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে গেছে অনেকেই। ফেরিতে ছোট ছেলে মেয়েরা খেলাধুলার সময় বা নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে হাত পা কেটে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ফেরির কারণে নদীর পাড়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ হলেও এখানে এসে থেমে গেছে উন্নয়ন কাজ।
স্থানীয় বারখাইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এটি সরকারের মূল্যবান সম্পদ। অযতœ-অবহেলায় নষ্ট হয়ে গেছে এ সম্পদ। বাকি যে অংশগুলো রয়েছে সেগুলো রক্ষাণাবেক্ষণ করা প্রয়োজন কর্তৃপক্ষের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোহাজারী সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সুমন সিংহ বলেন, মেকানিক্যাল ক্রটির কারণে এ ফেরি দুটি সরানো হয়নি। শীঘ্রই সার্ভিসিংয়ের মাধ্যমে সরানো হবে।