রহস্যই থেকে গেলো দিব্যা ভারতীর মৃত্যু

সুপ্রভাত ডেস্ক :
বলিউডে বহু বিখ্যাত অভিনেতা অভিনেত্রীর মৃত্যু এখনও রহস্য। তালিকায় এখনও পর্যন্ত শেষ নাম সুশান্ত সিং রাজপুত। রয়েছে শ্রীদেবীর মতো অভিনেত্রীর নামও। তবে এখনও দিব্যা ভারতীর মৃত্যু এখনও অবাক করে সিনেমাপ্রেমীদের। নয়ের দশকের শুরুর দিকে সিনেমা জগতের হার্টথ্রব। অল্প সময়েই সাফল্যের শিখরে। সেই সুউচ্চ স্থান থেকেই পরেই অবাক করা মৃত্যু যা এখনও রহস্য। খুন না আত্মহত্যা না কি দুর্ঘটনা!
অভিনেত্রী ভাগ্যের নিদারুণ পরিহাসে ট্র্যাজিক চরিত্রে পরিণত হওয়া। মুম্বাইয়ের ভারসোভার তুলসী অ্যাপার্টমেন্টে পাঁচতলার ফ্ল্যাটে পরিচারিকা অমৃতার সঙ্গে থাকতেন অভিনেত্রী। মাঝে মধ্যে আসতেন স্বামী সাজিদ নাদিয়াওয়ালা। বলিউডের পাশাপাশি দক্ষিণ ভারতের ছবিতেও তখন দিব্যা খুবই পরিচিত মুখ।
৫ এপ্রিল ১৯৯৩, দক্ষিণ ভারত থেকে একটি ছবির শুটিং সেরে ভোরবেলা মুম্বই ফেরেন দিব্যা ভারতী। সেদিনই আবার অন্য একটি ছবির ব্যাপারে তার মুম্বাই ছাড়ার কথা। কিন্তু সেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট সেদিনের জন্য ক্যানসেল করলেন তিনি এবং পরিবর্তে ভাইকে সঙ্গে নিয়ে মুম্বাইয়ের এক আবাসনে নতুন ফোর বিএইচকে ফ্ল্যাট কিনবেন বলে পছন্দ করে এলেন অভিনেত্রী। রাত্রি দশটা নাগাদ, যখন তার বাবার পালি হিলসের বাড়িতে মা, বাবা, ভাইয়ের সাথে সময় কাটাচ্ছেন দিব্যা, সেইসময় তার কাছে ফোন আসে যে আগামী একটি ছবির কস্টিউমের ব্যাপারে কথা বলতে ডিজাইনার নীতা লুল্লা আসছেন দিব্যার তুলসী অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাটে, সাথে আছেন নীতার স্বামী শ্যাম লুল্লা। অতঃপর বাবা মার কাছে বিদায় নিয়ে তুলসী অ্যাপার্টমেন্টে ফিরলেন অভিনেত্রী।
রাত প্রায় এগারোটা, ফ্ল্যাটে তখন দিব্যা ছাড়া উপস্থিত তিনজন। পরিচারিকা অমৃতা রান্নাঘরে ব্যস্ত, নীতা এবং তার স্বামী শ্যাম লুল্লা টিভিতে কিছু একটা দেখছেন। পানাহার চলছে। দিব্যা বেশ নেশাগ্রস্ত হয়ে ফ্ল্যাটের একটি নির্দিষ্ট জানালার কাছে যান। বিল্ডিংয়ের অন্যান্য জানলায় গ্রিল থাকলেও ঐ জানলাটিতে কোনও গ্রিল ছিলনা। সেই জানলায় বসতে গিয়ে বা অজ্ঞাত কোনো কারণে আচমকা ফসকে গিয়ে নিচে পড়ে যান দিব্যা! হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। তখন তার বয়স ছিল মাত্র উনিশ বছর।
কেউ বলেন বলিউডের সঙ্গে আন্ডারওয়ার্ল্ডের যোগাযোগের কিছু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য দিব্যা জেনে গিয়েছিলেন, যার মাশুল দিতে হয়েছিল। অভিযোগের তীর ছিল স্বামী সাজিদ নাদিয়াওয়ালার জল্পনা আরও বাড়িয়ে দেয় দিব্যার মৃত্যুর এক মাসের মধ্যে তার পরিচারিকা অমৃতার মৃত্যু, যা হার্ট অ্যাটাকে হয়েছিল বলেই বলা হয়। দিব্যার মৃত্যুর পাঁচ বছর পর, ১৯৯৮ সালে পুলিশি তদন্তের ফাইনাল রিপোর্টে তার মৃত্যুকে দূর্ঘটনায় বলেই চিহ্নিত করা হয়। ফাইল বন্ধ হয়ে যায়।
১৯৯০ সালে তেলুগু বব্বিলি রাজা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে দিব্যার চলচ্চিত্র জীবন শুরু হয়। এরপর ১৯৯২ সালে বিশ্বআত্মা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ভারতী শোলা অর শবনম (১৯৯২) এবং দিওয়ানা (১৯৯২) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সাফল্য লাভ করেন, এবং যার জন্যে শ্রেষ্ঠ নবাগত অভিনেত্রী বিভাগে ফিল্মফেয়ার পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৯২ এবং ১৯৯৩-এর প্রথমার্ধে তিনি ১৪টি হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যা আজ পর্যন্ত বলিউডে অভিষেক হিসেবে তার রেকর্ড হয়ে আছে।