মোদি ইস্যুতে উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ

আজ হরতালের ডাক হেফাজতের

নিজস্ব প্রতিবেদক <<
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমন এবং হেফাজত ইসলামের বিক্ষোভ ও চারজনের মৃত্যুর ঘটনায় উত্তপ্ত রাজনীতির মাঠ।
শুক্রবারের এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল শনিবার চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বিক্ষোভ করেছে হেফাজত ইসলাম। আজ রোববার সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে দলটি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে নেমেছে বর্ডার গার্ড অব বাংলাদেশ (বিজিবি), সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
গতকাল শনিবার দুপুরে নগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ ময়দানে বিক্ষোভ করেছে হেফাজতের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা নরেন্দ্র মোদি এদেশে আসায় তীব্র সমালোচনা করে সরকার ও প্রশাসনকে হুঁশিয়ার করে বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও আমরা এখনো নিহতদের লাশ পাইনি। ময়নাতদন্তের নামে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা সুষ্ঠু ময়নাতদন্ত আশা করছি।
সমাবেশে বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আল্লামা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজতে ইসলাম নেতা মির্জা ইয়াছিন, মহানগর নেতা ইউছুফ বিন ইয়াকুব, মাওলানা শামীম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সায়েম উল্লাহ, আলী উসমান ও মহানগর সেক্রেটারি লোকমান হাকিম।
এদিকে, হেফাজতের আমীর আল্লামা বাবুনগরী মিডিয়ায় পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, মোদির আগমনের প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকা বায়তুল মোকাররম, হাটহাজারী, যাত্রাবাড়ী, বি-বাড়িয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলনরত জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে ছয়জনকে শহীদ করা হয়েছে। গুলি ও টিয়ারস্যাল নিক্ষেপ করে প্রায় চারশ জনকে আহত করা হয়েছে। এর জবাব প্রশাসনকে দিতে হবে এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
অন্যদিকে, বি-বাড়িয়ায় হেফাজত ইসলামের কর্মীদের বিক্ষোভে কোনো ট্রেন সেখানে বিরতি দেয়নি। এছাড়া চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে বিক্ষুব্ধ কর্মীরা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে ইটের দেয়াল তৈরি করেছে। গত শুক্রবার থেকেই চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এদিকে ২৪ ঘণ্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এক সদস্যকে। গত শুক্রবার সংঘর্ষের সময় জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার এক পুলিশ সদস্যকে তুলে নিয়ে যায় হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেল চারটায় তাকে উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ওই পুলিশ সদস্যের নাম মো. সোলাইমান (৪০)। তিনি জেলা পুলিশের বিশেষ শাখায় কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। তিনি সুস্থ রয়েছেন বলে জানা যায়। এছাড়া গত শুক্রবার পুলিশের সঙ্গে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় হাটহাজারী ডাক বাংলা এলাকায় দায়িত্ব পালনরত শিক্ষানবিশ পুলিশ সুপার ফারাবি ও এসআই মেহেদীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে একইদিন (শুক্রবার) বিকেলের দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় এই দুই পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। বর্তমানে তারা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
গতকাল শনিবারও হাটহাজারী সদর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। সকাল থেকে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে সেখানে বিপুলসংখ্যক মাদ্রাসাছাত্র অবস্থান করে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে র‌্যাব ও পুলিশের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।
হেফাজতের হরতালের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার যুবলীগ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা জুবিলী রোড ও নিউমার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় খণ্ড খণ্ড মিছিল বের করে।