মিতু হত্যা মামলা : নতুন করে তদন্ত করছে পিবিআই

আসামি শাহজাহানের দুই দিনের রিমান্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক »

দায়িত্ব পাওয়ার ৮ মাস পর আলোচিত মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নতুন করে শুরু করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

রোববার এ মামলার তিন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চট্টগ্রাম  মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালতে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় পিবিআই। মাহমুদা খানম মিতু সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী। এ মামলায় শাহজাহান মিয়া নামে এক আসামিকে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অপর দুই আসামি মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম ও শাহজাহান মিয়াকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত।

জানা গেছে, তিন বছর ডিবি পুলিশ তদন্তের পর চাঞ্চল্যকর এ মামলাটির তদন্তভার পায় পিবিআই। তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই‘র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মঈন উদ্দিন রোববার বিকালে সুপ্রভাতকে বলেন, ‘গত জানুয়ারিতে মিতু হত্যা মামলার তদন্তভার পায় পিবিআই। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে ৮ মাস যাবত তদন্ত শুরু করতে পারিনি। দুই সপ্তাহ আগে এ মামলার তদন্ত শুরু করেছি।’

দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পাওয়া আসামি শাহজাহান মিয়া রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাণীরহাট এলাকার কবির আহমদের ছেলে। অপর দুই আসামি মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর এলাকার আবদুন নবীর ছেলে, আনোয়ার হোসেন ফটিকছড়ি উপজেলার পাইড্রালিকুল এলাকার শামসুল আলমের  ছেলে। ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন মিতু। পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদরদপ্তরে যোগ দিয়ে সেসময় ঢাকায় ছিলেন বাবুল আকতার। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম নগর ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।

মিতু খুনের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন বাবুল আকতার। ঘটনার ১৮ দিন পর ২৪ জুন ঢাকার বনশ্রীর শ্বশুরের বাসা থেকে ঢাকা গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে বাবুল আক্তারকে ১৬ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। একই বছর ৬ সেপ্টেম্বর বাবুল আকতারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

মিতু হত্যাকা-ের কয়েক দিন পর ২৬ জুন মো. আনোয়ার ও  মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিমকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। এতে কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা নামে একজনের ‘পরিকল্পনায়’ মিতু খুন করা হয় বলে জানান তারা। প্রসঙ্গত, মুসা ছিলেন বাবুল আকতারের সোর্স। গত চার বছরের বেশি সময় ধরে মুছার হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে তার স্ত্রী পান্না আক্তারের দাবি, মিতু খুনের ১৭ দিনের মাথায় তার স্বামীকে গ্রেফতার করে নগরীর বন্দর থানা পুলিশ। তবে বিষয়টি পুলিশ স্বীকার করছে না। এদিকে জবানবন্দিতে আনোয়ার ও মো.  মোতালেব বলেন, কালু, নবী, মুছা এবং তিনি সরাসরি মিতু হত্যাকা-ে অংশ নেন। নবী ও কালু মিতুকে ছুরিকাঘাত করে।

মিতু হত্যকা-ে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ভোলা ও তার সহযোগী মনিরকে একটি পিস্তলসহ গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ। ভোলা ও মনিরকে আসামি করে অস্ত্র আইনে মামলা দায়েরের পাশাপাশি ভোলাকে মিতু হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। মিতু খুনের ঘটনায় ছয়জনকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এর মধ্যে দুইজন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। এদিকে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ভোলা জামিনে মুক্তি পান।