মিতু হত্যা মামলার আসামি কালু সাত বছর পর গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক »

নগরীর চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যা মামলার পলাতক আসামি খাইরুল ইসলাম কালুকে সাত বছর পর গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। শুক্রবার (২ জুন) দিবাগত রাত ২টার দিকে নগরীর আকবর শাহ থানার ছিন্নমূল এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পিবিআই।

পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের পুলিশ সুপার (এসপি) নাইমা সুলতানা বলেন, হত্যাকা-ের পর থেকে কালু পলাতক ছিলেন। শুক্রবার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে রাঙ্গুনিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে রাঙ্গুনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহাবুব মিল্কি বলেন, গ্রেফতার কালুর ইতিপুর্বে দুটি গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত মামলা ছিল। তাকে আজ (শনিবার) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে নগরীর ও আর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তৎকালীন পুলিশ সুপার ও মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যামামলা করেন। তবে মামলাটিতে স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে স্বামী বাবুল আক্তারেরই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। ২০২১ সালের ১২ মে আগের মামলাটিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। একই দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় দ্বিতীয় মামলাটি দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে রয়েছেন বাবুল।

এদিকে, প্রথম মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারাজির আবেদন করেন বাবুলের আইনজীবী। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ৩ নভেম্বর নারাজি ও পিবিআইয়ের প্রতিবেদন খারিজ করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের আদেশ দেন। এরপর দুটি মামলাই তদন্ত করতে থাকে পিবিআই।

তবে পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারি মিতুর বাবার দায়ের করা মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। এরপর একই বছরের ১৩ সেপ্টেম্বর প্রথম মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে বাবুলসহ সাত জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। চলতি বছর ১৩ মার্চ আলোচিত মামলাটিতে বাবুল আক্তারসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। বর্তমানে চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।