মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্পে ৯ হাজার ৮১ কোটি টাকা বরাদ্দ

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি

সুপ্রভাত ডেস্ক »

আগামী অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৭৫ হাজার ৯৪৪ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ২৮ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এই খাতের মোট ব্যয়ের মধ্যে ৪৪ হাজার ৫৭১ কোটি টাকা সরকারি তহবিল থেকে আসবে। বৈদেশিক ঋণ থেকে পাওয়া যাবে ৩১ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকা। পরিবহন ও যোগাযোগ খাতের বরাদ্দের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগকে। এই বিভাগ বরাদ্দ পাচ্ছে ৩৪ হাজার ৬২ কোটি টাকা। খবর বাংলাট্রিবিউনের।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও এনইসি চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এডিপিতে বরাদ্দ পেয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত। এ খাতের জন্য বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে ৪৪ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। যা মোট বরাদ্দের ১৬ দশমিক ৮৮ শতাংশ। এ খাতের বেশিরভাগ ব্যয় হবে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়নে। এ খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ পাচ্ছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এ বিভাগের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৩৩ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা।

এছাড়া, রেলপথ মন্ত্রণালয়কে ১৪ হাজার ৯৬০ কোটি টাকা (৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে. মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগকে ১৪ হাজার ৮৬ কোটি (৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ). বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে ১২ হাজার ৯৮০ কোটি (৪ দশমিক ৯৪ শতাংশ), স্বাস্থ্য সেবা বিভাগকে ১২ হাজার ২০৯ কোটি (৪ দশমিক ৬৪ শতাংশ), প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ১২ হাজার ১৮ কোটি (৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ), নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হয়েছে ৯ হাজার ৪৭৩ কোটি (৩ দশমিক ৬০ শতাংশ) এবং সেতু বিভাগের জন্য ৯ হাজার ৬৪ কোটি (৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ) টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

সর্বোচ্চ বরাদ্দপ্রাপ্ত ১০টি প্রকল্প হচ্ছে- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ (৯ হাজার ৭০৭ কোটি), মাতারবাড়ি কয়লাচালিত বিদ্যুৎ প্রকল্প (৯ হাজার ৮১ কোটি), চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) (৮ হাজার ৫৮৬ কোটি), ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্প (৫ হাজার ৮৭০ কোটি), পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (৫ হাজার ৫০০ কোটি), হযরত শাজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প (৫ হাজার ৪৯৯ কোটি), ফিজিক্যাল ফ্যাসিলিটিজ ডেভেলপমেন্ট (পিএফডি) (৪ হাজার ৬৯৬ কোটি), ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানিজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (লাইন-১) (৩ হাজার ৯১১ কোটি), বঙ্গবন্ধু রেলওয়ে সেতু নির্মাণ প্রকল্প (৩ হাজার ৭৭৮ কোটি), ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রান্সজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প (লাইন-৬) (৩ হাজার ৪২৫ কোটি)।

সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, প্রতিবারের মতো এবারও মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে, মেট্রোরেল ও পদ্মা সেতুতে বড় বরাদ্দ থাকছে। এছাড়া কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল, পদ্মা রেল সংযোগ, যমুনা রেল সেতু ও দোহাজারী-কক্সবাজারের মতো যোগাযোগ এবং ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অবকাঠামোর মতো বেশ কিছু বড় প্রকল্প বাস্তবায়নের শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী অর্থবছরে এগুলোর বাস্তবায়ন কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। চলমান বৃহৎ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অগ্রাধিকার দিয়ে আগামী অর্থবছরে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে সর্বোচ্চ এডিপি বরাদ্দ রাখা হয়েছে।