বিধিনিষেধের মেয়াদ বাড়লো : ঝুঁকি নিয়ে চলাচল নয়

প্রাণঘাতি করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার চলমান বিধিনিষেধ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে। এবার ঈদুল ফিতরও পড়েছে লক-ডাউনের মধ্যে। দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে, স্বাস্থ্যবিধির ব্যত্যয় ঘটলে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। ৬ মে থেকে নগর ও জেলার মধ্যে গণপরিবহন চলবে, তবে এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন চলবেনা। লকডাউনের সময় ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ থাকবে। ঈদের সময় শুক্র, শনিসহ সরকারি ছুটি ৩দিন। এর বেশি কাউকে ছুটি দেওয়া যাবেনা। সরকারি, বেসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত অফিস বন্ধ রয়েছে, ১৬ মে পর্যন্ত তা থাকবে। তবে বিমান, সমুদ্র, নৌ ও স্থলবন্দর এবং এ সংক্রান্ত অফিসগুলো নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। ব্যাংক আগের অফিস নিয়মে চলবে। স্বাস্থ্যবিধি মানতে প্রশাসনের তদারকি বাড়বে, মাস্ক ছাড়া বেশি লোকের সমাগম থাকলে মার্কেট বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও প্রশাসন থেকে কঠোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে সরকার থেকে জানানো হয়।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ তীব্র হওয়ায় এ বছরের ৫ এপ্রিল থেকে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলো ১৬ মে পর্যন্ত। করোনার প্রথম সংক্রমণেও ৬৬দিন লকডাউন ছিল। ঢাকা এবং বড় বড় শহর থেকে ঈদের সময় মানুষের গ্রামমুখি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে আন্তঃজেলা পরিবহন এবং ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিধিনিষেধের কারণে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যু অনেকটা নি¤œমুখি। ঈদের আগে পরে যদি লোক চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা না যায় তাহলে সংক্রমণ পরিস্থিতি আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে-এসব আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
গতবারের ঈদের আগে পরের পরিস্থিতি সুখকর ছিলনাÑলকডাউন থাকা সত্ত্বেও মানুষ নানাভাবে ছোট ছোট যানবাহন, বোট, লঞ্চ, ট্রলারে করে বাড়ি গেছে এবং সংক্রমণ দেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। এবারও মানুষ যদি বেপরোয়া হয়ে ঢাকা ছাড়ে তবে সংক্রমণ পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কঠিন হবে। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, চট্টগ্রাম ও বড় বড় নগর থেকে মানুষের বাড়ি যাওয়া রোধ করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর হতে হবে।
এবার সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঈদের ছুটিও সীমিত করা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের করোনা পরিস্থিতি এবং ভাইরাসের ধরণ আমাদের দেশেও গভীর শঙ্কা তৈরি করেছে।
ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল এবং স্পিডবোটের চালকের অবহেলায় পদ্মায় সলিল সমাধি ঘটলো ২৬জন যাত্রীর। পদ্মায় নোঙর করা বাল্কহেডকে স্পিডবোট ধাক্কা দিলে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। বিধিনিষেধের সময় নৌ চলাচল কিভাবে ঘটলো? নৌ-পুলিশ এবং অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতার ফল ওই মৃত্যু। বোটটির নিবন্ধন ছিলনা বলে জানা গেছে। বিধিনিষেধ থাকার পরও প্রতিদিন মানুষ নৌ-পথে পারাপার করছে ঝুঁকি নিয়ে প্রশাসনের চোখের সামনেই এ ক্ষেত্রে প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে কঠোর হতে হবে, জনগণকেও জীবন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার থেকে বিরত থাকতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঈদের পূর্বাপর জন চলাচল নিরুৎসাহিত করতে পারলে সংক্রমণের ভয়াবহতা রোধকরা সম্ভব হবে। এ জন্য প্রশাসন থেকে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালানো, কঠোরভাবে বিধিবিধান প্রয়োগ করতে সচেষ্ট হতে হবে। জীবন-জীবিকার সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে মানুষকে সচেতন এবং সতর্ক হতেই হবে, কিছু স্বার্থও ত্যাগ করতে হবে।