বর্ষণে রাস্তা- ড্রেন একাকার

দক্ষিণ পাহাড়তলীর বাদামতল এলাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চলতি মাসের ৭ আগস্ট সকালে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষায় অংশ নিতে ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলীর বাদামতল এলাকায় বাড়ির বাইরের অরক্ষিত ড্রেনে তলিয়ে মারা যান নিপা পালিত নামের এক শিক্ষার্থী। তার মৃত্যুর ২০ দিন অতিবাহিত হলেও এখনও অরক্ষিত সেই ড্রেন।

২৬ আগস্ট দিবাগত রাত থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত টানা বর্ষণে আবারো ডুবেছে সেই ড্রেন। যেকোনো সময় ঘটতে পারে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি। বাধ্য হয়ে সেই রাস্তা দিয়ে চলাচল করলেও এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।

নিপা পালিত স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের অথর্নীতি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। পরীক্ষা থাকায় বাধ্য হয়ে তিনি টানা বর্ষণের মধ্যেও ঘর ছেড়ে বের হয়েছিলেন। এদিকে গতকাল থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। নিপার এলাকাসহ আশপাশের অনেক এলাকার মানুষ এই সড়কটি যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীও রয়েছেন। ডুবন্ত সড়ক থেকে এখানো পানি নামেনি। কোমর সমান পানি বেলা বাড়ার সাথে সাথে হয়েছে বুক সমান।

ঐ এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘নিপার মৃত্যুর পর যতটুকু পানি ছিলো আজকে (গতকাল) তার থেকে দ্বিগুণ পানি। ঐদিকে পার হওয়ার মতো অবস্থা নেই। পানির স্রোত এতো তীব্র যে পা শক্ত করে স্থির থাকা কঠিন। ড্রেনটা এই পানির মধ্যে কোন দিকে রয়েছে সেটা বোঝারও উপায় নাই। কয়দিন আগে একটা মৃত্যুর ঘটনা ঘটলো অথচ এখন পর্যন্ত এখানে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। আবারো দুর্ঘটনা ঘটলে এর দায় কে নিবে?’
পল্টু পালিত নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘নিপার মৃত্যুর পরও এখানে স্ল্যাব নির্মাণ হয়নি, কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। টানা বৃষ্টিতে পানিতে ডুবে আছে রাস্তা।’

পাহাড়তলীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী শফিউল আজিম ১০ আগস্ট বলেছিলেন, ‘আমাদের সিটি কর্পোরেশনের আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে চলছে। এর মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডে দেড় মাস ধরে ৮ কোটি টাকার ড্রেন রাস্তা ইত্যাদি মেরামতের কাজ চলমান আছে। এছাড়া আরো ৩ কোটি টাকার কাজের টেন্ডার এখানে হয়েছে। ওয়ার্ক অর্ডার পেলে কাজ শুরু করবো। ’
এ ব্যাপারে ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী শফিউল আজিম বলেন, ‘তাৎক্ষণিক টানাপোড়নে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনা নেই, বৃষ্টি না থামলে কাজ করা যাবেনা’।
তবে বৃষ্টিহীন গত ২০ দিনে কেন কাজ হয়নি এ প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে সড়কের সাথে পানিতে একাকার অরক্ষিত এই ড্রেনে ভবিষ্যতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দায় কার হবে এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঐ মেয়েটা মূলত মৃগী রোগী ছিলো; তাই এ ধরণের দুর্ঘটনা ঘটেছে। এখন টানা বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে তো কিছু করার থাকবেনা। ’

এ ব্যাপারে মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সাথে বেশ কয়েকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।