ফিলিস্তিনে রক্তস্রোত : মুসলিমবিশ্ব নীরব কেন?

ফিলিস্তিনিদের আরও নিখুঁতভাবে হত্যা করার জন্য জো বাইডেন প্রশাসন ইজরাইলকে অত্যাধুনিক ৭৩ কোটি ৫০ লাখ ডলার মূল্যের অস্ত্রের সম্ভাব্য বিক্রিতে অনুমোদন দিয়েছে সম্প্রতি। গত সোমবার মার্কিন কংগ্রেসের বেশ কয়েকটি সূত্র এ তথ্য জানিয়েছে বলে রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদন জানিয়েছে।
ইসরাইলের সঙ্গে এখন ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক ও সামরিক গোষ্ঠী হামাস-এর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ চললেও যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারা ওই অস্ত্রবিক্রির চুক্তিতে বাধা দেবেন না বলেই ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদও ‘নরম সুরে’ও নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণে নীরবতা পালন করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাপে। ইজরাইলে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র বিক্রির মার্কিন উদ্যোগের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জায়িফ।
অপরদিকে ইজরাইলি ঘৃণ্য বর্বরতায় গাজায় ধ্বংসযজ্ঞ ও রক্তবন্যা চলতে থাকলেও মুসলিম বিশ্বের দেশগুলোও অদ্ভুত ধরনের নীরবতা পালন করে চলেছে। ইজরাইল ও হামাস যখন সর্বাত্মক যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তখন আরব দেশগুলো এ বিষয়ে ‘বিবৃতির ভাষা কী হবে’ এ নিয়েই ব্যতিব্যস্ত সময় পার করছে। এই লড়াই থামাতে কী করা উচিত, এই দোটানায় দিন কাটছে আরব রাষ্ট্রগুলোর। দেখা যাচ্ছে, এই প্রথমবারের মতো ফিলিস্তিন বিষয়ে আরব দেশগুলোর ঐক্যে বড় ফাটল দেখা গেল।
আগে অনেক দেশ এ নিয়ে বিবৃতি দিলেও এবার তারাও খুব সংযম দেখাচ্ছে।
ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তুরস্ক ও ইরানের মতো মুসলিম সংখাগরিষ্ঠ দেশের পক্ষ থেকে গাজায় নৃশংসতা ও আল আকসা মসজিদে উত্তেজনা উসকে দেওয়ার জন্য ইজরাইলকে সরাসরি দায়ী করছে। আর দৃশ্যত আপেক্ষিক নীরবতা পালন করেছে সেই মুসলিম দেশগুলো, যারা গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসনের আমলে ইজরাইলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘তথাকথিত’ আব্রাহাম চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। তারা এখন যেন সেই চুক্তির পবিত্রতা রক্ষা করার জন্যে তসবি নিয়ে ধ্যানে বসেছেন। এরা এখন ইজরাইলের সঙ্গে স্বাভাবিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষায় খুব বেশি আগ্রহী। শুধু তাই নয়, এই দেশগুলোর ক্ষমতাসীনেরা নিজ দেশের জনগণের মতের বিপক্ষেও অবস্থান নিয়েছে।
অন্যদিকে ইজরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ঘেষণা না দিলেও গাজায় ইজরাইলি বর্ববতার বিরুদ্ধে সৌদি আরবও একবারে নিশ্চুপ। তাদের এই মনোভাবের পেছনে রয়েছে ইরান, তুরস্ক ও মুসলিম ব্রাদার হুড আন্দোলনকে মোকাবিলার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা।
এদিকে ইজরাইলের বোমাবর্ষণে গাজায় অভ্যন্তরীণভাবে ৩৮ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ পর্যন্ত দুই শতাধিক ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতের সংখ্যা ১ হাজার ৩০০-এর বেশি।
আমরা ইজরাইলি বর্বরতার তীব্র নিন্দা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি।