ফিফার অর্থায়নে বাফুফের একাডেমি ফুটবল ‘উৎসব’

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

দেশের অন্যতম জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। অনেক শিশু-কিশোর ফুটবলার হওয়ার স্বপ্নে মত্ত থাকে। ফুটবলপ্রেমী অনেকেই গড়ে তোলেন একাডেমি। দেশব্যাপী ব্যক্তি উদ্যোগে প্রায় দুইশ’ একাডেমি বাফুফের তালিকাভুক্ত। সেই একাডেমিগুলো নিয়ে প্রথমবারের মতো (অনূর্ধ্ব-১৫) একটি টুর্নামেন্ট আয়োজন করছে দেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এই টুর্নামেন্টের অর্থায়ন করছে ফিফা। গতকাল (বৃহস্পতিবার) বাফুফে ভবনে বাফুফে একাডেমি চ্যাম্পিয়নশিপের ড্র ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান ও বাফুফে সহ-সভাপতি আতাউর রহমান ভূইয়া মানিক এই টুর্নামেন্ট সম্পর্কে বলেন, ‘আমাদের তালিকাভুক্ত একাডেমিদের এন্ট্রি আহ্বান করেছিলাম। এর মধ্যে ১৭০ টি একাডেমি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। ২৪ জোনে (অঞ্চলে) এই খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হবে। এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে আমরা মেধাবী ফুটবলারদের এলিট একাডেমীতেও জায়গা দিতে পারব।’
১৯ ডিসেম্বর কমলাপুর স্টেডিয়ামে এই একাডেমি টুর্নামেন্ট শুরু হবে। ১৯ জেলার ২৪টি স্থানে ১৭০ টি দল গ্রুপ ভিত্তিকভাবে এই টুর্নামেন্ট খেলবে। ২৪ জোনের ২৪ চ্যাম্পিয়ন একাডেমি নক আউট পর্ব খেলবে। সেই নকআউটে বিজয়ী ১২ একাডেমি চূড়ান্ত পর্বে উঠবে। চূড়ান্ত পর্ব একটি ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। ১২ দল দুই গ্রুপে বিভক্ত হবে। প্রতি দল চূড়ান্ত পর্বে পাঁচ ম্যাচ করে খেলবে। দুই গ্রুপের শীর্ষ দুই দল করে সেমিফাইনালে খেলবে। এই ফরম্যাটে টুর্নামেন্ট সম্পন্ন করতে বাফুফের অনেক অর্থ ব্যয় হবে। এই ট্যালেন্ট ডেভলপমেন্ট স্কিমের আওতায় বাফুফে ফিফা থেকে বিশেষ বরাদ্দ পেয়েছে, ‘ফিফা আমাদের এই ট্যালেন্ট ডেভলপমেন্ট খাতে বিশেষভাবে কোটি টাকার মতো বরাদ্দ দিচ্ছে। আশা করছি ফিফার এই অর্থ দিয়ে এই প্রতিযোগিতা ভালোমতো সম্পন্ন করতে পারব।’-বলেন সহ-সভাপতি মানিক। বাফুফে ১৭০ একামেডিীক অংশগ্রহণ ফি হিসেবে ১০ হাজার টাকা প্রদান করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে উত্তীর্ণ একাডেমি পাবে ৫০ হাজার করে। ফিফার সাহায্য এই বছরের জন্য হলেও বাফুফে আশাবাদী আয়োজনের মাধ্যমে সফলতা বজায় রেখে আগামীতেও ধারাবাহিকতা রক্ষার।
একাডেমি কাপে একটি ব্যতিক্রমী নিয়মও থাকছে। কোনো একাডেমি গ্রুপ বা নক আউটে বাদ পড়লে ঐ একাডেমির ভালো ফুটবলারের সুযোগ থাকছে অন্য দলের হয়ে খেলার। প্রতিযোগিতামূলক খেলায় এই নিয়ম প্রশ্নবিদ্ধ হলেও ট্যালেন্ট সন্ধানে এটি উপযোগী বলে জানান ডেভলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান, ‘২৪ জোনে আমাদের ২৪ জন কোচ থাকবে। তারা প্রতি দলে মেধাবী খেলোয়াড় চিহ্নিত করবে। ভালো খেলোয়াড়ের দল হেরে গেলে অন্য দল যদি চায় সেক্ষেত্রে সেই খেলোয়াড়ের খেলার সুযোগ থাকছে।’
মূলত ট্যালেন্ট হান্ট হলেও টুর্নামেন্টে সবার লক্ষ্য থাকে জয়। এজন্য বয়স চুরির আশ্রয় নেয় অনেকে। বয়স চুরি রোধে ফেডারেশন জন্ম নিবন্ধনকেই ভিত্তি হিসেবে ধরছে। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নির্বাচনী ব্যস্ততার মধ্যে এই টুর্নামেন্টকে আরেকটি উৎসব হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন কমিটির চেয়ারম্যান, ‘নির্বাচনের দিন তো আর খেলা হবে না। নির্বাচনের আগে এটাও একটা উৎসব। অনেক জেলা ফুটবল নিয়ে মেতে উঠবে। এই পরিস্থিতিতে টুর্নামেন্টে আন্তরিক অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন, জেলা প্রশাসনকে ফেডারেশনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ।’