পেকুয়ায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

বালিমহাল নিয়ে দ্বন্দ্ব

গৃহবধূর হাত কর্তন

নিজস্ব প্রতিনিধি, পেকুয়া :
কক্সবাজারের পেকুয়ায় অবৈধ বালি মহালের আধিপত্য নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় মিন্টু মিয়া (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। মিন্টু মিয়া বাঁশখালী উপজেলার পুঁইছড়ি ইউনিয়নের মৃত আহমদ মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার টইটং ইউনিয়নের জুমপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
একই ঘটনায় হাদিসা বেগম (৩৪) নামের এক গৃহবধূকে কুপিয়ে বাম হাতের কব্জি শরির থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। হাদিসা বেগম টইটং জুমপাড়া গ্রামের জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে পেকুয়া থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করেছে। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানায়, জুম পাড়ায় একটি অবৈধ বালিমহাল নিয়ে একই এলাকার অলি আহমদ প্রকাশ পেঠানের ছেলে জয়নাল আবেদীন ও বাঁশখালীর মিন্টু মিয়ার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বালি মজুদ রাখার জমি নিয়ে মুলত দু’পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব। জয়নাল আবেদীন বনবিভাগের রিজার্ভ কিছু জমি মিন্টু মিয়াদের কাছ থেকে ক্রয় করে। এসময় কিছু টাকা বকেয়া থেকে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মিন্টু, জসিম, নাছিরসহ বাঁশখালীর এলাকার ৮/১০ জন যুবক ধারালো অস্ত্র নিয়ে জয়নালের বাড়িতে হানা দেয়। এ সময় তারা জয়নালকে টেনে হিঁচড়ে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে আসে। জুমপাড়া জামে মসজিদ সংলগ্ন কালভার্টের উপর দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় মহিলাসহ তিনজন মারাত্মক জখম হয়। তাদের মধ্যে মিন্টু নামের একজন নিহত হয়।
জয়নাল আবেদীনের মা হানু আরা বেগম জানান, দুপুরে খেয়ে আমরা বিশ্রাম নিই। বিকেলে মিন্টুসহ ৮/১০ জন সন্ত্রাসী বাড়িতে এসে জয়নালকে ডেকে দরজা খুলতে বলে। তারা আমার ছেলের কাছ থেকে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমার ছেলেকে টেনে হিচড়ে করে একটি কালভার্টের কাছে নিয়ে যায়। এ সময় পুত্রবধূ হাদিসা বেগমসহ আমরা তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করি। তারা ধারালো কিরিচ দিয়ে কুপিয়ে হাদিসার বাম হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। আমার ছেলে হাবিব উল্লাহকেও কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। মিন্টু মিয়ার ছোট ভাই হেফাজ উদ্দিন জানান, আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
টইটং ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান শাহাব উদ্দিন জানায়, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি কালভার্টের উপরে একজনের লাশ পড়ে আছে। বালিমহালের বিরোধ নিয়ে খুনাখুনি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, মিন্টু একজন সন্ত্রাসী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি, বন মামলাসহ ডজনখানেক মামলা রয়েছে। এসব মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
পেকুয়া থানার ওসি (তদন্ত) কানন সরকার জানায়, মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।