পৃথিবীর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জাতিসংঘের রিপোর্টে ভয়াবহ পূর্বাভাস

সুপ্রভাত ডেস্ক »

বৈশ্বিক উষ্ণায়নের মাত্রা এখনই না কমাতে পারলে অদূর ভবিষ্যতে মারাত্মক পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করে দিলো জাতিসংঘের জলবায়ু সংগঠন৷

সোমবার প্রকাশিত আইপিসিসি রিপোর্টে এমন ভয়াবহ পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে৷ হিসেব অনুযায়ী দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে পৃথিবীতে আরও খরা, বন্যা ও তাপ প্রবাহের মতো বিপর্যয় অনেক বেড়ে যাবে৷ রিপোর্টে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে, যে এই মুহূর্তেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হাতেনাতে টের পাওয়া যাচ্ছে৷ ২০ বছর আগের তুলনায় মানুষ ও প্রকৃতিকে আরও চরম আবহাওয়ার মোকাবিলা করতে হচ্ছে৷ তাপমাত্রায় পরিবর্তন বা প্রবল বৃষ্টিপাতের মতো ঘটনা আরও ঘনঘন দেখা যাচ্ছে৷ প্রাণিজগত, কৃষিক্ষেত্র ও মানুষের মধ্যে আরও ঘনঘন মারাত্মর রোগ ছড়িয়ে পড়ছে৷ এমন প্রবণতায় রাশ টানতে হলে স্বাস্থ্যকর ইকোসিস্টেম ও সমৃদ্ধ জীববৈচিত্র্য নিশ্চিত করতে হবে বলে জাতিসংঘের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ এমনটা সম্ভব হলে মানুষের কল্যাণ ও উপার্জনের পথও খোলা থাকবে৷

জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এক টুইট বার্তায় লিখেছেন, যে তিনি জলবায়ু সংক্রান্ত অনেক রিপোর্ট দেখেছেন৷ কিন্তু আইপিসি-র সাম্প্রতিকতম রিপোর্ট যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার ক্ষেত্রে নেতৃত্বের ব্যর্থতা তুলে ধরেছে, এমন ভয়াবহ চিত্র এর আগে কখনো তিনি দেখেন নি৷ তার মতে, বিশ্বের সর্বত্র তারই মতো মানুষ উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ৷ গুতেরেস জলবায়ু সংরক্ষণের জন্য চাপ বাড়াতে সেই ক্ষোভ উগরে দেবার ডাক দিয়েছেন৷ হাতে গোনা কয়েকটি দেশ ও বড় কোম্পানি যেভাবে বিশ্বের বাকি অংশের অধিকার খর্ব করছে, সে বিষয়েও চরম বিরক্তি প্রকাশ করেন জাতিসংঘের মহাসচিব৷ সরকারগুলি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে, যা অপরাধের সমান বলে মনে করেন গুতেরেস৷ তবে বিশ্বের সেরা বিজ্ঞানীরা পৃথিবী যতা সম্ভব বাঁচানোর কর্মসূচি বাতলে দিচ্ছেন৷ এবার দ্রুত ও বড় আকারে সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার উপর জোর দেন তিনি৷

আইপিসিসি-র যুগ্ম প্রধান হান্স-অটো প্যোর্টনার বলেন, পৃথিবীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এক দশক শুরু হচ্ছে৷ তবে কার্যকর পদক্ষেপ নেবার জন্য হাতে সময় খুব কম৷ তার মতে, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের মাত্রা আরও অনেক কমানো সবচেয়ে জরুরি৷ সেইসঙ্গে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে হতাহতের সংখ্যা কমাতেও উদ্যোগ নিতে হবে বলে প্যোর্টনার মনে করেন৷

আইপিসি রিপোর্টে মানুষের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তনের উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে৷ যেমন মাংস খাওয়া অনেক কমাতে হবে, কারণ পশু পালনের জন্য প্রয়োজনীয় কৃষিজমির চাহিদার কারণে বনজঙ্গল ধ্বংস করে কার্বন নির্গমন আরও বাড়ানো হচ্ছে৷ সেইসঙ্গে ঘরবাড়ি গরম রাখা ও পরিবহণের ক্ষেত্রেও কার্বন নির্গমন কমানো প্রয়োজন বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে৷ উল্লেখ্য, আইপিসিসি-র মোট চারটি রিপোর্টের মধ্যে এটি দ্বিতীয় রিপোর্ট৷ প্রথমটি গত বছরের আগস্ট মাসে প্রকাশিত হয়েছিল৷

সূত্র : ডয়চে ভেলে