পাইকারিতে কমলেও কমেনি খুচরার দাম

খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের বস্তা নিয়ে ছুটছে শ্রমিকরা-রনী দে

পেঁয়াজ দর

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশের বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ প্রবেশের পর থেকেই পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে সব ধরনের পেঁয়াজের দাম। পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও কমেনি খুচরা পেঁয়াজের দাম। গতকাল বুধবার দেশের বৃহৎ ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জ ও বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ঘুরে এ চিত্র উঠে এসেছে।
খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারিতে কেজি প্রতি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩২ থেকে ৩৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিশর ও নেদারল্যান্ডের পেঁয়াজ ৩০ থেকে ৩২ টাকা এবং তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা দরে।
পাইকারির বিপরীতে বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার ও নগরীর বিভিন্ন মুদির দোকানে খুচরায় দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, নেদারল্যান্ড ও মিশরের পেঁয়াজ মানভেদে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা এবং তুরস্কের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।
পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমলেও খুচরায় দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী মো. আশরাফ বলেন, ‘বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে তাই পাইকারিতে কমলেও খুচরায় দাম কমছে না।’ একই বাজারের হাজী স্টোরের দোকানের কর্মচারী দুই দিন আগের পেঁয়াজ ক্রয়ের রশিদ দেখিয়ে বলেন, ‘৪৮ টাকায় কেনা দেশি পেঁয়াজ ৫৪ টাকায় বিক্রি করছি, বেশি দামে কেনা পেঁয়াজ কিভাবে কম দামে বিক্রি করবো?’
বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় বর্তমানে পেঁয়াজের দাম কেমন জানতে চাইলে খাতুনগঞ্জের জগন্নাথ ট্রেডার্সের মালিক প্রকাশ মল্লিক বলেন, বাজারে ভারতীয় পেঁয়াজ আসায় অন্যান্য পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজের যে দাম সে তুলনায় দেশিসহ অন্যান্য পেঁয়াজের দাম কম হওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা তেমন নেই। এছাড়া পেঁয়াজের দাম কমার আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা খুবই কম পেঁয়াজ কিনছেন।
উল্লেখ্য, অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজ সংকটের কারণে ভারতের কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা জারি করায় ১৪ সেপ্টেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানির বন্ধের পর থেকেই দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে ১২০ টাকা পর্যন্ত উঠে। পরে পেঁয়াজের সংকট মোকাবেলায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বেসরকারিভাবে বিনা শুল্কে বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ রপ্তানির অনুমোদন দেয়। এরপর থেকেই বিভিন্ন দেশের পেঁয়াজ বাজারে আসায় পেঁয়াজের দাম ক্রেতাদের হাতের নাগালে আসে। সর্বশেষ বিগত বছরের ২৮ শে ডিসেম্বর ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলে ২ জানুয়ারি থেকে দিনাজপুরের হিলি স্থল বন্দর দিয়ে ভারতীয় পেঁয়াজ আসতে শুরু করে। ভারতীয় পেঁয়াজ আসার খবরের পর থেকে দেশের সব ধরনের পেঁয়াজের দাম কমতে শুরু করে।