পবিত্র ঈদের দিনেও বিষোদগারের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

সুপ্রভাত ডেস্ক :

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘পবিত্র ঈদের দিনেও বিষোদগারের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি বিএনপি।’
তিনি আজ দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি- (ডিআরইউ)-এর রজতজয়ন্তী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের এই বৈশ্বিক মহামারি শুধু বাংলাদেশে নয়, এর কারণে উন্নত দেশগুলো আজ নাস্তানাবুদ পরিস্থিতির শিকার। সেখানে মৃত্যু ঠেকানো যাচ্ছে না। বেলজিয়ামের মতো দেশে মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ। ব্রিটেনে ১৪, আমেরিকায় ৬, ভারতে ৩ দশমিক ২, পাকিস্তনে ২ এর বেশি আর বাংলাদেশে এ হার ১ দশমিক ৪ শতাংশ। স্বাস্থ্যব্যবস্থা যদি খুবই খারাপ হতো, তাহলে মৃত্যুর হার অন্যান্য দেশের মতো আরো বেশিই হতো।’

‘মহামারি মোকাবিলায় ঐক্য দরকার’ উল্লেখ করে ড. হছান মাহমুদ বলেন, ‘এ মহামারির জন্য বিশ্বের কোনো দেশই প্রস্তুত ছিলোনা। সব দেশে মহামারি মোকাবিলায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা চলছে। অন্য দেশে বিরোধী দল পরামর্শ দিচ্ছে, কিন্তু অন্ধের মতো সমালোচনা করছে না।’
‘কিন্তু দু:খের বিষয়, ঈদের দিনেও বিএনপি সমালোচনা আর বিদ্বেষের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে পারেনি’, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।

ড. হাছান বলেন, “’মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ঈদের নামাজ পড়ে তাদের ভাষায় ‘জিয়াউর রহমানের মাজারে’ দোয়া করে সরকারের প্রতি বিষোদগার করেছেন। আমি মির্জা ফখরুল সাহেবসহ যারা এধরণের সমালোচনা করছেন, তাদেরকে বলবো- এখন বিষোদগারের সময় নয়, আসুন আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করি।”

এসময় ২৫ বছরপূর্তি উপলক্ষে ডিআরইউ’র সকল সদস্যকে অভিনন্দন জানিয়ে করোনা পরিস্থিতিতে সাংবাদিকদের জন্য পরীক্ষা বুথ স্থাপন, সুরক্ষাসামগ্রী সংগ্রহ ও বিতরণসহ নানা পদক্ষেপের প্রশংসা ও সংগঠনটির মঙ্গল কামনা করেন মন্ত্রী।

‘আমি সবসময় সাংবাদিকদের সাথে ছিলাম, আছি এবং থাকবো’ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মানানীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত ১১ বছরে দেশের গণমাধ্যমের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক মাধ্যম তিনগুণ হবার পাশাপাশি কয়েক হাজার অনলাইন সংবাদপোর্টাল হয়েছে, যেগুলোর নিবন্ধন বিষয়ে দ্রুত কাজ চলছে।’
সহসাই অনলাইন সংবাদ পোর্টালের ‘রেজিষ্ট্রেশন’ দেয়ার কথা জানিয়ে সেইসাথে মন্ত্রী বলেন, ‘যেসমস্ত অনলাইন বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করেনা, হীন উদ্দেশ্যে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায় ও নানা অনৈতিক কাজে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যেসমস্ত অনলাইন বস্তনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করে আসছে, গণমাধ্যম জগতে সত্যিকার ভূমিকা রাখছে, তারা রেজিষ্ট্রেশন পাবে।’
‘সমাজ ও রাষ্ট্রে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের ভূমিকা অনেক বড় এবং একারণে ভুয়া সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে সাংবাদিকদেরই ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা নেয়া প্রয়োজন’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন অনুসন্ধানী প্রতিবেদন বহুসময় আমাদের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। এমন বেশকিছু প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে সমস্যা প্রতিকারে নিজের উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।

ডিআরইউ সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরীরর পরিচালনায় সহসভাপতি নজরুল কবীরসহ অন্যান্যের মধ্যে সভায় বক্তব্য রাখেন ডিআরইউ’র প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা ফিরোজ, প্রাক্তন সভাপতি ইলিয়াস হোসেন, প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, রাজু আহমেদ ও মুরসালিন নোমানী, দৈনিক বর্তমানের প্রধান প্রতিবেদক মোতাহার হোসেনসহ সীমিত সংখ্যক গণমাধ্যম প্রতিনিধি সামাজিক দূরত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন।