পটিয়ায় সড়কের পাশে বর্জ্যরে ভাগাড়

দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ যাত্রীরা

বিকাশ চৌধুরী, পটিয়া <
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়কের পাশে পটিয়ায় দুর্গন্ধযুক্ত বিশাল বর্জ্যরে ভাগাড়। ফলে চারদিকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পটিয়া পৌরসভার পরিকল্পনার অভাব ও অব্যবস্থাপনার কারণে দীর্ঘদিন ধরে পটিয়া বিসিক শিল্প নগরীর পাশে উপজেলার গিরিজ চৌধুরী বাজার এলাকায় রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছে এসব বর্জ্য। আর বর্জ্য থেকে অস্বস্তিকর এক দুর্গন্ধ। সড়ক পথ ছাড়াও উত্তর পাশে রয়েছে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথ। প্রতিদিন এ দুটি সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ নাক চেপে চলাচল করলেও পৌর কর্তৃপক্ষ বর্জ্য সরিয়ে নিতে কোন উদ্যোগ নেয়নি। বরং পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য সংগ্রহ করে রাস্তার পাশে ফেলা হচ্ছে। যার পাশে ঘর-বাড়ি ছাড়াও পটিয়া বিসিক শিল্প নগরী, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা রয়েছে। দুর্গন্ধের কারণে মানুষের মাঝে রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ছে।
অভিযোগ ওঠেছে, প্রথম শ্রেণির পটিয়া পৌরসভার বর্জ্য সড়ক ও রেলপথের মাঝামাঝিতে ফেলে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার সড়ক পথে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হজার পর্যটক কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম বান্দরবানসহ বিভিন্ন এলাকায় যাতায়ত করেন।
জানা গেছে, ১৯৯০ সালে পটিয়া পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে বর্জ্য এক সময় যত্রতত্র রাখা হতো। পৌরসভার সাবেক মেয়র আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বর্জ্য অপসারণ প্রকল্পের মাধ্যমে তা সরিয়ে গিরিশ চৌধুরী এলাকায় নিয়ে যায়। বিভিন্ন ওয়ার্ডের বর্জ্য সড়কের পাশে ফেলার কারণে বর্তমানে তা স্তূপে পরিণত হয়েছে। পর্যটক থেকে শুরু করে সাধারণ যাত্রীরা নিয়মিত নাক চেপে চলাচলা করেন। তাছাড়া পটিয়া বিসিক শিল্প নগরীতে গার্মেন্টস শিল্পসহ বিভিন্ন কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক দুর্গন্ধ সহ্য করে প্রতিদিন কাজ করছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়কের পাশে প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলে রাখা হয়েছে। মহাসড়কের উত্তর পাশে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ড আর দক্ষিণ পাশে কচুয়াই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের অবস্থান। দুর্গন্ধে সড়কটির পাশে হেঁটে যাওয়াই অনেক কষ্টকর। এমনকি সকালে ময়লার ডিপোতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধোঁয়ার কারণে দিনের বেলায় অনেকটা অন্ধকারাচ্ছন্ন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এ কারণে গাড়িচালক ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালান। যে কোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
কচুয়ায় ইউপি চেয়ারম্যান এসএম ইনজামুল হক জসিম জানিয়েছেন, তার ইউনিয়নের মহাসড়কের পাশে পৌর কর্তৃপক্ষ প্রতিদিন বর্জ্য ফেলার কারণে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। পৌর কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে বর্জ্য সরিয়ে নিতে বলেছেন। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
ফারইস্ট ইসলামি লাইফ ইন্সুরেন্সের পটিয়ার ইনর্চাজ মাহমুদ উল্লাহ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সড়ক ও রেল পথের পাশে বর্জ্য ফেলে রাখার কারণে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন হচ্ছে। সড়কের পাশ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত বর্জ্য সরিয়ে না নিলে মানুষের মাঝে রোগবালাই সৃষ্টি হতে পারে।
পটিয়া পৌরসভার মেয়র আইয়ুব বাবুল জানিয়েছেন, তিনি নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকেই মহাসড়কের পাশে বর্জ্য রাখা হয়। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন বর্জ্য সংগ্রহ করে গিরিচৌধুরী বাজার এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়। জমি অধিগ্রহণ করে নির্দিষ্ট জায়গায় বর্জ্য অপসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়ন করতে সময় লাগবে।