নাফনদীর ওপারে গোলাগুলি, এপারে চলাচল নিষিদ্ধ

নিখোঁজ জেলের মরদেহ উদ্ধার

নিজস্ব প্রতিনিধি, টেকনাফ »

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সীমান্তের ওপারে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে দু’পক্ষের চলমান গোলাগুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে এপারের সীমান্তবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য বিজিবি সদস্যরা নাফনদী সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় জনগণের চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। ওপারে সংঘর্ষে ভারী গোলার বিস্ফোরণে নির্ঘুম রাত কাটছে সীমান্ত এলাকার লোকজনের।
এদিকে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তাজনিত কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল থেকে পর্যটন স্পটখ্যাত টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে জনগণের চলাচল বন্ধের পাশাপাশি পর্যটক ভ্রমণও বন্ধ করে দেয়া হয়।
নাফনদীর উপর নির্মিত শাহপরীর দ্বীপ জেটিতে মানুষের চলাচল বন্ধ রাখার সত্যতা নিশ্চিত করেন টেকনাফ ২ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ। তিনি জানান, টেকনাফ উপজেলার নাফনদী সংলগ্ন সীমান্তের বিভিন্ন এলাকায় মিয়ানমারে সংঘটিত গোলাগুলির বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। তবে এ সমস্ত গোলাগুলি চলছে মিয়ানমারের অনেকে ভেতরে। পাশাপাশি অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে আমাদের সৈনিকরা কঠোর অবস্থান নিয়ে সীমান্ত এলাকাগুলো পাহারা দিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল পর্যন্ত অত্র উপজেলা সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপসহ সীমান্তের বেশকয়েকটি এলাকা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকালে ১৮০ রোহিঙ্গাকে স্বদেশে পুশব্যাক করতে সক্ষম হয়েছি। সীমান্তের সার্বিক নিরাপত্তা অক্ষুণ্ন রাখতে, উক্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজনকে জরুরি কাজ ছাড়া সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় ঘুরাঘুরি না করার জন্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শাহপরীর দ্বীপ জেটি ঘাটের টোল আদায়কারী ছিদ্দিক আহমদ বলেন, মিয়ানমার ঘেঁষা নাফনদীর বুকে জেটি ঘাটে ভ্রমণে প্রতিনিয়ত মানুষের আনাগোনা ছিল। কিন্তু সীমান্তের ওপারে গোলাগুলি বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তার কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে জেটিতে লোকজনের যাতায়াত বন্ধ করে দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ২বিজিবি।
উল্লেখ্য, টেকনাফ উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত সু-রক্ষার পাশাপাশি আগত পর্যটক ও সীমান্তবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা বজায় রাখতে, গত কয়েকদিন আগে টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌ-পথে পর্যটকবাহী জাহাজ বন্ধ করে দিয়েছিল সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
নিখোঁজ জেলের মরদেহ উদ্ধার
উখিয়ায় মোস্তাফিজুর রহমান (৪০) নামে নিখোঁজ এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সোমবার সকালে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন রহমতের বিল এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, এলাকায় একটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশে খবর দেন। পরে পরিবারের লোকজন গিয়ে পরিচয় শনাক্ত করেন। পরে মরদেহটি আঞ্জুমানপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরিবারের দাবি, মরদেহের চোখে আঘাতের চিহ্ন আছে। ধারণা করা হচ্ছে, একদিন আগে তাকে হত্যা করে সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় মরদেহ ফেলে রেখে যাওয়া হয়েছে।
২ ফেব্রুয়ারি রহমতের বিল সীমান্ত এলাকায় মাছ ধরতে গিয়েছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান। এর পর থেকে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসেন জানান, সীমান্ত এলাকা থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।