নগরী পরিচ্ছন্ন রাখুন : ২৩ জুলাই থেকে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন

পবিত্র ঈদুল আজহার আর মাত্র দুইদিন বাকি। মানুষ ইতিমধ্যেই নগর ছেড়ে গ্রামের দিকে ছুটে চলেছে। ঈদের সময় লকডাউন শিথিল করলেও জনসমাগমের ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে, তদুপরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তাগিদও দেয়া হয়েছে প্রশাসন থেকে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না, শপিংমল দোকানপাটে যথারীতি ভিড়। অনেকের মুখে মাস্ক নেই। মানুষ যেভাবে দল বেঁধে, গাদাগাদি করে ট্রেন, বাস ও অন্যান্য যানবাহনে শহর ছেড়ে যাচ্ছে তাতে করোনা সংক্রমণ আরো তীব্র হওযার আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যবিদরা। জনগণকে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবশ্যই সচেষ্ট ও সতর্ক থাকতে হবে।
কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের পরিচ্ছন্ন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। তিনি পরিচ্ছন্নতা অভিযান তদারকিতে কাউন্সিলরদের মাঠে থাকার কথা বলেছেন চসিকের এক মতবিনিময় সভায়।
সরকার থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেবল বর্জ্য অপসারণ নয়, রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, অলি-গলিতে পানি ছিটিয়ে পরিষ্কার করা ও জীবাণুনাশক স্প্রে ছিটানো জরুরি।
করোনার পরিস্থিতিতে দায়সারা কর্তব্য পালন নয়, বিশেষ দায়িত্ব নিয়ে নগরীর অধিবাসীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও নির্মল পরিবেশ অক্ষুণœ রাখতে সকল ব্যবস্থা থাকা চাই। অতীতে দেখা গেছে পশুর চামড়া বিক্রির জন্য রাস্তায়, যেখানে সেখানে রাখা হয়, এটি স্বাস্থ্যহানিকর, এ জন্য মেয়র জবাইকৃত পশুর চামড়া মহল্লার একটি নির্দিষ্ট স্থানে রাখার নির্দেশ দেন।
ঈদুল আজহার সময় নগরীর অনেক মানুষ বাসা বাড়িতে তালা দিয়ে গ্রামের বাড়িতে গেছেন। নগরের অধিবাসীদের জানমালের নিরাপত্তা ও যে কোন ধরণের অপরাধ দমনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীকে তৎপর থাকতে হবে, বাড়ির মালিকদেরও এ সময় যথাযথ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
ঈদের পরপরই ২৩ জুলাই থেকে ১৪ দিনের কঠোর লকডাউন শুরু হচ্ছে। এ সময় সরকারি বেসরকারি অফিস, সকল কলকারখানা, গণপরিবহন, জনসমাগম বন্ধ থাকবে। এই ১৪ দিন আমাদের জন্য এক কঠোর পরীক্ষা, মানুষ যদি এই সময় গ্রামে শহরে অহেতুক ঘোরাঘুরি, আড্ডায় সমাগমে লিপ্ত হয়, মাস্ক পরিধান না করে এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলে তবে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ আমরা এড়াতে পারবো না। আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় সীমাবদ্ধতা আরো প্রকট হবে। লকডাউনের সময় গরিব ও নি¤œআয়ের লোকদের জন্য খাদ্য সহায়তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। সরকার ইতিমধ্যে ৩ হাজার ২ শ কোটি টাকার সাহায্য প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বেসরকারি উদ্যোগেও ত্রাণ তৎপরতাও চলছে তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন শহরেÑগ্রামে নি¤œআয়ের লোকদের চিহ্নিত করে তাদের ‘আধার কার্ড’ বা বিশেষ আইডেনটিটি কার্ড প্রদান করা। তাহলে সহায়তার কাজটি সঠিক ও সহজ হবে। দ্রুত তথ্যভা-ার গড়ে তুলতে পারলে সরকারি সাহায্যের সদ্ব্যবহার হবে, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি কমবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিশ্বব্যাপী করোনার তৃতীয় ঢেউ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে। সকলের জন্য টিকা নিশ্চিত করা ছাড়া এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না। আমাদের গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে, এটিতে যেন ছেদ না পড়ে সে জন্য টিকা পেতে সকল প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে যেমন, তেমনি দেশেই টিকা উৎপাদনে দ্রুত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সমন্বয় করতে হবে।