দশ বছরে উল্লেখযোগ্য সাফল্য আসেনি

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরূল ইমাম

উপযুক্ত প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ছাড়া আমলানির্ভর পরিকল্পনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে ব্লু ইকোনমিতে প্রকৃত সুফল আসবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক »

বিশিষ্ট জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর ড. বদরুল ইমাম বলেছেন, সমুদ্র সীমা নির্ধারণের প্রায় ১০ বছর পেরিয়ে গেলেও জ্বালানি খাতে আমাদের উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য আসেনি। উপযুক্ত প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ছাড়া আমলানির্ভর পরিকল্পনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে এক্ষেত্রে প্রকৃত সুফল আসবে না। কারণ এতে প্রকৃত কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ সম্ভব হবে না।

সমুদ্র অর্থনীতির বিকাশে জ্বালানি খাতের অগ্রগতি প্রসঙ্গে সুপ্রভাত বাংলাদেশের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

প্রসঙ্গক্রমে বলেন, সমুদ্র সীমানা নির্ধারণের পরে আমাদের অগ্রগতি না হলেও ভারত ও মিয়ানমার বেশ কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। মিয়ানমার ২০১২ সালের পরে অনেক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে। সর্বশেষ করেছে ২০২০ সালে। তার আগে ২০১৯ সালে একটা করেছে। মিয়ানমারের কয়েকটি গ্যাসক্ষেত্র আমাদের সীমান্তের কাছাকাছি। একই ধরনের গ্যাসক্ষেত্রের কাঠামো আমাদের সীমানার ভেতরেও রয়েছে।

ড. বদরুল ইমাম জানান, আগামী ডিসেম্বর নাগাদ গ্যাসক্ষেত্র অনুসন্ধানের ব্যাপারে দরপত্র আহবানের কথা শোনা গিয়েছিলো। এখন জানা গেছে, আগামী সেপ্টেম্বর মাসে এ দরপত্র আহবান করা হতে পারে। সেই দরপত্রগুলো যাচাই-বাছাই এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর কাজে নামতে আরো বছর দুয়েক সময় লাগতে পারে।

আমাদের সমুদ্র সীমানায় গ্যাস প্রাপ্তির সম্ভাব্যতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০০১ সালে ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে এবং পেট্রোবাংলার যৌথ একটা মূল্যায়ন হয়েছিল। তারা সর্বজনীন পদ্ধতিতে মূল্যায়নটা করেছিল। এই মূল্যায়নে তারা সম্ভাব্যতা যাচাই করে বলেছে, এখানে আরো ৩২ টিসিএফ অনাবিষ্কৃত গ্যাস পাওয়ার ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে। তারা এটাও বলেছে, ৮.৫ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে। বাংলাদেশ বছরে এক টিসিএফ গ্যাস ব্যবহার করে। এখন যদি আমরা সর্বোচ্চ সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে ৯০ শতাংশের দিকেও যাই, তাহলে হাতে আট বছরের গ্যাস থাকার কথা। এরপর নরওয়ের কোম্পানি ‘পেট্রোলিয়াম ডাইরেকটোরেট’ বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতায় আরেকটা সমীক্ষা চালায়। তারা বলেছিল, ৩২ নয়, ৪২ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা আছে। ২০১৮ সালে হওয়া আরেকটি সমীক্ষায় ড্যানিশ একটি কোম্পানি বলেছিল, ৩৪ টিসিএফ গ্যাস পাওয়ার ৯০ শতাংশ সম্ভাবনা রয়েছে।