তৃতীয় ঢেউয়ে বিপদ বেশি প্রবীণদের

সুপ্রভাত ডেস্ক »

অমিক্রনের সংক্রমণে ঝুঁকি বেশি বয়স্ক এবং অন্যান্য রোগে ভোগা মানুষজনের। চিকিৎসকেরা বলছেন, অমিক্রনের প্রভাব মৃদু হলেও তা উদ্বেগ তৈরি করছে কোমর্বিডিটি থাকা রোগী এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে। তাই তাঁদের উপরে বিশেষ নজর রাখা প্রয়োজন।

অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে তৃতীয় ঢেউয়ে কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি বিষয় স্পষ্ট যে, তৃতীয় ঢেউয়ে কমবয়সিদের চেয়ে বয়স্ক ও কোমর্বিডিটিতে ভোগা রোগীদের মৃত্যুর সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে বেশি। তাই এমন লোকজনের উপরে বিশেষ নজরে রাখতে হবে।

দেশে এখন সংক্রমিতের ৭০-৮০ শতাংশই অমিক্রনে আক্রান্ত। কিছু রয়েছে ডেল্টা এবং অন্য প্রজাতি। বক্ষরোগ চিকিৎসকরা বলছেন, দ্বিতীয় ঢেউয়ে ডেল্টা সরাসরি ফুসফুসে আক্রমণ করছিল। ফলে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা আচমকা নেমে যাচ্ছিল। এতে দ্রুত অবস্থা সঙ্কটজনক হয়ে মৃত্যু ঘটছিল। কিন্তু অমিক্রনে ফুসফুসে সংক্রমণের হার খুবই কম। বরং, সেটি আপার রেসপিরেটরি ট্র্যাকে আক্রমণ করছে। আর শরীরে থাকা পুরনো রোগ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে রোগী সঙ্কটজনক হচ্ছেন। হার্টের ক্ষেত্রে কার্ডিয়োভাস্কুলার সমস্যা, স্টেন্ট বসানো, বাইপাস হয়েছে এবং পাম্পিং ক্ষমতা কম, ফুসফুসের ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিন সিওপিডি এবং হাঁপানি রয়েছে, কিডনির অসুখের মধ্যে ক্রিয়েটিনিন বেশি, প্রস্রাবের পরিমাণ কম— এমন রোগীরা করোনায় আক্রান্ত হয়ে দ্রুত সঙ্কটজনক হচ্ছেন বলেই পর্যবেক্ষণ চিকিৎসকদের। এ ছাড়াও

অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, সুগার এবং স্থূলতা বিপদ ডেকে আনছে অমিক্রন আক্রান্তদের।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা কোমর্বিডিটিতে আক্রান্ত, করোনাতেও তাদের অবস্থা গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা বেশি। কিন্তু অনেকাংশেই সেটা আটকানো সম্ভব। বাড়িতে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে, যথাযথ ভাবে কোভিড-বিধি মানতেই হবে। পাশাপাশি, বয়স্ক মানুষটি যে রোগে আক্রান্ত, সেটি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনায় খামতি রাখা যাবে না। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পরে এমন রোগীকে দূরে ঠেলে দিলে হবে না। বরং তাঁর অন্য রোগের চিকিৎসায় যাতে গাফিলতি না হয়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে।

হার্টের পুরনো অসুখ আছে, এমন বহু রোগী কোভিডের সঙ্গে হার্ট ফেলিয়োর নিয়ে আসছেন। যে কারণে ফুসফুসের আস্তরণের উপরে পানি জমে যাচ্ছে। অমিক্রন যতই মৃদু হোক, সংক্রমণের পরে সেটা যে ধাক্কা দিচ্ছে, পুরনো রোগ এবং বয়সের কারণে শরীর সেই ধাক্কা নিতে পারছে না।

বয়স্ক ও কোমর্বিডিটিতে আক্রান্তদের বুস্টার ডোজ় নিতে গড়িমসি করা চলবে না। সংক্রমিত হবেন না, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না। কিন্তু প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে সঙ্কটজনক হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমবে।