তাপপ্রবাহ ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ জনজীবন

প্রচ- গরমে বাড়তি চাহিদার মধ্যে, গ্যাস ও কয়লা সংকটের কারণে, বাংলাদেশের বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন কমে গেছে। ফলে, বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে।
চলছে গ্রীষ্মের তাপপ্রবাহ। সাথে ঘন ঘন লোডশেডিং অতিষ্ঠ করে তুলছে জনজীবন। চরম দুর্ভোগে ফেলে দিয়েছে সাধারণ জনগণকে। তীব্র গ্যাস সংকটের পাশাপাশি বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ফলে দেশের শিল্প, কল-কারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্যও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে দৈনিক ১৫,৫০০ থেকে ১৬,০০০ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ২৪,১৪৩ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু দেশে উৎপাদন হচ্ছে ১৪,০০০ থেকে ১৪,৫০০ মেগাওয়াটের মতো। ফলে চাহিদার তুলনায় দৈনিক ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ১,৫০০ থেকে ২,০০০ মেগাওয়াট।
লোডশেডিং এবং গ্যাস সরবরাহে ঘাটতির কারণে, বিভিন্ন শিল্পখাতের উৎপাদনশীলতা অর্ধেক কমে গেছে। গ্যাস-চালিত শিল্পগুলো তাদের প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সরবরাহ পাচ্ছে না; অন্যদিকে, অন্যান্য অনেক শিল্প লোডশেডিং ও ভোল্টেজের ওঠা-নামার মাঝে তাদের আংশিক উৎপাদনশীলতাও বজায় রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।
এলসি খুলতে না পারায় কয়লার অভাবে পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। প্রচ- গরমের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ঘটনায় প্রচ- দুর্ভোগে দেশবাসী। দুঃখ প্রকাশ করে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, জ্বালানি সংকটে বেশ কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ থাকায় চলমান লোডশেডিং আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকবে।
পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন সংকটকে দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতির বড় কারণ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মূলত কয়লার বিল বকেয়ার কারণে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির কাছে বিপুল অংকের বিল বকেয়া থাকায় কয়লা সরবরাহে অর্থায়ন বন্ধ করে চীনা কোম্পানি সিএমসি। এ পরিস্থিতিতে এক মাস ধরে কয়লা আমদানির বিষয়ে কোনো সুরাহা করতে পারেনি বিদ্যুৎ বিভাগ। সর্বশেষ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ১ জুন এলসি (ঋণপত্র) খুলেছে সিএমসি। নতুন এ এলসিতে চার লাখ টন কয়লা আসবে দেশে। ইন্দোনেশিয়া থেকে পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কয়লা আসতে সময় লাগবে ২০-২৫ দিনের মতো। এ কয়লা আসার পর পুনরায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি উৎপাদনে যেতে পারবে।
এত এত বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার পরও লোডশেডিং থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। লোডশেডিং বন্ধ করতে হবে। শীত আর গরমের উপর নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।