ডুবে যাওয়া সড়কে এলাকাবাসীর সুরক্ষা বলয়

দক্ষিণ পাহাড়তলীর নন্দীরহাট এলাকা

হুমাইরা তাজরিন

টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলীর বাদামতল এলাকা থেকে নন্দীরহাট পর্যন্ত সড়ক। যার কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গতকাল থেকে শুরু হওয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরীক্ষার্থীরা। কোথাও কোমর সমান, কোথাও বুক সমান পানি মাড়িয়ে যেতে হয়েছে পরীক্ষা কেন্দ্রে। জোয়ারে সৃষ্ট তীব্র স্রোতে ভেসে যাওয়া ঠেকাতে এবং চলাচলের সুবিধার্থে ডিভাইডারের দুইপাশে বাঁশ ধরে দাঁড়িয়েছেন এলাকাবাসী। সেই সঙ্গে যানবাহনকে নিরাপদে চলাচলে সাহায্যও করছেন তারা।

২৬ আগস্ট দিবাগত রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বালুখালী খাল ডুবে পানি ঢুকে পড়ে নন্দীরহাট বাদামতলসহ আশপাশের এলাকায়। সকাল হতেই সেই পানি সড়কে সৃষ্টি করে জলাবদ্ধতার। বেলা বাড়লেও বৃষ্টি না থামার কারণে সেখানে জোয়ারের সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। এর কারণে চরম বিপাকে পড়েন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীসহ কমর্মুখী মানুষ। বাধ্য হয়ে পানি মাড়িয়েই কাক ভেজা হয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় এলাকাবাসী নেমে পড়েছিলেন এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ অন্যদের সাহায্যে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাদামতলের এশিয়ান পেপার মিলের সামনে ডিভাইডারের ক্রসিংয়ে বাঁশ ধরে দুই পাশে দাঁড়িয়ে এলাকাবাসী সৃষ্টি করেছেন সুরক্ষা বলয়। এ সময় তারা পা পিছলে ভেসে যাওয়া ঠেকাতে বাঁশে হাত ধরে যাতে ঝুঁকিপূর্ণ অংশ পার হওয়া যায় সেজন্য সকলকে যাতায়াতে সহায়তা করেছেন।
স্বেচ্ছাসেবার এ কাজে অংশ নেওয়া কিশোর সুমন বলেন, ‘সকালের দিকে স্রোত বেশি ছিল। আমরা বুঝতে পেরেছি এখানে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেক বেশি। কেননা এখানে ১ মিনিটও আমরা দাঁড়িয়ে স্থির থাকতে পারছিলামনা। আজকে (গতকাল) এইচএসসি পরীক্ষা চলছে, সাথে অন্যান্য মানুষকেও এখানে বাধ্য হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে; তাই আমরা তাদের কথা ভেবে বন্ধুরা মিলে এভাবে বাঁশ ধরে দাঁড়িয়ে সবাইকে সাহায্যের চেষ্টা করছি।’

আনোয়ার নামের একজন বাসিন্দা বলেন, ‘কেউ এখানে লোকজনকে সাহায্য করতে আসেনি। আমরা এখানে দাঁড়ানোর কারণে পুলিশ শুরুতে এসে আমাদের চলে যেতে বলে, বাঁশ সরিয়ে ফেলতে বলে। কিন্তু আমরা সরাইনি।’

বেলা ১টার দিকে সিভিল পোশাকে একজনকে লাঠিসহ আসতে দেখা গেলেও ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে তিনি চলে যান। হাটহাজারীর একজন ট্রাফিক পুলিশকে ঘটনাস্থল থেকে দূরে ডিউটি করতে দেখা যায়।
বাদামতল থেকে নন্দীরহাটের এই জলাবদ্ধতা সম্পর্কে ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গাজী শফিউল আজিম বলেন, ‘হাটহাজারী ইউএনওসাহেব, থানার ওসি সাহেব, এসিল্যান্ড, আমি সেখানে ছিলাম। পানিটা উঠেছে নন্দীরহাটের উত্তর দিকে যে ব্রিজটা আছে সেখানে। ঐ জায়গাটা নিচু এবং খালটা তেমন গভীর না। এছাড়া বালুখালীতে যে খালটা আছে সেটার কোনো কোনো জায়গায় খালে দেয়াল আছে। কোনো কোনো জায়গায় দেয়াল খসে পড়েছে নির্মাণে ত্রুটি থাকার কারণে। এখন আমরা চেষ্টা করছি রোডস এন্ড হাইওয়ের সাথে মিলে এই সড়কে পানি যাতে না উঠে তা নিয়ন্ত্রণ করার।’