জনপ্রিয়তাই নৌকার প্রার্থী বাছাইয়ের মানদণ্ড : কাদের

রোববারের মধ্যে চূড়ান্ত তালিকা

সুপ্রভাত ডেস্ক »

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তাকে প্রাধ্যান্য দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

শুক্রবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল না হলেও রোববারে ৩০০ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হবে। যখন বিভাগের নাম ঘোষণা করে- তখন ভিড় বেড়ে যায়, নির্দিষ্ট বিভাগ শুনলে পীড়াপীড়ি শুরু হয়ে যায়- কীভাবে নাম বের করা যায়। সে কারণে বিভাগের নাম ঘোষণা করছি না।’

প্রার্থী বাছাইয়ে নতুন মুখ যেমন এসেছে, তেমন আগের কেউ কেউ বাদ পড়েছেন জানিয়ে কাদের বলেন, ‘উইনেবল প্রার্থী আমরা বাদ দিইনি। নির্বাচনে জিতবে- যারা ইলেক্টেবল, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।’

ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছিলেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, ‘আমরা মনোনয়নের ব্যাপারটাকে সুনির্দিষ্ট করে এখন বলছি না, কারণ এর মধ্যে আমরা যে সকল প্রার্থী দিয়েছি, সেসব মনোনয়নে ভুলত্রুটিও থাকতে পারে। সেটাও আমাদের সংশোধনের একটা সুযোগ রেখেছি। এ কারণে আমরা ঠিক করেছি- ভিন্নভাবে, জেলা বা বিভাগ ধরে প্রার্থী ঘোষণা করব না। আমরা একসঙ্গে ৩০০ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করতে চাই।’

৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল যে তফসিল ঘোষণা করেছেন, তাতে তিনি মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ রেখেছেন ৩০ নভেম্বর।

তার আগেই শনিবার প্রার্থীর তালিকা প্রকাশের কথা বলেছিল আওয়ামী লীগ। এখন ক্ষমতাসীন দলটি বলছে, তালিকা প্রকাশ হতে রোববার লেগে যেতে পারে।

২০০৮ সাল থেকেই জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করছে আওয়ামী লীগ। এবারও তারা জোটবদ্ধ হয়ে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিলেও কারা জোটে থাকবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেনি দলটি।

তবে জোটের প্রার্থী নির্বাচনে ‘জনপ্রিয়তা’কেই পাল্লায় মাপার কথা বলছেন ওবায়দুল কাদের। খবর বিডিনিউজ।

‘শরিক দল হোক আর যে হোক, আমাদের বিবেচনার যেটা আসবে, আমি আমার দলে প্রার্থী নির্বাচনে জনপ্রিয় প্রার্থীকে বাছাই করছি। অন্য দল থেকে এলেও তার জনপ্রিয়তা থাকতে হবে।’

জনগণের কাছে যারা ‘গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে’, তাদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হচ্ছে না জানিয়ে কাদের বলেন, ‘যাদের বাদ দেওয়া হয়েছে তারা ইলেক্টেবল না; উইনেবল না। জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। জনগণের কাছে যাদের গ্রহণযোগ্য নাই, তাদেরকে আমরা মনোনয়ন দিচ্ছি না।

‘এর মধ্যে নতুনরাও আছে। নির্বাচনে জিততে পারে, সেটা পুরুষ হোক আর নারী হোক- আমরা তাদেরকে মনোনয়ন দেব।’

ভোটে এবারও জোট: আওয়ামী লীগ
এমন তারকাদের মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের পশ্চিমবঙ্গে কত নায়িকা, কত নায়ক নির্বাচনে অংশ নেন, এরা তো সরাসরি দল করেননি। তারপরও তাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়। অনেক স্টাররা ভারতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। সে হয়ত অদূর ভবিষ্যতে রাজনীতি করবে, জনগণের সেবা করবে, এলাকার লোকের সেবা করবে।’

উপনির্বাচনে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন, তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে দলটির সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তারা আবার দাঁড়াচ্ছে। তারা এখানে মনোনয়ন চাইবে, আমরা তাদেরকে এখানে মনোনয়ন দিতেও পারি। কারণ তারা তো কাজ করার কোনো সুযোগ পায়নি।’

‘সেই সুযোগ দেওয়ার বিষয়টি যদি আমরা মনে করি, এই প্রার্থী এলাকাকে, পার্টিকে কিছু দিতে পারে, তার অ্যাবিলিটি আছে, যোগ্যতা আছে, সেক্ষেত্রে আমরা বিবেচনা করব।’

‘বিএনপির অনেকেই ভোটের প্রস্তুতি নিচ্ছে’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘ইসলামী দলগুলো প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন, তারা তাদের মন্তব্য ব্যক্ত করেছেন। ইসলামী দলগুলো নির্বাচনে আসবেন।’

হরতাল-অবরোধে থাকা বিএনপিও নির্বাচনে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

‘বিএনপি আসবে না- সে কথাটা, এক কথা বলে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। বিএনপির এখনও আসার সুযোগ আছে। হয়ত বিএনপি দলীয়ভাবে, জোটগতভাবে নাও আসতে পারে। বিএনপির ভিতর থেকে অনেকেই নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমাদের কাছে খবর আছে। তারা প্রার্থী হিসেবে অনেকেই নির্বাচন অংশ নেবে। শেষ মুহূর্তে ছবিটা কোন পর্যায়ে যায়, তার উপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।’

প্রধানমন্ত্রীর বারবার বিএনপিকে ‘অপরাজনীতি পরিহার করার’ আহ্বান জানিয়েছেন মন্তব্য করে কাদের বলেন, ‘তারা আন্দোলনের নামে নাশকতা করছে। আমাদের কাছে এখন যেটা মনে হচ্ছে- তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, এখন তারা (বিএনপি) যে মোটিভ নিয়ে ঘুরছে, সেটা হচ্ছে- রাজনৈতিক আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে তারা এখন দেশে অর্থনৈতিক ধ্বংস করার পথ বেছে নিয়েছে। রাজনৈতিক আন্দোলনের তারা ব্যর্থ। চোরাগোপ্তা হামলা করে নির্বাচন বন্ধ করা যাবে না। ভ-ুল করা যাবে না। নির্বাচন যথাসময়ে হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা আমাদের দেশের নির্বাচনের ব্যাপারে বহিঃশত্রু যারা আছেন, তাদের কোনো মন্তব্যকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি না। নির্বাচন করার দিকে আমাদের মনোযোগ। দেশগুলো একে অপরের বিরুদ্ধে কোন মন্তব্য করবে, আমরা এর সঙ্গে শরিক হতে চাই না।’