ঘুমের মধ্যে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করলো মাদকাসক্ত ছেলে

নিজস্ব প্রতিনিধি, বাঁশখালী »

বাঁশখালী উপজেলার পুইঁছড়ি ইউনিয়নের পূর্ব পুঁইছড়ি গ্রামের মাইছপাড়ায় বাদশা মিয়া (৬৫) নামের এক ব্যক্তিকে ঘুমন্ত অবস্থায় উর্পযুপরি কুপিয়ে হত্যা করেছে তারই মাদকাসক্ত ছেলে এনামুল হক (১৯)।

গতকাল শুক্রবার ভোর রাতে এই হত্যাকা- ঘটে। পুলিশ ওই হত্যাকা-ের রহস্য উদ্ঘাটনের পর শুক্রবার বিকালে প্রাথমিক স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে খুনি ছেলে এনামুল হককে গ্রেফতার করেছে। নিহত বাদশা মিয়ার বড় ভাই মো. কবির আহম্মদ বাদি হয়ে এনামুল হককে জ্ঞাত ও আরও কয়েকজন অজ্ঞাত দেখিয়ে মামলা দায়ের করেছেন। এনামুল হক মাদকাসক্তের পাশাপাশি একজন মৃগি রোগীও। দুই ভাই মিলে-মিশে বাবার সাথে ডেকোরেশনের কাজ করেন। ঘটনার সময় বাদশা মিয়ার স্ত্রী গুলতাজ বেগম তাদের নতুন নির্মিত সেমি পাকা রান্না ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন।

সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, বাদশা মিয়া নিহত হবার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলে গ্রামবাসী বলেন, নিহত বাদশা মিয়া ডেকোরেশনের ব্যবসা করলেও এলাকায় একজন ভাল লোক হিসেবে পরিচিত এবং সর্বজন শ্রদ্ধেয়। তার কোন শত্রু থাকতে পারে না। আরও জানা গেছে, নির্মমভাবে খুন হবার পাশাপাশি শুধু পরিবারের সবার মোবাইলগুলো উধাও হয়ে যায়। কিন্তু মালামাল চুরি না হওয়ায় এবং ঘরের দরজা কিংবা কোন আসবাবপত্রের অসংগতি না দেখে পরিবারের সদস্য কেউ খুন করেছে সন্দেহ করি। সেই সন্দেহই সত্য হল। ঘরের সকল সদস্যদের উধাও হওয়া সব মোবাইল ছোট ছেলে এনামুল হকের কক্ষ থেকে একটি ব্যাগে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরক্ষণে দেখা যায়, এনামুলের পরিধেয় গেঞ্জিতে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত এবং পায়ের গোড়ালির ওপর রক্তের ফোঁটা।

ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে এনামুল স্বীকার করেছে, বিভিন্ন জায়গায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় এবং বহুমুখী পারিবারিক কলহের জেরে তার বাবা তাকে বকাঝকা করায় তার মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল। সেই ক্ষোভের বশে ভোরে ঘুম থেকে উঠে ঘুমে থাকা বাবাকে দা দিয়ে ঘাড়ে, মাথায় ও কপালে উর্পযুপরি কুপিয়ে হত্যা করেছে। হত্যার পর পর ঘটনাকে অন্য মোড় দিতে পরিবারের সবার মোবাইলগুলো লুকিয়ে রেখে চুরি এবং চোরের মাধ্যমে হত্যাকা- বলে সাজানোর চেষ্টা করেছিল। খুন করে স্বাভাবিকভাবে তার কক্ষেই সে ঘুমিয়ে পড়েছিল। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেছে।

মামলার বাদি মো. কবির আহম্মদ বলেন, আমার ভাই বাদশা মিয়া এলাকায় খুব ভাল মানুষ হিসেবে পরিচিত। ডেকোরেশনের কাজ করে ছেলে-মেয়েকে মানুষ করেছে। এভাবে ছেলের হাতে খুন হবে কারো ধারণায় ছিল না। তবে ছেলে এনামুল হকের বহুমুখী অপরাধের ঘটনায় আমার ভাই দীর্ঘদিন ধরে চিন্তিত ছিলেন।