গাজায় আরও নারকীয় দৃশ্যের উদ্ঘাটন হতে চলেছে

সুপ্রভাত ডেস্ক »

গাজার উত্তরাঞ্চলের অনেকটাই এখন ইসরায়েলি বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে। তাদের নজর এবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলের দিকে। উত্তর থেকে দক্ষিণের সর্ববৃহৎ শহর খান ইউনিসে যাওয়ার প্রধান সড়ক এখন ‘যুদ্ধক্ষেত্রে’ পরিণত হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)।

বিবিসি জানায়, সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে খান ইউনিসের কাছে বিকট বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। যেগুলো ইসরায়েলের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র এবং গোলা বিস্ফোরণ বলেই মনে হয়েছে।

সোমবার দক্ষিণ গাজার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যানকে পূর্ব দিক থেকে শহরের দিকে আসতে দেখা গেছে।
গত শুক্রবার গাজায় সাত দিনের যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর সেখানে ইসরায়েলের হামলা আরো তীব্রতর হয়েছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু আগেই বলেছিলেন, গাজা থেকে হামাসকে সম্পূর্ণ নির্মূল না করা পর্যন্ত তিনি থামবেন না।

যুদ্ধবিরতির সাত দিনে হামাস ১০৫ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে, যাদের বেশিরভাগই ইসরায়েলের নাগরিক। বিনিময়ে ইসরায়েল তাদের কারাগার থেকে ২৪০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়। যুদ্ধবিরতির সময়ে ত্রাণ নিয়ে বেশ কিছু ট্রাক ও লরি গাজায় প্রবেশ করেছে।

গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযানের বিস্তার যত বাড়ছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং ত্রাণ সংস্থাগুলো তত সতর্ক করে বলছে, যুদ্ধ থেকে বাঁচতে গাজার সাধারণ ফিলিস্তিনিদের পালিয়ে যাওয়ার আর কোনো জায়গা থাকছে না।

গত ৭ অক্টোবর গাজা থেকে ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২শ’র বেশি মানুষকে হত্যা করে হামাস। জিম্মি করে নিয়ে যায় ২৪২ জনকে । প্রতিশোধ নিতে ওইদিন থেকেই গাজায় তীব্র আকাশ হামলা শুরু করে ইসরায়েল। যা এখনো অব্যাহত আছে। গত মাস থেকে ইসরায়েলের পদাতিক বাহিনী গাজায় প্রবেশ করে সম্মুখ অভিযান শুরু করে। খবর বিডিনিউজ।

ইসরায়েলি বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে হামলা শুরু করার পর লাখ লাখ ফিলিস্তিনি সেখান থেকে পালিয়ে দক্ষিণে বিশেষ করে খান ইউনিসে আশ্রয় নিয়েছিল। শরণার্থীদের ভিড়ে খান ইউনিসে পা ফেলার জায়গা ছিল না। কিন্তু এখন এই খান ইউনিসের দিকেই এগোচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘের স্থানীয় একজন কর্মকর্তা বলেন, হতে পারে গাজায় আরো নারকীয় দৃশ্যের উদঘাটন হতে চলেছে। এবং সেসব নারকীয় দৃশ্যের একটি হতে পারে গাজায় মানবিক তৎপরতা চালিয়ে যাওয়ার মত পরিস্থিতি আর না থাকা।

গত দুই দিনে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ লরি ত্রাণসামগ্রী নিয়ে প্রবেশ করেছে। কিন্তু চলমান যুদ্ধের কারণে গাজা জুড়ে ত্রাণ বিতরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

গত রাতে গাজার ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ পুনরায় সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রধান টেলিযোগাযোগ ফার্ম।