ক্রিকেটারদের সারা বছরের জন্য কিনতে চায় আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিরা

হুমকির মুখে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

এমনিতেই আইপিএলের মতো ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর কারণে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। বড় বড় লিগে খেলার জন্য দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছেন অনেক ক্রিকেটার। এবার সেটা চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে। কেননা ক্রিকেটারদের সারা বছরের জন্য কিনে নেওয়ার একটি পরিকল্পনা দাঁড় করিয়েছে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চইজিগুলো। ক্রিকেট শক্তিধর দেশগুলোর বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারের সঙ্গে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ক্রিকেটভিত্তিক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘ক্রিকইনফো’। যদি ক্রিকেটাররা এই চুক্তিতে রাজি হন, তবে তারা ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে বিভিন্ন লিগে খেলতে বাধ্য থাকবেন, জাতীয় দলকে অগ্রাহ্য করে হলেও। যদিও এই আলোচনা এখনও আনুষ্ঠানিক রূপ নেয়নি। তবে ইংল্যান্ডের শীর্ষ সারির কিছু ক্রিকেটার দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তি এবং কাউন্টি দলের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করে আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলে পূর্ণ মেয়াদে যোগ দেওয়ার কথা ভাবছেন। ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য টাইমস’ এমন খবরই দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটিতে গত বুধবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ‘প্রাথমিকভাবে এই আলোচনা হয়েছে ইংল্যান্ডের অন্তত ছয় ক্রিকেটারের সঙ্গে, যাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারও আছেন। আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকেরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানতে চেয়েছেন, নীতিগতভাবে তারা ইসিবি (ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) ও কাউন্টি দল বাদ দিয়ে ভারতের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি দলকে প্রধান নিয়োগকর্তা হিসেবে মেনে নিতে রাজি আছেন কি না।’ সূত্র থেকে টাইমস জানিয়েছে, ‘খেলোয়াড়দের সংগঠন প্লেয়ার্স ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনার পর ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর সঙ্গে ১২ মাসের চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরুর পর বিষয়টি এ পর্যন্ত গড়িয়েছে। এটি ফুটবলের মডেল অনুসরণ করে এগোচ্ছে, যেখানে একজন খেলোয়াড়ের একটি দল থাকবে এবং আন্তর্জাতিক বিরতিতে তাকে ছাড়া হবে, এখন যেটার ঠিক উল্টো হচ্ছে।’
ক্রিকেটারদের লোভনীয় অংকের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই তারা জাতীয় দলকে অগ্রাহ্য করবেন এমন অর্থের সংস্থান পেলে। ইংল্যান্ডের ছয় ক্রিকেটারকে নাকি মাল্টি-মিলিয়ন ডলারের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। টাকার অঙ্কটা নিশ্চিত করা না গেলেও ভারতের সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, তা বার্ষিক ৫০ লাখ পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ৬৬ কোটি টাকা) হতে পারে!
আইপিএলের বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অন্য দেশের টি-টোয়েন্টি লিগেও দল আছে। ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ টি-টোয়েন্টি, আরব আমিরাতের গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি এবং যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হতে যাওয়া মেজর লিগ টি-টোয়েন্টিতে দল আছে আইপিএলের বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজির। কিছুদিন আগে সৌদি আরবও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী টি-টোয়েন্টি লিগ আয়োজনে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকেরা সেখানেও দল কিনতে আগ্রহী। সেক্ষেত্রে ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকরা কোনো ক্রিকেটারকে কিনে নিলে তার আসলে জাতীয় দলের জন্য সময় বের করা কঠিনই হবে। ফুটবলের মতো তখন লিগ খেলাকেই প্রাধান্য দেবেন ক্রিকেটাররা। অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট পড়তে যাচ্ছে বড়সড় হুমকির মুখে।