ক্যান্সার ভবন হোক রোগীদের ভরসার জায়গা

ক্যান্সার একটি মারাত্মক ব্যাধি। এখন এই রোগের অনেক চিকিৎসা বের হয়েছে। কিন্তু ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল এবং দীর্ঘ মেয়াদে নিতে হয়। বছরে প্রায় এক লাখ লোক ক্যান্সারে মারা যায়, আক্রান্ত হয় দেড় লাখ। তবে বাস্তব চিত্র এর থেকেও খারাপ। অনেক লোক চিকিৎসার আওতার বাইরে থাকে। সে কারণে অনেকেই পরিসংখ্যানের আওতার বাইরে থাকে। আমাদের দেশে রোগীর তুলনায় চিকিৎসা ব্যবস্থা খুবই স্বল্প। ক্যান্সার চিকিৎসায় যে বড় মাপের ব্যবস্থাপনা দরকার, সেটি আমাদের নেই। এই রোগের চিকিৎসা সেবা মূলত ঢাকা কেন্দ্রিক।
চট্টগ্রামে ক্যান্সার চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় সীমিত পরিসরে। ক্যান্সারের চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়ে সরকার দেশের আটটি বিভাগে আটটি ক্যান্সার হাসপাতাল তৈরির কাজ শুরু করেছে।
চট্টগ্রামসহ ৮টি বিভাগীয় শহরের (ঢাকা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও খুলনা) মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে একশ শয্যার একটি করে ক্যান্সার ইউনিট স্থাপনে এ প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। প্রকল্পের ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) একনেকে অনুমোদন পায় ২০১৯ সালে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে রয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। চমেক হাসপাতালের প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৩৮৮ কোটি ২৯ লক্ষ ৮১ হাজার। ২০১৯ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের সময়সীমা ধরা হয়েছে। কিন্ত ২০২৪ সাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়াতে আবেদন জানানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। একই সাথে বাজেট বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়।
সুপ্রভাতের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, সরকারি উদ্যেগের অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতাল (চমেক) হাসপাতালে ১৫ তলা বিশিষ্ট ক্যান্সার ভবনের কাজ বর্তমানে দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে ৩৫ শতাংশ অবকাঠামো নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বছরের শুরুতেই ৭তলা পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে। তারপরেই ক্যান্সার চিকিৎসাসেবা দেওয়া শুরু করা যাবে বলে আশা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
দেশে ক্যান্সারের চিকিৎসা ব্যবস্থা যা আছে, তা একদিকে অপ্রতুল এবং অন্যদিকে দীর্ঘ মেয়াদে অনেক ব্যয়বহুল। আক্রান্তদের অনেকে বলেছেন, চিকিৎসা ব্যয় সামলাতে গিয়ে জমিজমা বিক্রি করে পরিবারগুলো নিঃস্ব হয়ে পড়ছে।
ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে গুরুত্ব দিতে হবে। সরকারি সব হাসপাতালে ক্যান্সার স্ক্রিনিংয়ে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা রাখা জরুরি।
চট্টগ্রামে ক্যান্সার চিকিৎসা সেবার পরিধি বাড়াতে ক্যান্সার ভবন বড় ভূমিকা রাখবে নিঃসন্দেহে। এখানে ক্যান্সার রোগীরা সর্বোত্তম ও আধুনিক চিকিৎসা সেবা পাবে আমরা সেই প্রত্যাশা করি। দ্রুত কাজ শেষ করে ক্যান্সার রোগীদের ভরসার জায়গা হবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল হাসপাতাল।