কে এই নূপুর শর্মা?

সুপ্রভাত ডেস্ক »

নুপূর শর্মা গত ২৬ মে একটি টিভি চ্যানেলে মহানবী (সা.)-কে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। একটি মন্তব্যে উত্তাল ভারত। আরব দেশগুলির সমালোচনায় চাপে মোদী সরকার তথা বিজেপি। নেতাদের টিভির পর্দায় মুখ দেখানো বন্ধের ফরমান জারি করেছে বিজেপি। কিন্তু কে এই নূপুর শর্মা, যিনি ‘বাজতেই’ এমন বিতর্ক?

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র ছিলেন নুপূর। বিতর্কিত মন্তব্যের পর আপাতত সেই পদ গেছে। নূপুরের এক মন্তব্যের পরই কানপুরে শুরু হয়ে যায় উত্তেজনা। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন বহু মানুষ। চাপে পড়ে তড়িঘড়ি পদক্ষেপ। দিল্লি বিজেপির সভাপতি আদেশ গুপ্ত জানিয়ে দেন, নূপুরকে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে সরানো হচ্ছে। দলও তাঁকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।

কে এই নূপুর শর্মা?

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ হিন্দু কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক নূপুর পরে আইনের ডিগ্রিও অর্জন করেন। লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স থেকে আইনে স্নাতকোত্তরও করেছেন তিনি।

কলেজবেলাতেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি নূপুরের। সঙ্ঘ পরিবারের ছাত্র সংগঠন এবিভিপি-র নেত্রী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৮ সালে দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী হন নূপুর শর্মা।

২০০৮ সালের নভেম্বরে সংসদ হামলায় অভিযুক্ত এসএআর গিলানিকে হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে এই বিজেপি নেত্রীর বিরুদ্ধে। পরে অবশ্য আদালতে বেকসুর খালাস পেয়ে যান। সংসদ হামলায় অভিযুক্ত অধ্যাপক গিলানির মুখে থুতু ছিটিয়ে ছিলেন নূপুরের সঙ্গী। সেই সময়ই খবরের শিরোনামে উঠে আসেন এই বিজেপি নেত্রী।

২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর একটি আলোচনা সভায় অংশ নিয়েছিলেন এসএআর গিলানি। এবিভিপি-র কর্মীদের নিয়ে সভাস্থলে পৌঁছন নূপুর। শুরু হয় ভাঙচুর। নূপুরকে দেখা যায়, বিভিন্ন ভাবে গিলানিকে অপদস্ত করতে। সে সময় তাঁর এক সঙ্গী গিলানির মুখে থুতু ছেটান।

এর পরেই পদোন্নতি। ভারতীয় জনতা পার্টির যুব মোর্চার জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য হন নূপুর। দিল্লি বিজেপির রাজ্য কর্মসমিতির সদস্যও হন তিনি। পরে বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র হন নূপুর।

২০১৫  সালে দিল্লি বিধানসভায় নয়াদিল্লি বিধানসভা কেন্দ্রে আপ প্রধান অরবিন্দ কেজরীবালের বিরুদ্ধে প্রার্থী হন নূপুর। যদিও ৩১,৫৮৩ ভোটে কেজরীর কাছে হেরে যান।

২০১৭ সালে দিল্লি বিজেপির মুখপাত্র হন নূপুর শর্মা। বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য নূপুরের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র, হায়দরাবাদে একাধিক এফআইআর হয়েছে ইতিমধ্যেই।

নূপুর-বিতর্কে চুপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। কয়েকটি সরকারি অনুষ্ঠানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য রেখেছেন। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যেখানে ভারতের ক্রমবর্ধমান অসহিষ্ণুতা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে, তা নিয়ে একেবারেই ‘নীরব’ মোদী।

মুসলিম দেশগুলি ভারতের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী কেন চুপ তা নিয়ে সরব বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর কথায়, ‘‘ঘরে ভাঙন ধরায় বর্হিবিশ্বের কাছেও দুর্বল হয়ে পড়েছে ভারত।’’

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা