ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে শক্তিশালী করতে হবে

নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় স্বপন

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেছেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ রাজনীতির ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী অনেক ঘটনার সূতিকাগার। সেই হতে মহানগর আওয়ামী লীগ গণমানুষের রাজনীতি প্রতিষ্ঠায় একটি উর্বর মঞ্চ। এ সংগঠনের কর্মকাণ্ড নিয়ে আওয়ামী লীগ সমৃদ্ধ ও গর্বিত। সত্যিকার অর্থেই প্রকৃত রাজনীতির চর্চা হয় চট্টগ্রামে।

গতকাল মঙ্গলবার সকালে নগরীর থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম মিলনায়তনে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথাগুলো বলেন।

তিনি আরও বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ সংগঠিত ও সাংগঠনিকভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ হলে তার প্রভাব পড়ে চট্টগ্রাম উত্তর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ, কক্সবাজার এবং পার্বত্য জেলাগুলোতে। তাই চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ যত সংগঠিত হবে তার আলো ছড়িয়ে যাবে সবখানে। এই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপলব্ধি ও অনুভব করেন বলেই আজকে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কয়েকজনকে এখানে পাঠিয়েছেন।

তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আসন্ন সম্মেলনকে কেন্দ্র করে থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে নতুন নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায় যে কর্মকাণ্ড চলমান রয়েছে তাকে গতিশীল করার জন্য কেন্দ্রীয় নির্দেশনা রয়েছে। তা কতটুকু এবং কিভাবে চলমান রয়েছে বা থাকবে তা দেখভাল করার জন্য যাদের প্রতি দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করতে পারলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ অবশ্যই শক্তিশালী হবে। দলের মধ্যে নেতৃত্বের ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা থাকবে এবং নিজেকে আরো বড় পদে নিয়ে যাবার টান বা আকর্ষণ থাকবে। কিন্তু এক্ষেত্রে যাতে কোনো অবাঞ্চিত ঘটনার সূত্রপাত না হয় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।

আগামীতে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে যারা থাকবেন বা আসবেন তারা অবশ্যই দলকে অধিকতর সুসংগঠিত করবেন। দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অনিয়ম বা পক্ষপাতিত্ব নিয়ে যে অভিযোগগুলো এসেছে তা যথাযথ কিনা তা যাচাই-বাছাই করা হবে। সবচেয়ে বড় কথা আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে কোনো ক্ষেত্রেই যাতে দলীয় কার্যক্রমে স্থবিরতা না আসে। সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, আমাদেরকে শুধু নেতা হওয়ার জন্য নয়, সংগঠনের অস্তিত্ব বজায় রাখতে নিজেদের সকল সামর্থ শক্তি উজার করে দিতে হবে। আমি কার ছেলে বা আমার পৈতৃক পরিচয় কি তা কখনো নেতৃত্বের মাপকাঠি হতে পারে না। আমাদের মধ্যে নানারকম তর্ক-বিতর্ক ও মতভিন্নতা থাকতেই পারে। কিন্তু এ নিয়ে চরিত্র হরণ বা কোন্দল কিছুতেই কাম্য হতে পারে না। বর্তমান কমিটি দায়িত্বপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকে সাংগঠনিক শৃংঙ্খলা বজায় রেখেছে। তবে যারা সাংগঠনিক কার্যক্রম ও প্রক্রিয়ার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত নয় তারা পত্র-পত্রিকায় সমালোচনামুখর। আসলেই এরা প্রকৃত অর্থে সংগঠন স্বার্থে নয়, সুযোগসন্ধানী।

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, যারা দলীয় মঞ্চে পদ-পদবি ধারী হয়ে কথা বলছেন তাদেরকে জেনে-শুনে-বুঝে কথা বলতে হবে। শুধু কিছু বলতে হবে বলেই প্রমাণপত্র ও যুক্তিহীনভাবে মুখরোচক বক্তৃতার খৈ ফুটিয়ে নিজেকে ফোকাস করাটা প্রকৃতপক্ষে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করা এটা কোনক্ষেত্রে আদর্শিক দায়বদ্ধতা হতে পারে না। তিনি সুস্পষ্ট করে বলেন, সদস্য নবায়ন বা তথ্য ফরম বিলি-বণ্টনের ব্যাপারে যে কথাগুলো উঠেছে তার প্রকৃত জবাব হচ্ছে এগুলো বিতরণ করা হয়েছে থানা, ওয়ার্ড কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বা আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কের মাধ্যমে, এককভাবে কাউকে দেওয়া হয়নি। কাদেরকে এই তথ্য ফরম কিভাবে ক’খানা দেওয়া হয়েছে তার পরিসংখ্যান দলীয় কার্যালয়ে আছে। ইউনিট সম্মেলন এবং যাবতীয় সাংগঠনিক কার্যক্রম কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। এই কার্যক্রম আমরা ধারাবাহিকভাবে চলমান রেখেছি। আমরা শতাধিক ইউনিট সম্মেলন ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছি। দুএকটি ইউনিটের ক্ষেত্রে যে অভিযোগ উঠেছে তার জন্য দায়ী হলেন, মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যাদেরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তারাই। সভার সিদ্ধান্তে মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন থানা, ওয়ার্ড এবং ইউনিটকে আরো শক্তিশালী ও গতিশীল করতে ১৫ টি থানায় সাংগঠনিক টিম অনুমোদন করা হয়। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

মহানগর আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আ.জ.ম. নাছির উদ্দীনে সঞ্চলনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াসিকা আয়শা খান, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুর সবুর, উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট সুনীল কুমার সরকার, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেয়র এম. রেজাউল করিম চৌধুরী, এম এ লতিফ এম.পি, বদিউল আলম, আব্দুচ ছালাম, নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী, শফিকুল ইসলাম ফারুক, সৈয়দ হাসান মাহমুদ শমসের, অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি