‘উপরের নির্দেশেই মারা হচ্ছে’

হত্যা মামলার ৫ আসামি গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার »

কক্সবাজার সদর উপজেলার পিএমখালী ইউনিয়নের চেরাংঘাটা বাজারে চাঞ্চল্যকর মোরশেদ আলী প্রকাশ বলী মোরশেদ হত্যা মামলার ৫ আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৭ এর সদস্যরা। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে চান্দগাঁও ক্যাম্প (বহদ্দারহাট) সিপিসি-৩ কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, মাহমুদুল হক মেম্বার, নুরুল হক, মো. আলি প্রকাশ মোহাম্মদ, মো. আবদুল্লা ও মো. আজিজ।
জানা গেছে, কক্সবাজার সদরের পিএমখালীতে পানি সেচ প্রকল্প দীর্ঘদিন ইজারা নিয়ে চালিয়ে আসছিল মোরশেদের পরিবার। এটি ভাগিয়ে নিতে নানা অপকৌশল, ছলচাতুরি করছিল একই এলাকার মাহমুদুল হক, জয়নাল, কলিম উল্লাহসহ তাদের আত্মীয় স্বজনরা। এক পর্যায়ে জোর করে তারা দখলে নেয়। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিবাদ দেখা দেয়। অবশেষে পানি সেচ প্রকল্প নিয়ে মোরশেদকে খুন করা হয়।
র‌্যাব-৭ এর হাতে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে প্রতিবাদী যুবক মোর্শেদকে নির্মমভাবে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দিলেন খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী এবং সরাসরি জড়িত ৫ আসামি।
খুনিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে র‌্যাব-৭ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একটি সেচ প্রকল্প নিয়ে বিরোধের জের ধরে মোর্শেদকে শায়েস্তা করতে গত ৭ এপ্রিল চেরাংঘাটা বাজারে দিদারের সিমেন্টের দোকানে এ ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মাহমুদুল হক মেম্বার, তার ভাই মোহাম্মদ আলী এবং মেম্বারের ৩ ছেলেসহ সিদ্ধান্ত নেয় এবং সেদিনই ঘটনা সংগঠিত করা হবে। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্যদের সঙ্গে নিয়ে বাজারে প্রকাশ্যে মোর্শেদকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। সেসময় ঘটনাস্থলে সাধারণ মানুষ যেনো তাদের প্রতিহত করতে এগিয়ে না আসে সেজন্য আতংক ছড়াতেই মূলত ‘উপরের নির্দেশেই মারা হচ্ছে’ বলেই মিথ্যে কথা বলে খুনিরা।
এ ঘটনাটি শুধুমাত্র সেচ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে ঘটেছে, এ ঘটনাটিতে কোনো ধরনের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে নেই বলেও জানায় র‌্যাব।
মোর্শেদকে খুনের পরপরই মাহমুদুল হক, তার ভাই মোহাম্মদ আলী, মাহমুদুল হকের ছেলে আজিজ, আলমসহ ৫ জন টেকনাফে পালিয়ে তাদের এক আত্মীয়ের বাসায় আত্মগোপনে থাকে তারা।
সেখানে তারা মোর্শেদ হত্যাকাণ্ড নিয়ে দেশজুড়ে প্রতিবাদের বিষয়টি জানতে পারে এবং মামলা দায়ের হয়েছে জানতে পেরে জামিনের জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিতে একটি মাইক্রোবাসও ঠিক করে। পরে খবর পেয়ে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এলিট ফোর্স র‌্যাব-৭ এর বিশেষ একটি দল অভিযান চালিয়ে তাদের ৫ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এ ঘটনায় জড়িত সকল খুনিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানিয়েছেন র‌্যাব-৭। গ্রেফতারকৃতদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে র‌্যাব সূত্র জানায়।