অস্থির আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে আনুন

বাজারে আদার দাম এখন অনেক বাড়তি। এই মসলাজাতীয় পণ্যটি দেশে যেমন চাষ হয়, তেমনি বিদেশ থেকেও আমদানি হয়। চাহিদার তিন ভাগের এক ভাগ দেশে উৎপাদন হয়। বাকি দুই ভাগ আমাদের আমদানি করে প্রয়োজন মেটাতে হয়।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি আদার দাম বেড়েছে ৫০-৬০ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সব সময় চীনা আদায় বাজার সয়লাব থাকতো। কিন্তু ডলার সংকটের কারণে ব্যবসায়ীরা চীন থেকে আদা আনতে এলসি (ঋণপত্র) খুলতে পারেননি। এর ফলে পণ্যটির দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়। পরবর্তীতে ব্যবসায়ীরা বিকল্প বাজার মিয়ানমার, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও ভারত থেকে আদা আমদানি করেন।
আদা ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের দেশে যে আদা আমদানি হয় সেখানে প্রায় ৫০ শতাংশ চীনা আদা এবং বাকিগুলো অন্যান্য দেশের। তবে দেশে চীনা আদার চাহিদা বেশি। কয়েকদিন ধরেই চীনের আদা আসছে না। তাই বাজারে আদার কিছুটা সংকট দেখা দিয়েছে। চীনা আদা বাজারে নেই বললেই চলে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশে এ বছর আদার উৎপাদন কম হয়েছে। আমদানিও কম হয়েছে। এ জন্য দাম অনেক বেশি। আমদানি নির্ভরতার কারণে দাম উঠানামা বেশি করছে। কারণ অনেক সময় পণ্যের বুকিং দর বেড়ে যায়। আবার আমদানির ক্ষেত্রে শতভাগ মার্জিন দিয়ে আমদানি করতে হচ্ছে। সব কিছু মিলে বাজারে আদার সরবরাহ সংকট দেখা দিয়েছে। আগে চীনা আদার বুকিং দর ছিল ৮০০-৯০০ ডলার। এখন সেটি হয়ে গেছে আড়াই হাজার ডলার। আমদানি খরচই পড়ছে ৩২০-৩৩০ টাকা।
আগামী সপ্তাহে ইন্দোনেশিয়া ও ভারতীয় আদা আসবে। ব্যবসায়ীরা আশাবাদী কোরবানির ঈদ আসার আগেই আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
আদা যারা আমদানি করেন, তাদের আমদানি মূল্যের সাথে বিক্রয় মূল্যের তুলনা করে যদি বাজার তদারকি করা হয়, তবে আদার বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। কারণ সামনে কোরবানির ঈদ। তখন আদার চাহিদা আরও বেড়ে যাবে। সেই চাহিদাকে পুঁজি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে কারসাজি করে দাম বাড়াতে না পারে প্রশাসনকে সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে।
আদার বাজারে বাড়তে থাকা অস্থিরতা থামাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে কোরবানির ঈদের আগেই।