অবশেষে আলোর মুখ দেখছে বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল

দীর্ঘ চেষ্টার পর চুক্তির মাধ্যমে বার্ন হাসপাতাল আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের জন্য এটা একটা বড় প্রাপ্তি। ঢাকার পর চট্টগ্রাম হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এ অঞ্চলে প্রতিনিয়তই কোন না কোন বার্ন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। চট্টগ্রামবাসী বিশেষায়িত একটি হাসপাতাল পেতে যাচ্ছে। আধুনিক হাসপাতাল স্থাপনের মাধ্যমে আইসিইউ কিংবা চিকিৎসার অভাবে আর কোন মৃত্যুর খবর অন্তত পাওয়া যাবে না।
চট্টগ্রামে চীন সরকারের সহায়তায় দেড়শ’ শয্যার বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল স্থাপনে দু’দেশের চুক্তি সই হয়েছে। গত ৩০ মার্চ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সচিবালয়ের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের এ চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। ফলে দীর্ঘ প্রতীক্ষার বিশেষায়িত বার্ন হাসপাতাল এখন বাস্তবায়নের পথে।
সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, আগামী দু’সপ্তাহ পর চীনা সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দল হাসপাতাল নির্মাণে সয়েল টেস্টসহ আরও আনুষাঙ্গিক কার্যক্রম শুরু করবেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের প্রধান ছাত্রাবাসের উত্তর পাশের গোয়াছি বাগান এলাকায় ১৫০ শয্যার বিশেষায়িত এ হাসপাতালের অবকাঠামো নির্মাণের কাজ পুরোদমে শুরু করবেন চীনা প্রকৌশলীরা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই বছরের মধ্যে বিশেষায়িত হাসপাতালটি আলোর মুখ দেখবে।
বিশেষায়িত দেড়শ শয্যার বার্ন ইউনিটে থাকবে ১০টি আইসিইউ, শিশুদের জন্য ৫টিসহ মোট ২৫টি এইচডিইউ এবং অত্যাধুনিক দুটি অপারেশন থিয়েটার। জরুরি বিভাগের পাশাপাশি বহির্বিভাগও থাকবে। প্রাথমিকভাবে ৬ তলা ভবন নির্মাণ করা হবে। ভবনের প্রতি ফ্লোরে স্পেস থাকবে ১৬ হাজার বর্গফুট। বার্ন ইউনিটের ৬ তলা এই ভবনের পাশাপাশি ইক্যুইপমেন্ট (সরঞ্জাম) স্থাপনের জন্য একতলা বিশিষ্ট আলাদা আরেকটি ভবন নির্মাণ করা হবে। একতলা ভবনটিতে অক্সিজেন প্ল্যান্ট, সাবস্টেশন ও জেনারেটরসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জাম স্থাপন করা হবে। প্রায় এক একর জায়গার উপর বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিট গড়ে তোলা হবে।
রোগী আনা নেওয়ার সুবিধার জন্য তিনটি রাস্তা বানানো হবে। চট্টেশ্বরী রোডের দিক থেকে একটি রাস্তা হবে। সেটি হবে বার্ন হাসপাতালের প্রধান রাস্তা। চমেক হাসপাতালের পেছনে ছাত্র হোস্টেলের দিক থেকে আসবে আরও একটি রাস্তা। সর্বশেষ রাস্তাটি হবে মিজান হোস্টেলের দিক দিয়ে। সেখানে মাঝখানে পাহাড় থাকায় তা ঘুরিয়ে ওয়ার সিমেট্রি হয়ে আনা হবে।
পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০ মিলিয়ন ইউএস ডলার (চীনা টাকায় প্রায় ১২০ মিলিয়ন ইউয়ান) ব্যয় নির্ধারণ করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ। এর শতভাগই অনুদান সহায়তা। সম্পূর্ণ নিজেদের খরচে বিশেষায়িত এ বার্ন ইউনিট করে দেবে চীন।
চট্টগ্রাম বিভাগের ৯টি জেলার প্রায় ৪ কোটি মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করবে এই বিশেষায়িত বার্ন ইউনিট।