সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলতি আসরে প্রথম চার ম্যাচের মাঝে মাত্র একটিতে জিতেছিল তামিম ইকবাল, মাশরাফী বিন মোর্ত্তজাদের নিয়ে গড়া মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকা। তবে চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়িয়েছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের নেতৃত্বাধীন দল।
দলের পঞ্চম ম্যাচে সেঞ্চুরি পেয়েছেন তামিম ইকবাল। আগের রাতেই তাকে সেঞ্চুরির কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন বিপিএলের সব থেকে বেশি শিরোপাজয়ী অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা। বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে ছয় মাস বিরতির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। সেই রাতেই তাকে নিজের দিকে তাকিয়ে দলের জন্য সেঞ্চুরি হাঁকাতে বলেছিলেন মাশরাফী। পরের দিনই সিলেটের বিপক্ষে নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়ে ক্যারিয়ারের চতুর্থ টি-২০ সেঞ্চুরি হাঁকান তামিম।
এ বিষয়ে মাশরাফী বলেন, নিজের ওপর ভরসা রাখা খুব জরুরী। কালকে তামিমকে বলছিলাম, এই-ওই লুইস-টুইসের দিকে না তাকিয়ে, নিজের দিকে তাকা। তুই একটা একশ মার, তোর ওই সামর্থ্য আছে। তাহলেই আমরা ম্যাচ জিততেছি। কালকে রাতেই বলছি। আজকেই একশ মারছে।
তিনি আরো বলেন, পরেরদিন ও আবার ভালো খেলতে পারে, না হয় অন্য কেউ খেলবে। তো নিজেরাই এই পজিশনে আনছি, নিজেদেরই এখান থেকে বের হইতে হবে। তাই অন্য কারো ওপর নির্ভর না করে যখন নিজে ২২ গজে নামবে তখন দিনটি নিজের করে নিতে হবে। যদি তা না হয়, ঠিক আছে। তবে যতক্ষণ উইকেটে থাকবে নিশ্চিত করতে হবে। শুক্রবার সিলেট সানরাইজার্সের বিপক্ষে রেকর্ড গড়ে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে ঢাকা। এ জয়ে মূল কৃতিত্ব চট্টগ্রামের সন্তান তামিম ইকবালের। যিনি আগেরদিনই আন্তর্জাতিক টি-২০ থেকে বিরতির ঘোষণা দিয়ে, মাঠে নেমে খেলেছেন ১১১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস। খবর ডেইলি বাংলাদেশ’র
তামিমের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে ভর করে ১৭৬ রানের লক্ষ্য ১৮ বল হাতে রেখেই তাড়া করে ফেলেছে ঢাকা। এমন জয়ের পর স্বাভাবিকভাবেই উৎফুল্ল ঢাকা শিবির। ম্যাচ শেষে ড্রেসিংরুমেই প্রাথমিক উদযাপন সারে তারা। তবে এরপরই পুরো দলকে মাটিতেই পা রাখার হুঁশিয়ারি দেন অভিজ্ঞ তারকা মাশরাফী।
টিম হার্ডলে নিজের বক্তব্যে তিন পরাজয়ের কথা মনে করিয়ে দিয়েন মাশরাফী বলেন, আমরা নিজেরাই নিজেদের এই অবস্থায় এনেছি। এখান থেকে আমাদেরকেই বের হইতে হবে। আমরা এমন কোনো অবস্থায় পৌঁছাইনি যে এক ম্যাচ জিতে খুব ভালো…। ভালো লাগা অবশ্যই ভালো, তবে এমন কোনো অবস্থায় আসিনি যে একবারে সেমিফাইনালে উঠে গেছি। তবে বড় জয়ের ম্যাচে দলের খেলোয়াড়দের বাহবা দিয়ে তিনি বলেন, এখন একটি করে ম্যাচ ধরে এগুতে হবে, এটিই গুরুত্বপূর্ণ। আরেকটা বিষয় হলো, তামিম প্রমাণ করে দিয়েছে যে আমরা আমাদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস রাখা জরুরী। একইভাবে এবাদত ও রুবেল তোরাও প্রমাণ করছিস যে বিদেশি বোলাররাই সবকিছু না এখানে। এটি অনেক ব্যাটিং সহায়ক একটি উইকেট। যখন ১৭৫ হইলো ওদের স্কোর, আমি রিয়াদকে বলতেছিলাম যে, আমরা ভালো বোলিং করছি। এই উইকেটে ১৭৫ রানে আটকানো একদমই সহজ নয়। এ সময় দেশি ক্রিকেটারদের নিজেদের কাজটাও বুঝিয়ে দেন মাশরাফী। প্রতি আসরে সাত দেশির সঙ্গে চার বিদেশি খেললেও, এবার সব দলে বিদেশি আছে তিনজন করে। তাই ম্যাচ জেতার জন্য বিদেশিদের ওপর নির্ভর না করে, দেশিদেরই পারফর্ম করতে হবে বলে মনে করিয়ে দেন মাশরাফী।
বিপিএলের সফলতম এ অধিনায়ক বলেছেন, অন্যবার (দেশি ক্রিকেটার) খেলে সাতজন। এবার কিন্তু আটজন। তো আমাদেরকে দেশি খেলোয়াড়দের ওপরেই বেশি নির্ভর করতে হবে। এর বাইরে শাহজাদ, রাসেল, কায়েস কী করবে এটা কিন্তু একটা বাড়তি পাওয়া। এই সুবিধাটা আমরা নেবো।
তিনি আরো যোগ করেন, ‘আমরা নিজেরা যদি কিছু না করি, আটজন যদি কিছু না করে তিনজন দিয়ে তো ম্যাচ জেতা যাবে না। যে কারো এক দিন খারাপ যেতে পারে, পরের ম্যাচে আমার দিন খারাপ যেতে পারে, তামিমের দিন খারাপ যেতে পারে…, তবে আরো পাঁচজন তো আছে। এর সঙ্গে ওরা (বিদেশি) তিনজন যে ইনপুট দেবে সেটা কাজে লাগবে।