রুমন ভট্টাচার্য :
নগরীর পশ্চিম বাকলিয়া আনছুর আলী বাই লেইনের বাসিন্দা আমরিন ইসলাম ইষ্পা ও আফরিন ইসলাম পুষ্পা দুই বোন। বড় বোন আমরিন এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে। আছে ফলাফলের অপেক্ষায়। ছোট বোন আফরিন পাশ্ববর্তী একট স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মহামারী করোনা কেড়ে নিয়েছে তাদের দুজনের ঈদ আনন্দ। বাবা-মা ও ভাইয়ের সাথেই কাটছে এবারকার ঈদ। দু’বোন নতুন জামাকাপড় কিনলেও সেগুলো পড়ে কোথাও ঘুরতে যেতে না পারাই মন ভালো নেই তাদের। তাই তাদের মনে নেই কোনো আনন্দ। তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে গতবারের ঈদের সব সুখস্মৃতি।
![](https://suprobhat.com/wp-content/uploads/2020/05/studeant-20200317032148-300x166.jpg)
ঈদ মানেই খুশি, ঈদ আর আনন্দ। এবার করোনার বিষাদ ছুঁয়ে গেছে ঈদের দিনটিকেও। বাবা-মায়ের সাথেই কাটছে ছোটদের ঈদ। বাইরে যাওয়া, ঘোরাঘুরি নিষেধ, বন্ধুর বাড়িতে যাওয়া মানা। তাই ঘরবন্দি ছোটদের ঈদ আনন্দ। এমন ঈদ আসবে তা ছিল ভাবনার বাইরে।
আমরিন ইসলাম ইস্পা বলে, ‘গতবছর সকালে আব্বু মসজিদ থেকে ঈদের নামাজ পড়ে আসার পর পরিবারের সবাই মিলে প্রথমেই নানুর বাড়ি যায় সেখানে খাওয়া-দাওয়াসহ অনেক মজা করি। পরদিন খালা ও ফুফুর বাড়ি বেড়াতে যায়। তারপরের দিন শিশু পার্ক, চিড়িয়াখানা ও পতেঙ্গা সী বিচে যায়। চতুর্থদিন বান্ধবীদের সাথে খুব মজা করে সময় কাটায়। কিন’ এবার এসবের কিছুই হয়নি। করোনায় সব শেষ। তাই মন খুব খারাপ। বিরক্তকর একটা সময় কাটাতে হচ্ছে। প্রায় দু’মাস ধরে ঘরে বন্দি হয়ে আছি। গতবারের সবকিছু মনে পড়ছে বারবার। এমন ঈদ আসবে কখনো ভাবিনি।’
আফরিন ইসলাম পুষ্পা বলে, ‘গতবছর ৫টা জামা কিনেছিলাম। ৫ দিন ৫ দিন পড়ে পরিবারের সবাই মিলে অনেক ঘুরেছি। কত মজা হয়েছে। এবারও ৩টা জামা কিনেছি। কিন’ এগুলো পড়ে কোথাও যেতে পারছি না। তাই কিছু ভালো লাগছে না। আমার ঘুরতে খুব ভালো লাগে।’
ঈদের বন্ধে পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে যাওয়া হবে না শিশু পার্ক, সী ওয়ার্ল্ড কিংবা চিড়িয়াখানায় বা পতেঙ্গা সী-বিচে। আবদার বায়না যতই হোক ঘরে বসেই তা সামাল দেয়ার প্রাণপণ চেষ্টা বাবা-মায়ের।
ইষ্পা ও পুষ্পার মা গৃহিনী রেহানা আক্তার লাকী বলেন, ‘ঈদের দিন সকালে পরিবারের সবার জন্য কিছু স্পেশাল খাবার তৈরি করেছি। সনত্মানেরা তো বাইরে বের হতে ও ঘুরতে চাই। কতক্ষণই বা আর এভাবে থাকা যায়। গতবার তো বাইরে নিয়ে অনেক ঘুরেছি। এবার ত কিছুই হচ্ছে না। যতটুকু সম্ভব ঘরেই ঈদের আনন্দটুকু সন্তানদের দেওয়ার চেষ্টা করছি।’
![](https://suprobhat.com/wp-content/uploads/2020/05/index২২.jpg)
![](https://suprobhat.com/wp-content/uploads/2020/05/index২২.jpg)
বাবা মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, ‘ঈদ উদযাপনে আড়ম্বর যত সামান্য হোক পরিবারের ঈদের আনন্দ তবু অসামান্য। করোনা পরিসি’তিতে চলমান লকডাউনেও পরিবারের সদস্যদের সুস্থতাই সর্বপ্রথম ভাবছি। তাই এবার ঈদের নামাজও বাসায় পড়েছি।’
করোনা কাটিয়ে সেরে উঠুক পৃথিবী, ঘর থাকুক নিরাপদে, আবার পরিবারের ঈদের আনন্দ পাড়া মহলস্না শহর ছাড়িয়ে গোটা বিশ্বে এমনটাই প্রার্থনা সবার।’