সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »
জিতলেই ২০২২ বিশ্বকাপের মূল পর্ব- এই সমীকরণ সামনে রেখে সাও পাওলোর করিন্থিয়ান্স অ্যারেনায় নেমেছিল ব্রাজিল। কিন্তু কলম্বিয়ার কড়া রক্ষণ ও শারীরিক শক্তির ফুটবলের সামনে মোটেও সুবিধা করতে পারছিল না সেলেসাওরা। বারবার অ্যাটাকিং থার্ডে আটকে যাওয়া ব্রাজিল অবশেষে সফল ৭২ মিনিটে। লুকাস পাকিতার গোলটাই সমীকরণ মিলিয়ে দিলো পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। কলম্বিয়াকে ১-০ গোলে হারিয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগে কাতার বিশ্বকাপে পৌঁছে গেছে ব্রাজিল।
শুক্রবার ভোরে সাও পাওলোর বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচের প্রথমার্ধে বেশ সংগ্রাম করতে হয়েছে স্বাগতিকদের। কলম্বিয়া তাদের খেলার জায়গা দিয়েছে সামান্য। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণে গতি বাড়লেও গোল আসছিল না। তাই লস ক্যাফেতেরোসের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচের স্মৃতি সামনে আসা অস্বাভাবিক নয়। এবারের বিশ্বকাপে ব্রাজিল শুধুমাত্র এই কলম্বিয়ার কাছেই পয়েন্ট হারিয়েছে। তবে পাকিতায় উদ্ধার সেলেসাওরা। গোলটিতে আছে নেইমারের ছোঁয়াও। প্যারিস সেন্ত জার্মেই ফরোয়ার্ডের বুদ্ধিদীপ্ত পাস থেকেই জাল খুঁজে পেয়েছেন অলিম্পিক লিওঁ মিডফিল্ডার।
তার ওই গোলেই কাতার বিশ্বকাপের মূল পর্বের টিকিট পেয়েছে ব্রাজিল। ১২ ম্যাচে ১১তম জয়ে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে ছয় ম্যাচ হাতে রেখে ২০২২ বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলো তারা। অন্যদিকে কঠিন সময় কাটানো কলম্বিয়া ১৩ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে পাঁচ নম্বরে।
লাতিন অঞ্চল থেকে সবার আগে বিশ্বকাপ নিশ্চিত করা ব্রাজিল দলকে টুইটারে অভিনন্দন জানিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কনমেবল। সংস্থাটির টুইট, ‘২০২২ কাতার বিশ্বকাপে পৌঁছে গেলো ব্রাজিল!! লাতিন আমেরিকা অঞ্চল থেকে সবার আগে পরের বিশ্বকাপ নিশ্চিত করলো ব্রাজিল ফুটবল দল। অভিনন্দন।’ আর বিশ্বকাপ নিশ্চিতের পর ব্রাজিল ফুটবল দলের টুইটটা এমন, ‘সম্পন্ন’।
যদিও বেশ ভালোই পরীক্ষা দিতে হয়েছে তাদের। প্রথমার্ধে বলার মতো কোনও সুযোগই তৈরি করতে পারেননি নেইমাররা। উল্টো কলম্বিয়া পরীক্ষা নিয়েছে। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে উইলমার বারিয়োসের বুলেট গতির ভলি বারের ওপর দিয়ে যায়। আর ৩৯ মিনিটে লুইস দিয়াসের বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট বাতাস লাগিয়ে যায় পোস্টে। প্রথমার্ধে ব্রাজিলের সুযোগ বলতে ৩৬ মিনিটে দানিলোর শট কলম্বিয়ার এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে পোস্টে প্রতিহত হওয়া।
বিরতি যাওয়ার আগে ফাউল হয়েছে ২৩টি। এই পরিসংখ্যানেই বোঝা যায় সুন্দর ফুটবলের ফুল ফুটতে পারেনি সাও পাওলোতে। তবে দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের কয়েকটি আক্রমণ ছিল মুগ্ধ করার মতো। যদিও কাঙ্ক্ষিত গোল আসছিল না। নেইমার, ভিনিসিয়ুস জুনিয়র, আন্থনি, মাথিয়াস কুনহাদের চেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছিল। অবশেষে ৭২ মিনিটে সফল ব্রাজিল। পাকিতার শট জালে জড়াতেই আানন্দের ঢেউ ওঠে করিন্থিয়ান্স অ্যারেনায়। কলম্বিয়ার এক খেলোয়াড়ের শট বুক দিয়ে নামিয়ে মারকিনুস বাড়িয়েছিলেন নেইমারের উদ্দেশ্যে। পিএসজি ফরোয়ার্ড গড়িয়ে আসা বলটি শুধু প্লেসিং করে দিলেন ডি বক্সের ভেতর। দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান দিয়ে আগুয়ান পাকিতা চলতি বলেই শট নিয়ে জাল খুঁজে পান। বল কলম্বিয়ান গোলকিপার দাভিদ ওসপিনার হাতে লাগলেও শেষরক্ষা হয়নি।
ব্যবধান বাড়ানোর আরও কয়েকটি দারুণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। যার মধ্যে ভিনিসিয়ুসের সুযোগটি ছিল সহজ। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার মিনিট দুয়েক আগে নেইমারের চমৎকার পাস রিয়াল মাদ্রিদ ফরোয়ার্ড পেয়ে গিয়েছিলেন ফাঁকায়, সামনে ছিল শুধু ওসপিনা। কিন্তু বলে গতি বেশি থাকায় নিয়ন্ত্রণে আর নিতে পারেননি ভিনিসিয়ুস। ব্যবধান না বাড়লেও জয় ও বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে পাকিতার গোলটাই ছিল যথেষ্ট।