প্যানেল মেয়রের ওপর হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদক, কক্সবাজার :
কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী মাবুর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিক আহত মাহাবুবুরকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কক্সবাজার পৌরসভার গেটে এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর পর কক্সবাজার শহরের দোকান মালিকরা ধর্মঘট শুরু করে। একই সঙ্গে শহরে মিছিল সমাবেশ করে। কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বেলা দেড়টায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
পরে হামলার ঘটনা শুনে ঢাকায় অবস্থানরত পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান সাথে সাথেই বিমানযোগে কক্সবাজারে চলে আসেন। এখানে পৌঁছেই তিনি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান চৌধুরী কে দেখতে ছুটে যান। তিনি চিকিৎসার যাবতীয় খোঁজ খবর নেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, এ ঘটনার নেপথ্যে অনেকেইর ইন্ধন রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কক্সবাজারে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে চক্রটি। অচিরেই তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কক্সবাজার পৌরসভার পক্ষে লাইন্সেনবিহীন ব্যাটারি চালিত ইজি বাইক (টমটম) চলাচলে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। এতে বেশ কিছু লাইসেন্সবিহীন টমটম আটক করা হয়। এর জের ধরে টমটম মালিক সমিতির নেতার পরিচয়ে রুহুল কাদের মানিক নামের এক যুবকের নেতৃত্বে ১০/১৫ জন মানুষ পৌরসভার গেটে দাঁড়িয়ে হৈ-চৈ শুরু করে। এসময় কক্সবাজার পৌরসভার প্যানেল মেয়র মাহাবুবুর রহমান তাদের শান্ত হওয়ার অনুরোধ জানালে রুহুল কাদের মানিক প্যানেল মেয়রের ওপর হামলা চালায়। এতে মাহাবুবুর আহত হন। ঘটনার পরপর হামলাকারী মানিককে স্থানীয় লোকজন আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
এ ঘটনার পর পর কক্সবাজার শহরের দোকান মালিকরা ধর্মঘট শুরু করে। একই সঙ্গে শহরে মিছিল সমাবেশ করে। কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বেলা দেড়টায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এক ঘণ্টার মধ্যে হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। অন্যথায় শহরের সকল দোকান, যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়।
সমাবেশে বক্তারা এখন থেকে কক্সবাজার শহরের সকল প্রকার লাইন্সেনবিহীন টমটম চলাচল করতে দেবে না বলে ঘোষণাও দেন।
এর আগে ভোর সকাল থেকে কক্সবাজার পৌরসভার কর্তৃক নতুনভাবে দেয়া লাইসেন্স থাকা সত্ত্বেও ট্রাফিক পুলিশের ধরপাকড়ের প্রতিবাদে শহরে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছে টমটম মালিক ও চালকেরা। এতে যানবাহন সংকটে চরম ভোগান্তি পোহায় পথচারীরা।
অবরোধ পালনকারী টমটম চালকেরা জানান, কক্সবাজার পৌরসভা নতুনভাবে ৫০০ টমটমের লাইসেন্স দেয়। লাইসেন্স প্রতি নেয়া হয় ৮০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত। এসব লাইসেন্স নিয়ে টমটম চালাতে গিয়ে ঘটে বিপত্তি। পৌরসভার দেয়া এসব লাইসেন্স জেলা প্রশাসক ও ট্রাফিক পুলিশের অনুমোদন না থাকার অভিযোগে ধরপাকড় শুরু হয়। গত ৭ দিনে প্রায় ৩০০টি টমটম জব্দ করেছে। টাকা নিয়ে লাইসেন্স নিয়েও তাদের টমটম ধরা হচ্ছে। তাই নিরুপায় হয়ে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শামসু নামে এক প্রতিবন্ধী টমটম চালক জানান, এক লাখ টাকার বিনিময়ে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে একটি লাইসেন্স দেওয়া হয় আমাকে। কিন্তু লাইসেন্সে জেলা প্রশাসকের স্বাক্ষর না থাকার অভিযোগে টমটমটি ট্রাফিক পুলিশ জব্দ করে। কোনভাবেই তারা টমটম দিচ্ছে না।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গীয়াস জানান, এ ঘটনায় একজনকে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।