স্বস্তির জামালখানে আড্ডা বখাটেদের

নিজস্ব প্রতিবেদক »

‘এখানে একজন বন্ধুর জন্যে অপেক্ষা করতে বসার জায়গা খুঁজছিলাম, কিন্তু এক্যুরিয়ামের কাছে আসতেই গাঁজার গন্ধে আমার সেখানে অবস্থান করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। দিনের বেলা নেশাগ্রস্তদের এমন সরব উপস্থিতি আমাকে অবাক করলো। এখানে তো বয়স্ক মুরব্বি ও ছোট ছোট বাচ্চারাও আসে। এগুলো দেখাশোনা করার কি কেউ নেই?’

নগরীর সৈন্দর্যবর্ধন প্রকল্পে বদলে যাওয়া বর্তমান জামালখান সম্পর্কে বলতে গিয়ে শিক্ষার্থী রাহাত বিন কালাম সুপ্রভাতকে এসব কথা বলেন।

জানা যায়, একসময় অন্ধকারাচ্ছন্ন থাকা নগরীর জামালখান এলাকায় আবর্জনার দুর্গন্ধে হেঁটে পার হওয়া ছিল কষ্টসাধ্য। সেই চিত্র যেন জাদুর কাঠির ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে। মূলত ২০১৫ সালের ডিসেম্বর থেকে জামালখানের রূপান্তরের পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়। বিভিন্ন ধরনের গাছ দ্বারা নান্দনিক বাগানের সবুজে ছেঁয়ে যেতে থাকে জামালখান। নির্মল ছায়া ঘেরা গাছের নিচে সারি সারি বসার জায়গা, যাত্রী ছাউনি, বর্জ্য সংগ্রহের বিন, ফুড জোন, নিরাপত্তার স্বার্থে আলোকায়ন ও পাবলিক টয়লেট করা হয়েছে। রঙিন মাছের লাইভ এক্যুরিয়াম চোখ জুড়াচ্ছে পথচারীদের। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে বসানো হয়েছে ৩২টির মতো সিসি টিভি ক্যামেরাও। এখন রীতিমতো আড্ডার আসর বসে এখানে।

তবে এতসব পরিবর্তনের পরও নাগরিকদের মতে কিছু কিছু সংকট রয়েই গেছে। মনোরম পরিবেশেই সৃষ্টি হয়েছে কিছু নতুন অসুবিধা। এ প্রসঙ্গে সাফায়েত সাফি নামে এক ছাত্র বলেন, ‘এখানে গাড়ির হর্ন অনেক বেশি নয়েজ সৃষ্টি করে। বন্ধুদের সাথে বসে কথা বলতে গেলে উচ্চস্বরে কথা বলা লাগে। এটা অনেক অসুবিধার মনে হয়।’

মঈনউদ্দিন নামে একজন অভিভাবক জানান, ‘দিনে তো আসা হয় না। রাতের বেলা পরিবার নিয়ে বসে সময় কাটানো যায় না। সন্ধ্যা নামলেই এখানে বখাটেরা ভিড় করে। পরিবার নিয়ে বসলে তাদের আচার আচরণে বিব্রত হতে হয়।’

এ ব্যাপারে জামালখান ওর্য়াড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন সুপ্রভাতকে বলেন, ‘কয়েকটি স্কুল আছে আশপাশে। যেগুলোর প্রধানদের আমরা জানিয়েছি, স্কুল ছুটি হওয়ার পর কিছু ছেলে এদিকে আসে। তাদের কিছু আচার-আচরণ অশোভনীয়, সে ব্যাপারে যাতে তারা তাদের ছাত্রদের সংযত করে। এখন বখাটেরা যদি এভাবে যেখানে সেখানে অবস্থান করে তাদের তো লাঠিপেটা করা যায় না। আর দিনের বেলা তো গাঁজা সেবন করতে পারবে না। এগুলো দেখাশোনা করার জন্য পুলিশ প্রশাসন আছে। এটা তো শুধু আমাদের দায়িত্ব না, সবার দায়িত্ব। অভিভাবকের দায়িত্ব, শিক্ষকদের দায়িত্ব, নাগরিকদের দায়িত্ব ৯৯৯ কল করা। এখানে সিসিটিভিও আছে।’

এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জায়িদুল কবীর বলেন, ‘বখাটেদের বিষয় সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না। এ মাত্র জানলাম। এ বিষয়ে বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’