সিলেট-কুমিল্লা ফাইনাল আজ

সুপ্রভাত ক্রীড়া ডেস্ক »

সিলেট স্ট্রাইকার্স এবং কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের ফাইনালের মধ্যদিয়ে আজ পর্দা নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) অষ্টম আসরের। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হবে তাদের ট্রফি জয়ের দ্বৈরথ। ফাইনালের আগের দিন গতকাল (বুধবার) আনুষ্ঠানিক ফটোসেশনে কিছুটা নতুনত্ব লক্ষ্য করা গেছে। মাঠের বদলে এবার ফটোসেশন হয়েছে আগারগাঁওয়ে। ফাইনালের আগে ফটোসেশনে অংশ নেন দুই দলের অধিনায়কেরা। তবে এ ফটোসেশনে ছিলেন না সিলেটের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। কেন ছিলেন না তিনি খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজনৈতিক কারণে নিজ শহর নড়াইলে অবস্থান করায় ফটোসেশনে থাকতে পারেননি বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। তবে আজকের মধ্যেই তার দলের সাথে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দলটির মিডিয়া ম্যানেজার মিনহাজ উদ্দিন খান।

এবারের ফাইনালের ট্রফিসহ ফটোসেশন হয়েছে ঢাকার মেট্রোরেলে। সিলেটের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফি না থাকায় তার জায়গায় উপস্থিত ছিলেন দলের আরেক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম। এছাড়া কুমিল্লার অধিনায়ক হিসেবে যথারীতি ছিলেন ইমরুল কায়েস।

এদিকে মাশরাফি’র দক্ষতা নিয়ে ইমরুল কায়েস ভূয়সি প্রশংসা করেছেন। অনেকের বিশ্বাস, নিশ্চয়ই কোনো জাদুর কাঠি আছে অধিনায়ক মাশরাফির। মাঠের ক্রিকেট যারা খেলেন, তারা যদিও জানেন, এখানে জাদু বলে কিছু নেই। এই যেমন ইমরুল কায়েস। মাশরাফির পর বিপিএলের সফলতম অধিনায়ক তিনিই। সেই ইমরুল বলছেন, মাশরাফির কোনো জাদু নেই, তবে আছে নেতৃত্বের বিশেষ গুণ। পরিসংখ্যানের বিচারে বাংলাদেশের ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক মাশরাফি। বিপিএলেও তিনিই সেরা। আগের আট আসরে চারটিতেই ট্রফি উঠেছে তার হাতে। এবার সিলেটের প্রথম কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে সিলেট স্ট্রাইকার্স বিপিএলের ফাইনালে উঠেছে মাশরাফির নেতৃত্বেই। কাগজে-কলমে বেশ পিছিয়ে থাকা দলটি লিগ পর্ব শেষ করেছে সবার ওপরে থেকে। এরপর শীর্ষ চার থেকে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বিদেশি ক্রিকেটারদের আসা-যাওয়ার পালায় আরও শক্তিহীন হয়ে পড়ে দলটি। কিন্তু শক্তিতে বেশ এগিয়ে থাকা রংপুর রাইডার্সকে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হারিয়ে তারা পৌঁছে যায় ফাইনালে। ‘ম্যাশ-ম্যাজিক’ ধারণাও তাতে প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায় আরও। রংপুরকে হারানোর পর সংবাদ সম্মেলনে অবশ্য মাশরাফি সাফ বলে দেন, ’ম্যাজিক বলে কিছু নেই, সব আল্লাহর রহমত।’ পরদিন একই কথা বললেন ইমরুলও।

২০১৫ সালে মাশরাফির অধিনায়কত্বেই খেলোয়াড় হিসেবে প্রথম শিরোপা জেতেন ইমরুল। এছাড়া জাতীয় দলেও মাশরাফির নেতৃত্বে খেলেছেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে তিনি অধিনায়ক মাশরাফির বিশেষত্ব তুলে ধরলেন নিজের অভিজ্ঞতা থেকে।

’ক্রিকেট আসলে দলগত খেলা, এখানে ম্যাজিক বলে কোনো কথা নেই। দলের ঐক্য যদি ভালো থাকে, দল যদি ভালো খেলতে থাকে, তাহলে ভালো ফলাফল সম্ভব। অনেকে অনেক বড় মাপের দল করেও কিন্তু ফলাফল আসে না। কারণ দলের মাঝের পরিবেশ ভালো থাকে না। মাঠে গিয়ে শুধু খেলতে হয়… দলের যে বন্ধন, তা ঠিক থাকে না। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ আমি মনে করি।’

বিপিএলে মাশরাফির পরই সফলতম অধিনায়ক ইমরুল। তার নেতৃত্বে নিজেদের সবশেষ দুই শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা। তাহলে ইমরুলেরও কি ম্যাজিক আছে? তার কণ্ঠে শোনা গেল মাশরাফির কথারই প্রতিধ্বনি, ’না! আমার কোনো ম্যাজিক নেই। ওপরওয়ালা আছেন।’

ম্যাজিকের আলোচনা এক পাশে রাখলে ক্রিকেটীয় বোধেও মাশরাফির দক্ষতার ছাপ দেখা যায় অনেক। রংপুর রাইডার্সের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচেই যেমন, নিজে ব্যাটিংয়ে ওপরে নেমে যাওয়া অথবা শেষ দিকে তানজিম হাসান সাকিব ও লুক উডকে দারুণভাবে ব্যবহার করে ম্যাচ বের করে আনার পারদর্শিতা দেখিয়েছেন সিলেট অধিনায়ক।