সামরিক শাসকের বংশবদরা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত

গণহত্যা দিবসের সভায় আ জ ম নাছির

মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেছেন, ৩৫ বছর আগে এ দিনে চট্টগ্রাম গণহত্যা সংঘটিত হয়েছিল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে। ওই দিন শেখ হাসিনাকে হত্যা অপচেষ্টায় তৎকালীন স্বৈরশাসক এরশাদের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে সিএমপির কমিশনার মির্জা রকিবুল হুদার নির্দেশে নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ২৪ জন আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারের পতন হলেও তাদেরই বংশবদরা এখনো নানামুখী ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে।

তিনি আরো বলেন, মির্জা রকিবুল হুদা সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। জিয়াউর রহমান রকিবুল হুদাকে সিএমপির কমিশনার নিযুক্ত করেছিলেন। বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধী জামাতকে নিয়ে এদেশকে পাকিস্তানি ভাবধারায় পরিচালিত করার নীলনকশা বাস্তবায়ন করেছিলেন। আজও জিয়ার উত্তরসূরিরা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে মাঠ গরম করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের কুমতলব হাসিল করতে চায়।

তিনি গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম গণহত্যা দিবসের ৩৫তম বার্ষিকীতে মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে কোর্ট বিল্ডিংস্থ পুরাতন বাংলাদেশ ব্যাংক সম্মুখস্থ চত্বরে অনুষ্ঠিত
আলোচনা সভায় একথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, বিএনপি জামাত জোট সরকারের আমলে এদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের উপর বার বার আঘাত এসেছে। এএসএম কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, আইভি রহমানসহ শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। এসবের কোন বিচার হয়নি। বিচার হলেও শাস্তি কার্যকর হয়নি।

যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত তারেক রহমান লন্ডনে বসে সরকার উৎখাত আন্দোলনে কলকাঠি নাড়ছে। আওয়ামী লীগ ভূঁইফোড় সংগঠন নয়। রাস্তার টোকাইদের নিয়ে এ দল গঠিত হয়নি। আওয়ামী লীগ আম-জনতার সংগঠন। বিএনপির জন্ম ক্যান্টনমেন্টে। আর জামাত ৭১ এর পরাজিত শক্তি। এই দুই অপশক্তির কোন ষড়যন্ত্র কখনো সফল হবে না।

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগকে কেউ ধাক্কা দিয়ে সুবিধা করতে পারবে না, বিজয় রুখতে পারবে না। আগামীতে আওয়ামী লীগের বিজয় সুনিশ্চিত। সভায় সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও সাবেক চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ইতিহাসের পাঠ কেউ গ্রহণ করেন না- এটাই ইতিহাসের শিক্ষা।

ষড়যন্ত্রকারীরা যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন কোনদিন সফল হবে না। এদেশে মীরজাফররা কখনো টিকতে পারেনি। মীরজাফররা বার বার ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। এখন যারা খলনায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তারাও একদিন মুছে যাবে।

মহানগর আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নঈম উদ্দীন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, এম জহিরুল আলম দোভাষ, উপদেষ্টা সফর আলী, শেখ মাহমুদ ইছহাক, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, শফিকুল ইসলাম ফারুক, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, হাজী জহুর আহমদ, জোবাইরা নার্গিস খান, আব্দুল আহাদ, ডা. ফয়সল ইকবাল চৌধুরী, শহিদুল আলম, জহর লাল হাজারী, আবুল মনছুর ও পেয়ার মোহাম্মদ কমিশনার।

সভা শেষে চট্টগ্রাম গণহত্যা শহীদ স্মারক বেদীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। সভার শুরুতে চট্টগ্রাম গণহত্যার শহীদদের সম্মানার্থে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বিজ্ঞপ্তি