সবজি, মুরগি ও ডিমের দাম চড়া

রুমন ভট্টাচার্য:
বাজারে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে আলু, পটল, বেগুন, বরবটি, ঢেঁড়স, ধুন্দল, ঝিঙে, করলা, পেঁপেসহ প্রায় সব ধরনের সবজি। প্রতি সপ্তাহে বাড়ছে সবজির দাম। বেড়েছে মুরগির দামও। সেই সাথে বেড়েছে ডিমের দাম। তবে কিছুটা কমেছে মাছের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ মাছের দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমেছে।
শুক্রবার (৩ জুলাই) বাজার ঘুরে দেখা যায়, গাজরের কেজি ১০০ টাকা, পাকা টমেটো কেজি ১০০ টাকা, ববরটি ৭০ টাকা, বেগুনের কেজি ৫০ টাকা।
গত সপ্তাহেও এ সবজিগুলোর দাম এমন চড়া ছিল বলে জানান বিক্রেতারা।
শুধু বেগুন, গাজর, টমেটো নয়; বাজারে এখন সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। চিচিংগার ৫০ টাকা, কাকরোল ৫০ টাকা, কাচা পেঁপে ৪০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, ঝিঙে ৫০, কচুর লতি ৪০, কচুর মুখী ৫০ টাকা, লাউ ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি গত সপ্তাহের চেয়ে ২ টাকা বেড়ে ৩২ টাকা এবং দেশি আলুর কেজি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
চকবাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. সবুজ বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাজারে সব ধরনের সবজির দাম কিছুটা বাড়তি। প্রতি সপ্তাহে ৫-১০ টাকা করে বাড়ছে। কারণ বাজারে তুলনামূলক সবজির সরবরাহ কম। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে সামনে সবজির দাম সামনে আরও বাড়তে পারে।’
সবজির পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। প্রতি কেজি ১২০ পাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধনে পাতার কেজি ১০০ টাকা।
এদিকে, ডিম ও মুরগির দামও কিছুটা বাড়তি। বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, হাঁসের ডিম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা এবং ১০০ পিস কোয়েলের ডিম ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ডিমের দামের বিষয়ে ব্যবসায়ী মো. শাকিল বলেন, কয়েক সপ্তাহ ধরে ডিমের দাম একটু বেশি। আগে ডিমের ডজন ৯০ থেকে ৯৫ টাকা বিক্রি করেছি। তিন সপ্তাহ ধরে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা বিক্রি করছি। তিনি বলেন, ফার্মে এখন ডিম উৎপাদন কম হচ্ছে। তাছাড়া মুরগির দামও বাড়তি।
অন্যদিকে মাংসের বাজারে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা এবং পাকিস্তানি সোনালী মুরগি ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
চকবাজারের মুরগি বিক্রেতা মো. জাহেদ বলেন, ‘বাজারে মুরগি কম আসছে। সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি।’
এদিকে মুরগির সাথে বেড়েছে গরুর মাংসের দামও। গরুর মাংস হাড় ছাড়া ৭০০ থেকে ৭৫০ ও হাঁড়সহ ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
গরুর মাংস বিক্রেতা মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, ‘গরুর মাংসের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ৫০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে হাঁড়ছাড়া মাংস ছিল ৬৫০ টাকা কেজি। আজ বিক্রি করছি ৭০০ টাকায়।’
সবজি, ডিম, মুরগির দাম কিছুটা চড়া হলেও কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়, রসুন ৯০ টাকা ও আদা ১৩০ টাকা।
সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে মাছের দাম। ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি, কাতলা ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, ব্রিগেড ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কৈ (ফার্ম) ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা। এছাড়া পাঙাশ ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, পাবদা ৩৫০-৪০০ টাকা, কাঁচকি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, সরপুঁটি (চায়না পুঁটি) ১৬০ থেকে ২২০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, মাগুর বড় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিংড়ি ৪০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
আর ইলিশ মাছ এক কেজি সাইজের ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ থেকে ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা এবং ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ী ফারুক বলেন, ‘গত সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। তবে ইলিশের দাম কমেনি।’ বাজারে মাছের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে বলে তিনি জানান।