‘শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ মিথ্যা ও সাজানো’

নিজস্ব প্রতিনিধি, রামগড় »

খাগড়াছড়ির রামগড়ে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগকে মিথ্যা এবং সাজানো দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অভিযুক্ত শিক্ষকের পরিবার। তারা দাবি করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবী এবং তার সহযোগী রুপম ত্রিপুরা ব্যক্তিগত বিরোধের জেরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক এ ঘটনা সাজিয়েছেন। ২২ মে রামগড়ের স্থানীয় একটি রেস্তোরাঁয় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন অভিযুক্ত শিক্ষকের স্ত্রী আয়েশা বেগম ও পিতা নুরুল হুদা।

সংবাদ সম্মেলনে আয়েশা বেগম জানান, থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর সাথে তার স্বামীর ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রয়েছে। কয়েক বছর আগে ইন্দ্রানী দেবী ভৃগুরাম কার্বারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থাকাকালে বেলায়েত হোসেনের ভাগিনা তারেক হোসেনকে বেদম প্রহার করে। তখন বেলায়েত হোসেন বিভিন্ন পর্যায়ে এ নির্যাতনের প্রতিবাদ জানালে ইন্দ্রানী দেবীকে শাস্তিমুলক অন্যত্র বদলি করা হয়। এ ঘটনায় ইন্দ্রানী দেবী সবসময় বেলায়েত হোসেনকে দায়ী করে আসছেন ।

পরে ইন্দ্রানী দেবী বদলি হয়ে বেলায়েত হোসেনের বর্তমান কর্মস্থল থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আসেন। বিদ্যালয়ের কাজকর্মে উদাসীনতা এবং কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে প্রায় সময় তার স্বামী এবং প্রধান শিক্ষকের মাঝে বাগবিত-া হয়। বিষয়গুলো তার স্বামী রামগড় প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়েও অবিহিত করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো জানান, রুপম ত্রিপুরা নামের স্থানীয় এক বখাটে প্রধান শিক্ষক ইন্দ্রানী দেবীর ওপর প্রভাব খাটিয়ে সব সময় বিনা অনুমতিতে ১০-১২ জন নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতো।এবং তাদের মোবাইল ফোন চার্জ করতো। কিছুদিন আগে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানালে বেলায়েত হোসেন ও রুপম ত্রিপুরার মাঝে তুমুল বাগবিত-া হয়। রুপম ত্রিপুরা তখন বেলায়েত হোসেনকে দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। তার কিছুদিন পর রুপম ত্রিপুরাকে বিদ্যালয়ে দপ্তরি পদে নিয়োগ দিতে চাইলে বেলায়েত হোসেন এর প্রতিবাদ জানান। এতে রুপম ত্রিপুরা তার ওপর আরো ক্ষিপ্ত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বেলায়েত হোসেন-এর পিতা নুরুল হুদা দাবি করেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের জেরে নিরীহ এক উপজাতি মেয়েকে দিয়ে তার ছেলেকে ফাঁসানো হয়েছে। এর জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষ ইন্দ্রানী দেবী এবং রুপম ত্রিপুরাকে দায়ী করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় উপস্থিত ছিলেন বেলায়েত হোসেনের পিতা নুরুল হুদা, স্ত্রী আয়েশা বেগম, ভাই মামুন হোসাইন ও তাদের দুই কন্যা।
থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কমিটির সভাপতি নুরুল আমীনেরর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জানান, বিষয়টি তিনি জানতেন না। শিক্ষার্থীর পরিবার এবং বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকবিষয়টি তাকে জানাননি।

উল্লেখ্য, ১২ মে থানাচন্দ্র পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক বেলায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে রামগড় থানায় শ্লীলতাহানির অভিযোগ এনে মামলা করেন পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফুলবানু ত্রিপুরা।