যারা নালায় বর্জ্য ফেলে তাদের চিহ্নিত করুন

ষোলশহর ওয়ার্ডে খালের ময়লা-অবর্জনা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিদর্শনে সুজন
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন খাল-নালায় যারা ময়লা আবর্জনা ফেলে তাদের বিরুদ্ধে নগরবাসীকে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গতকাল শুক্রবার ভোরে নগরীর ৬ নম্বর পূর্ব ষোলশহর ওয়ার্ডের ওমর আলী মাতুব্বর রোডে বির্জা খালের ময়লা-অবর্জনা পরিষ্কার কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে একথা বলেন।
এ সময় চসিকের উপ-প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদ আলম চৌধুরী ও পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা প্রণব শর্মা প্রশাসকের সাথে ছিলেন। চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের নেয়া মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)। এরপরও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কর্তব্যের বাইরে গিয়ে সামাজিক দায়বদ্ধতা ও রাজনৈতিক কমিটমেন্ট’র জায়গা থেকে ধারাবাহিকভাবে নগরীর ৪১ ওয়ার্ডের বিভিন্ন খাল-নালার ময়লা আবর্জনা অপসারণে উদ্যোগ নিয়েছেন। করোনা মহামারির কারণে প্রশাসক তার ‘ক্যারাভান’ কর্মসূচি স্থগিত করলেও সাপ্তাহিক ওয়ার্ড পরিদর্শন কাজের মাধ্যমে নগরবাসীর সমস্যা, নাগরিক চাওয়া-পাওয়া, দুঃখ-দুর্দশার কথা শোনার চেষ্টা করেছেন।
শুক্রবার সকালেও পূর্ব ষোলশহরের ওমর আলী মাতুব্বর রোডের বির্জা খাল সরেজমিন পরিদর্শন ও পরিষ্কার কার্যক্রমে গিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেন, খালটি গত ৫/১০ বছরে কখনো পরিষ্কার করেছে বলে মনে হচ্ছে না ! খালটির সীমানা প্রাচীর, দেয়াল ঘেষে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা! খালের উপরে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী কাঠের ও লোহার সেতু। একদিকে গৃহস্থালী ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলার কারণে খাল পরিণত হয়েছে মশার প্রজনন ক্ষেত্রে। অপরদিকে খালে অস্থায়ী সেতু নির্মাণের কারণে বর্ষা ও বৃষ্টি হলে খালে পানি চলাচল বাঁধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ নগরবাসীকে বার বার অনুরোধ ও আহবান জানিয়েছি খালকে ডাস্টবিন ভাববেন না। এখানে ময়লা আবর্জনা ও বর্জ্য ফেলবেন না। কিন্তু কিছু মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ পেয়েছে বলে মনে হয়! তারা খালে অবর্জনা ফেলছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম নগরীর বাসিন্দারা হচ্ছে এই শহরের নাগরিক। কাজেই তাদের মধ্যে নাগরিক সচেতনতা থাকবে এটা প্রত্যাশা করি। যত্রতত্র ময়লা অবর্জনা ফেলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না খাল-নালা। যে কারণে পানি চলাচলের পথ বাঁধাপ্রাপ্ত হয়। পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি ও খালের পানি দূষিত হচ্ছে। অথচ এই শাখা খাল কর্ণফুলী নদীতে গিয়ে মিশেছে। আমরা আজ এই বির্জা খাল পরিষ্কার শুরু করলাম। কিন্তু এভাবে ময়লা অবর্জনা ফেললে করপোরেশনের পক্ষে বার-বার পরিষ্কার করা সম্ভব না। কাজেই যারা খালে ময়লা আবর্জনা ফেলার পাশাপাশি অবৈধ স্থাপনা গড়ে তুলেছেন এলাকাবাসী তাদের চিহ্নিত ও প্রতিরোধ করুন। আগামীতে পরিষ্কার করা খালে কেউ ময়লা-আবর্জনা ফেললে তাদের বিরুদ্ধে করপোরেশন জেল জরিমানাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। খাল থেকে সকল অবৈধ স্থাপনা অপসারণ করুন দু’দিনের মধ্যে না হয় জরিমানাসহ উচ্ছেদ করা হবে। প্রশাসক নগরবাসীকে খ্রিস্টিয় নববর্ষ-২০২১ সালের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আজ বছরের প্রথম দিন। চলুন আমরা আমাদের এই প্রিয় নগরকে নতুন স্বপ্ন নতুন উদ্যোমে পরিচ্ছন্ন, মানবিক শহর রূপে সবার জন্য বাসযোগ্য করে গড়ে তুলি। নিজেরা সচেতন হই। নিজের আশ-পাশ পরিষ্কার রাখি। অন্যকেও পরিষ্কার রাখা ও থাকতে উদ্বুদ্ধ করি।