মিরসরাইয়ে তিন মাস ধরে বন্ধ প্রসূতি অস্ত্রোপচার

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স-সুপ্রভাত

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

রাজু কুমার দে, মিরসরাই :

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিন মাস ধরে বন্ধ রয়েছে প্রসূতির অস্ত্রোপচার। তবে স্বাভাবিক প্রসূতি সেবা অব্যাহত রয়েছে। চিকিৎসক না থাকায় এই গুরুত্বপূর্ণ সেবাটি বন্ধ রয়েছে বলে জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসক পেতে উচ্চ পর্যায়ে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানূর রহমান।

এদিকে গুরুত্বপূর্ণ এই সেবাটি বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্টি। ফলে বাধ্য হয়ে তাদের যেতে হচ্ছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে। এতে করে মোটা অংকের টাকা খোয়া যাচ্ছে সাধারণ মানুষের।

সরেজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মস্তাননগর হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাবের কারণে কমেছে রোগী। হাসপাতালে গেলে ডাক্তার পাবেন কি পাবেন না এই অনিশ্চয়তায় রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে যাচ্ছে না। এছাড়া হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রসূতির অস্ত্রোপচার বন্ধ থাকায় অনেক রোগী ফিরে আসছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামের অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে সদ্য কন্যা সন্তান জন্ম দেয়া এক প্রসূতি জানান, গত মঙ্গলবার সকালে তিনি প্রসব ব্যাথায় ব্যাকুল হয়ে উঠেন। তার স্বামী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন গাইনি চিকিৎসক নেই। পরে বারইয়ারহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বিকালে তিনি কন্যা সন্তান প্রসব করেন। ওষুধ খরচ ও হাসপাতালের বিলসহ এতে তাদের প্রায় ২৩ হাজার টাকা খরচ হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত পরিসংখ্যান কর্মকর্তা আরিফুর রহমান দাবি করেন, গত জানুয়ারি মাসে ২৫, ফেব্রয়ারিতে ১৫ ও মার্চ মাসে ২৫ জন প্রসূতির অস্ত্রোপচার হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তবে গত তিন মাস ধরে অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বেসরকারি হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে একজন প্রসূতি রোগী অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করলে ১৫ থেকে ২৫ হাজার পর্যন্ত টাকা খরচ হয়; যা উপজেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পক্ষে অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠে না। তাই সরকারি হাসপাতালে এই সেবাটি চালু রাখার দাবি করেন তারা।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানূর রহমান বলেন, চিকিৎসক না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রসূতির অস্ত্রোপাচার বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এই পদে একজন চিকিৎসক চেয়ে উচ্চ পর্যায়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। শীঘ্রই এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আমরা আশাবাদী।